হেলমেট বাহিনীর হামলায় ফরিদপুরে বিএনপির গণঅবস্থান পণ্ড

Looks like you've blocked notifications!
ফরিদপুর শহরের অম্বিকা ময়দানে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে হামলার পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান। ছবি : এনটিভি

ফরিদপুরে বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচি হামলা চালিয়ে পণ্ড করে দিয়েছে হেলমেট বাহিনী। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হেলমেট পরে এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ বিএনপির।

আজ বুধবার (১১ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের অম্বিকা ময়দানে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে শহরের অম্বিকা ময়দানে এই গণঅবস্থান কর্মসূচি শুরুর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর মঞ্চে বক্তব্য চলাকালে উত্তর দিকে শহীদ সুফি সড়কে এসে হেলমেট বাহিনীর সদস্যরা প্রথমে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। তবে ককটেলের শব্দে প্রথমে হতচকিয়ে গেলেও দ্রুতই ঘুরে দাঁড়িয়ে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলে বিএনপি। এ সময় কিছুক্ষণ উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে হামলাকারী হেলমেট বাহিনী পালিয়ে যায়। এ সময় সড়কে যত্রতত্র ইটের টুকরো পড়ে থাকতে দেখা যায়। এতে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পথচারীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল চৌরঙ্গী মোড়ের পূর্বদিকের মুখে অবস্থান করছিল। উভয়পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে ৪০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয় বলে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।

এদিকে হেলমেট বাহিনী পালিয়ে যাওয়ার পর চৌরঙ্গী মোড়ের পূর্বদিকের সড়কে পুলিশের ব্যারিকেডের পেছনের দিকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে।

এ ঘটনার পর দলীয় এক নেতার বাসায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অযথাই হামলা চালিয়ে পণ্ড করে দেওয়া হয়। এ সময় সরকারি দলের লোকজন ককটেল বোমা নিক্ষেপ করে মঞ্চসহ সব স্থানে। এ ছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকেও রাবার বুলেট ছুড়ে আমাদের কর্মসূচিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়।’

প্রসঙ্গত, সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব কারাবন্দি নেতার মুক্তি দাবিতে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুরে এ গণঅবস্থান কর্মসূচি ছিল। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে শহরের অম্বিকা ময়দানে জাসাসের শিল্পীদের গণসংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। বিপুল নেতাকর্মী এতে যোগ দেয়।

এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহিরুল হক শাহজাদা, বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ্ মো. আবু জাফর, নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী হুমায়ুন কবির, ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ঈসা, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ এফ এম কাইয়ুম জঙ্গি, শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার নাসিরুদ্দিন কালু, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদ আহমেদ আসলাম, রাজবাড়ী জেলার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট লিয়াকত হোসেন, গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেন জুয়েল, আফজাল হোসেন খান পলাশ, আতাউর রশীদ বাচ্চু, গোলাম রব্বানী ভুইয়া রতন, জেলা যুবদলের সভাপতি রাজিব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, মহানগর যুবদলের সভাপতি বেনজির আহমেদ তাবরীজ, সাধারণ সম্পাদক রেজোয়ান বিশ্বাস তরুণ, মহানগর কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মামুন অর রশীদ মামুন, হিন্দু কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক নিতাই রায়, জেলা মহিলা দলের সভাপতি নাজরিন রহমান, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাসান কায়েসসহ বৃহত্তর ফরিদপুরের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

গণঅবস্থান কর্মসূচির সভা সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ।