র‍্যাবের দাবি

হেলেনা জাহাঙ্গীর অপপ্রচার চালিয়ে অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতেন

Looks like you've blocked notifications!
র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটি থেকে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া হেলেনা জাহাঙ্গীর। ছবি : ফোকাস বাংলা

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন দাবি করেছেন, ‘হেলেনা জাহাঙ্গীরের পৃষ্টপোষকতায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র অপপ্রচার চালত। বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থা ও ব্যক্তিদের কাছ থেকে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের নামে অর্থ সংগ্রহ করত। এটি মানবিক সহায়তায় ব্যবহার করার চেয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীরের প্রচার-প্রচারণায় ব্যবহৃত হতো।’

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে ফেসবুক লাইভে এসে অযাচিত কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করতেন। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন সম্মানিত ব্যক্তিদের কটাক্ষ উত্ত্যক্ত করতেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে নিজের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেন।’

আজ শুক্রবার বিকেলে র‍্যাব সদর দপ্তর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘হেলেনা জাহাঙ্গীর একজন উচ্চাবিলাসী নারী। তিনি সমাজের বিভিন্ন সম্মানিত ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার বা ভাইরাল করে নিজের অসৎ উদ্দেশে হাসিল করার চেষ্টা করতেন। পাশাপাশি বিভিন্ন অপকৌশলের মাধ্যমে মাদারা তেরেসা, পল্লীমাতা ও প্রবাসীমাতা হিসেবে পরিচিতি পেতে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন।’

‘তিনি তার এজেন্ডা বাস্তবায়নে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। যারা অর্থের বিনিময়ে হেলেনার বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেন। এই চক্রের সদস্যরা কয়েকটি চক্রে বিভক্ত ছিলেন। যারা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও মাঠ পর্যায়ে তার প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন’, যোগ করেন র‍্যাবকর্মকর্তা।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে র‍্যাব অভিযান চালায় গুলশান ২ নম্বরে হোটেল ওয়েস্টিনের পেছনে ৩৬ নম্বর সড়কের পাঁচ নম্বরে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায়। প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান চলে। এ সময় তাঁর বাসা থেকে বিদেশি মদ ও মুদ্রা, হরিণ ও ক্যাঙ্গারুর চামড়া, ওয়াকিটকি সেট এবং ক্যাসিনোর সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘হেলেনা জাহাঙ্গীর বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে নিজের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছেন। তার প্রায় ১২টি ক্লাবের সদস্য পদ রয়েছে। পরবর্তীতে র‍্যাব-৪ ও বিটিআরসির সহযোগিতায় মিরপুর এলাকায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের অনুমোদনহীন জয়যাত্রা টেলিভিশন সিলগালা করা হয় এবং অবৈধ মালামাল জব্দ করা হয়। হেলেনা জাহাঙ্গীর তার আইপি টিভি জয়যাত্রায় সাংবাদিক ও কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে চাঁদাবাজি করতেন বলেও আমরা জানতে পেরেছি। এ ধরনের চাঁদাবাজি সংক্রান্ত ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ছাড়া চাঁদাবাজি সংক্রান্ত নথিপত্রও আমরা জব্দ করেছি।’

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, ‘হেলেনা জাহাঙ্গীরের আইপি টিভি জয়যাত্রার অফিসে স্যাটেলাইট টিভি পরিচালনার সরঞ্জামাদি অবৈধ অবস্থায় পাওয়া গেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে মামলা হবে। তার প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করতেন, তাদের কাছ থেকে ২০ থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদাবাজি করতেন। এ ছাড়া আইপি টিভির নামে তার অফিসে যে যন্ত্রপাতি পাওয়া গেছে, তা স্যাটেলাইট টিভির কাজে ব্যবহৃত হয়। ওই যন্ত্রপাতিগুলো অনুমোদনহীনভাবে পাওয়া গেছে। যদিও উনি দাবি করেছেন, এসব যন্ত্রপাতিগুলো তিনি রেখেছেন কারণ, উনি আশা করছিলেন একটি স্যাটেলাইট টিভির অনুমোদন পাবেন। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন তার টিভি বন্ধ করার ব্যবস্থা নিয়েছেন। এ ছাড়া এ ধরনের অনেুমোদনহীন যেসব আইপি টিভি রয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধেও আমরা অভিযান পরিচালনা করব।’