১০ মিনিট ‘স্তব্ধ’ তিস্তার দুই পাড়

Looks like you've blocked notifications!
তিস্তা ব্যারেজের ২৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ‘স্তব্ধ কর্মসূচি’ পালন করেছে তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ। ছবি : সংগৃহীত

পানি বণ্টন চুক্তি এবং তিস্তা নিয়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ ছয় দফা দাবিতে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারেজের ২৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ‘স্তব্ধ কর্মসূচি’ পালন করেছে তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ। তিস্তা নদীর দুই পাড়ের হাট-বাজার ও বন্দরে দোকানপাট বন্ধ রেখে আজ বুধবার সকাল ১১টা থেকে ১০ মিনিটের স্তব্ধ কর্মসূচি পালন করা হয়।

সংগ্রাম পরিষদের নেতারা বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিব জন্মশতবর্ষ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে আসবেন। তাঁর এই ঐতিহাসিক সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সম্পন্ন হোক। এই মাহেন্দ্রক্ষণে উদ্বোধন করতে হবে তিস্তা নদীর সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধারবিষয়ক মহাপরিকল্পনার কাজ।

দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর না হওয়ায় উত্তরের দুই কোটি মানুষ খরা ও বন্যায় নিষ্পেষিত হয়েছে দাবি করে স্তব্ধ কর্মসুচির আয়োজকেরা বলেন, উত্তরাঞ্চলের মানুষদের বাঁচাতে তিস্তা চুক্তি সই এবং মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সারা বছর পানির প্রবাহ ঠিক রাখা, ভাঙন, বন্যা ও খরায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণ, কৃষক সমবায় ও কৃষিভিত্তক শিল্প কলকারখানা, তিস্তার শাখা প্রশাখা ও উপশাখার আগের অবস্থায় সংযোগ স্থাপন এবং দখল ও দূষণমুক্ত করে নৌ-চলাচল চালুর ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে কৃষি নির্ভর এই জনপদ মরুভূমিতে পরিণত হবে। হুমকির মুখে পড়েছে এখানকার কৃষি, পরিবেশ, প্রকৃতি ও জীবনরেখা।

এর আগে গত সোমবার রংপুরে সংবাদ সম্মেলনে ‘তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও’ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী এ ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৪ সাল থেকে ভারত একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করায় তিস্তা এখন মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। তিস্তাপাড়ের কৃষি, জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে। খরাকালে সেচ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হচ্ছে। ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ বাড়ছে। নদীতে পানি না থাকায় দখল-দূষণ প্রকট আকার ধারণ করেছে। তাই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও তিস্তা চুক্তি সই নিয়ে সরকারকে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের অন্য দাবির মধ্যে রয়েছে- অভিন্ন নদী হিসেবে ভারতের সঙ্গে ন্যায্য হিস্যার ভিত্তিতে তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন; তিস্তা নদীতে সারা বছর পানিপ্রবাহ ঠিক রাখতে জলাধার নির্মাণ; তিস্তার ভাঙন, বন্যা ও খরায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণ, ভাঙনের শিকার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পূনর্বাসন; তিস্তা নদী সুরক্ষায় বিজ্ঞানসম্মত খনন ইত্যাদি।