১৫ আগস্ট ট্রাজেডি : এখনো পলাতক পাঁচ খুনি
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার দায়ে ১২ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর মধ্যে ২০১০ সালে পাঁচ আসামির রায় কার্যকর করা হয়। আর আজ মধ্যরাতে কার্যকর হচ্ছে খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের ফাঁসি।
একজন খুনি পলাতক অবস্থায় মারা গেছেন বলে ধারণা করা হয়। ফলে আজকে রাতে মাজেদের ফাঁসি কার্যকর হলে বাকি থাকবে আরো পাঁচ পলাতক আসামির ফাঁসির রায় বাস্তবায়ন।
মাজেদের ফাঁসির রায় বাস্তবায়নের জন্য এরই মধ্যে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। সন্ধ্যার পর ফাঁসি মঞ্চের লাইট জ্বালানো হয়েছে। দিনের বেলায় প্রধান জল্লাদ তাঁর সহযোগীদের নিয়ে ফাঁসির মহড়া দিয়েছেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল বিপথগামী একদল সেনা সদস্য। বিচারকাজ শেষে ২০১০ সালে বঙ্গবন্ধুর পাঁচ খুনি ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা, মহিউদ্দিন আহমেদ ও এ কে এম মহিউদ্দিনের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়।
পাঁচজনের ফাঁসির পর অন্য সাতজন পলাতক থাকেন। খুনিদের মধ্যে নূর চৌধুরী কানাডায় এবং এ এম রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন বলে সরকারের কাছে তথ্য রয়েছে। চেষ্টা করেও তাদের দেশে এনে রায় কার্যকর করা সম্ভব হয়নি এখনও।
এ ছাড়া সরকারের তথ্য অনুযায়ী, খুনি আজিজ পাশা জিম্বাবুয়েতে মারা গেছেন ২০০২ সালে।
পলাতক অন্য খুনি শরিফুল হক ডালিম, খন্দকার আবদুর রশিদ ও রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের অবস্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নেই কারোর।
এই অবস্থার মধ্যেই গত সোমবার রাত ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের সামনে থেকে মাজেদকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ৪৪ বছর ৭ মাস ২১ দিন পর গ্রেপ্তার হন তিনি। সবশেষ গতকাল শুক্রবার স্ত্রীসহ পাঁচজন কারাগারে মাজেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ফাঁসির আগে প্রত্যেক আসামিকে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়।
গত বুধবার ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এম হেলাল উদ্দিন চৌধুরী মাজেদের মৃত্যু পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
ওইদিন বিকেলে মাজেদ রাষ্ট্রপতির কাছে এ আবেদন করেন। কারা কর্তৃপক্ষ আবেদনটি বিকেলেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে বঙ্গভবনে পৌঁছানো হয়।
প্রাণভিক্ষার আবেদনটি বঙ্গভবনে পৌঁছার পরপরই তা খারিজ করে দেন রাষ্ট্রপতি। এটি প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় কারা কর্তৃপক্ষের সামনে দণ্ড কার্যকরে বাধা থাকছে না।
আজ শনিবার রাত পৌনে ৮টায় কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ফাঁসির মঞ্চ থেকে শুরু করে ফাঁসি কার্যকর করতে যা যা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন সবই নেওয়া হয়েছে। কারাগারের ভেতর ও আশপাশ এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
‘আজ মধ্য রাতের পর ফাঁসি কার্যকর করা হবে। আইন অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধুর খুনির ফাঁসি দিতে কারা কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত', যোগ করেন আইজি প্রিজন্স।