৩০ সেপ্টেম্বর থেকে বিদেশি টিভির ক্লিন ফিড : তথ্যমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!

৩০ সেপ্টেম্বর থেকে বিদেশি টিভি চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনমুক্ত (ক্লিন ফিড) সম্প্রচার বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। পাশাপাশি ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম শহর এবং ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বিভাগীয় ও মেট্রোপলিটন শহর এবং দিনাজপুর, বগুড়া, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা, রাঙ্গামাটি ও কক্সবাজারে টেলিভিশন ক্যাবল নেটওয়ার্ককে ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় আনার সিদ্ধান্তও জানান তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স-অ্যাটকো, ক্যাবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-কোয়াব, স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল ডিস্ট্রিবিউটর এবং ডাইরেক্ট টু হোম-ডিটিএইচ সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের একথা জানান। তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এবং সচিব মো. মকবুল হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এদিনের আলোচনাকে অত্যন্ত ফলপ্রসূ বর্ণনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আইন অনুযায়ী আমাদের দেশে বিদেশি টিভি চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনমুক্ত (ক্লিন ফিড) সম্প্রচারের নিয়ম পালন, টিভি ক্যাবল নেটওয়ার্ককে ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় আনা এবং সংশ্লিষ্ট অসংগতি দূর করার উদ্দেশ্যে আমরা করোনা মহামারি শুরুর আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। যেহেতু দেশে স্রষ্টার কৃপায় এবং প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গণটিকার কার্যক্রমে ধীরে ধীরে করোনার প্রকোপ কমছে, সেই প্রেক্ষাপটে আজকে আমরা আগের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন এবং বর্তমান প্রেক্ষিত নিয়ে পুরো বিষয়টা আলোচনার জন্য বসেছি।

ড. হাছান মাহমুদ জানান, ক্লিন ফিড বাস্তবায়নে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি ক্যাবল নেটওয়ার্ককে ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় আনার জন্য গ্রাহকদের অবহিত করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ দেশ ডিজিটাল হয়েছে কিন্তু এই ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি হওয়ার প্রয়োজন ছিল সেটি হয়নি, সেটি হতে হবে।

এ ছাড়া, ইন্টারনেটে ভিডিও স্ট্রিমের মাধ্যমে অনুমোদনহীন টিভি দেখানো, অবৈধ ডিটিএইচ সংযোগ, ক্যাবল নেটওয়ার্কে অবৈধ সিনেমা বা বিজ্ঞাপন প্রচার, একজনের এলাকার মধ্যে আরেকজনের অনুপ্রবেশ, লাইসেন্স ছাড়া ক্যাবল নেটওয়ার্ক পরিচালনা এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যেই পরপর দুই বছর নবায়ন না করায় ১২০০ ক্যাবল অপারেটিং এবং ফিড লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক সোহরাব হোসেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রচার) মো. মিজান-উল-আলম, অ্যাটকোর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোজাম্মেল হক বাবু, জাদু ভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাভিদুল হক, ন্যাশনওয়াইড মিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফখরুদ্দিন মিয়া, কোয়াব প্রশাসক মোহাম্মদ মোস্তফা জামাল হায়দার, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রুজিনা সুলতানা, আইন কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান গাজী, ক্যাবল অপারেটরদের প্রতিনিধি এস এম আনোয়ার পারভেজ, এ বি এম সাইফুল হোসেন, এম ওমর ফারুক, মোহাম্মদ নাজমুদ্দোহা, বেক্সিমকো কমিউনিকেশনের প্রতিনিধি মো. মুসা আমিন, মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ বৈঠকে অংশ নেন।

তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এদিন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য ‘দেশের সকল অর্জনের সাথে জিয়ার নাম জড়িত’ এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে জিয়াউর রহমানের নাম সবসময় বিশ্বাসঘাতক ও খুনি হিসেবেই জড়িত থাকবে।

‘এজ এ ট্রেইটর, বিট্রেয়ার অ্যান্ড কিলার’ হিসেবেই বাংলাদেশের ইতিহাসে সবসময় জিয়ার নাম জড়িত থাকবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যে পরিমাণ বিশ্বাসঘাতকতা, হঠকারিতা ও খুনের রাজনীতি জিয়াউর রহমান করেছেন, তা বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস হবে না। মির্জা ফখরুল সাহেব কথাটা সেভাবে বললে সঠিক হতো।’

বিএনপি মহাসচিবের অপর মন্তব্য ‘দেশে এখন গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্র উদ্ধার করাই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপির প্রধান কাজ’ এর জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘হরণ করা গণতন্ত্র জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ’৯১ সালে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না, যদি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে এরশাদ সাহেবের আধাসামরিক সরকারের পতন না হতো। আওয়ামী লীগের উদ্যোগেই রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি সংশোধন করে পার্লামেন্টে বিল পাস করা হয়, না হলে সেসময় খালেদা জিয়া ক্ষমতাহীন প্রধানমন্ত্রী থাকতেন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানই দেশে গণতন্ত্র হরণ করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে যুক্ত জিয়া সামরিকতন্ত্র এবং পরে মার্শাল ডেমোক্রেসি চালু করেছিলেন। জিয়ার দলকারীরা যখন একথা বলেন, তখন তারা কিভাবে সংসদে আছেন, সেটা প্রশ্ন। আর মির্জা ফখরুল যে প্রতিদিন সকাল দুপুর বিকাল তিনবেলা উঁচু গলায় গণতন্ত্র নাই, গণতন্ত্র নাই বলেন আর অহেতুক সমালোচনা করেন, সেটাই তো প্রমাণ করে দেশে গণতন্ত্রও আছে বাকস্বাধীনতাও আছে।’