৫ রূপরেখা নিয়ে অগ্রসর হতে চান তাপস
ঐতিহ্যে-সুন্দর-সচল-সুশাসিত-উন্নত ঢাকা গড়তে পাঁচটি রূপরেখা প্রকাশের মধ্য দিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস সবাইকে মুজিববর্ষের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক জীবনের শুরুতেই ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি ঢাকা-১০ (ধানমণ্ডি-হাজারীবাগ-কলাবাগান-নিউমার্কেট) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি। উক্ত এলাকার মানুষ অনেক ভালোবাসা-আদর-স্নেহে আমাকে নিজ সন্তান-আপনজন হিসেবে আলিঙ্গন করে নিয়েছিল, আস্থা রেখেছিল। সেবা করার সুযোগ দিয়ে তিন মেয়াদে আমাকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছিল।’
তাপস বলেন, ‘দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সবার সমর্থনে চেষ্টা করেছি এক এক করে প্রতিটি সমস্যা সমাধান করতে। কিন্তু রাজধানী ঢাকায় সংসদ সদস্য হিসেবে নাগরিকদের মৌলিক সুবিধা ও উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে কাজ করতে গিয়ে সিটি করপোরেশনের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করতে হয়। তাই এই ঢাকাবাসীর জন্য বৃহৎ পরিসরে কাজ করার এবং তাদের মৌলিক নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার তাগিদ বোধ করেছি।’
আওয়ামী লীগের এই মেয়র প্রার্থী বলেন, ‘সময় হয়েছে ঘুরে দাঁড়ানোর, নতুন পথে যাত্রা শুরু করার। ঢাকার উন্নয়নের জন্য এখন দরকার সঠিক নেতৃত্ব। অনেক সময় পেরিয়ে গেছে, অনেক অবহেলা, গাফিলতিতে ঢাকা অপরিকল্পিত ও দূষণ আক্রান্ত নগরী হয়ে গেছে। ঢাকাকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। আপনাদের সমর্থন ও ভোটে মেয়র নির্বাচিত হলে পাঁচটি রূপরেখা নিয়ে অগ্রসর হতে চাই।’
এরপর ব্যারিস্টার তাপস তাঁর পাঁচটি রূপরেখা সাংবাদিক ও উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীদের সামনে পেশ করেন। এগুলো হলো :
১. ঐতিহ্যের ঢাকা : চারশ বছরের পুরোনো আমাদের এই ঢাকার রয়েছে নিজস্ব ইতিহাসের উজ্জ্বল ছবি, ঐতিহ্যের গভীর শেকড় ও প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব। পর্যটনের জন্যও হতে পারে অপার সম্ভাবনার ক্ষেত্র। এখানে ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদও অনন্য। সাংস্কৃতিক ধারায় রয়েছে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, পহেলা বৈশাখ, ঘুড়ি উৎসব, চৈত্রসংক্রান্তিসহ অজস্র উৎসব। আমি নির্বাচিত হলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকাকে ‘ঐতিহ্য প্রাঙ্গণ’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সবাইকে নিয়ে সমন্বিত প্রয়াসে জাদুঘর ও আর্ট গ্যালারি নির্মাণ ও প্রদর্শনীসহ নগরীর ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ স্থাপনা সংরক্ষণে মহাপরিকল্পনা ও সুব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করে ঢাকাকে তার স্বকীয় গৌরবে সাজিয়ে তুলে ধরব বিশ্ব দরবারে।
২. সুন্দর ঢাকা : বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা দুই নদীর অববাহিকায় পত্তন হওয়া আমাদের এই ঢাকা, এমন শহর পৃথিবীতে বিরল! সুন্দর ঢাকা গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক উদ্যান নির্মাণ, সবুজায়ন, ছাদবাগানে উৎসাহ, পরিবেশবান্ধব স্থাপনা বৃদ্ধি, বায়ু ও শব্দদূষণ রোধ করাসহ শরীর ও চিত্তবিনোদনের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ, শরীরচর্চা কেন্দ্র এবং নারী-শিশু ও প্রবীণদের জন্য হাঁটার উন্মুক্ত স্থান, আধুনিক মানের কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থা। সর্বসাধারণের সুবিধার্থে সাধারণ ও ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারের ব্যবস্থা। দুস্থ-অসহায়দের কল্যাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও বস্তি উন্নয়নকে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর অন্তর্ভুক্ত করা। নির্মাণাধীন পরিচ্ছন্নকর্মী নিবাসগুলোর নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন, নতুন পরিচ্ছন্নকর্মী নিবাস নির্মাণ ও তাদের নাগরিক সুবিধাপ্রাপ্তির ব্যবস্থা করা হবে। খালগুলোর অবৈধ দখল উচ্ছেদ-খনন ও সৌন্দর্যবর্ধন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, প্রয়োজনীয় সংখ্যক নর্দমা নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ, জলাধার সংরক্ষণ ও জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দৈনন্দিন ভিত্তিতে সড়কের ওপর উন্মুক্ত আবর্জনার দ্রুত অপসারণ করা হবে। সড়ক থাকবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকাটিকে সবুজায়ন, শিশু পার্ক, থিয়েটার হলসহ পরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যারপাড় ঘিরে বনায়ন, বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনসহ ব্যাপক সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যমে সুন্দর ঢাকা গড়ে তুলব।
৩. সচল ঢাকা : যানজটের কারণে রাস্তায় চলাচল হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানো ও ফিরে আসতে নিরন্তর সংগ্রাম করতে হয়, বিশেষ করে কর্মজীবী নারীদের বিড়ম্বনা অপরিসীম। গণপরিবহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও সুব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কিছু রাস্তায় দ্রুতগতির যানবাহন, কিছু রাস্তায় ধীরগতির যানবাহন, আবার কিছু রাস্তায় শুধু মানুষ হাঁটার ব্যবস্থা করব। নদীর পাড়ে থাকবে সুপ্রশস্ত রাস্তা, যেখানে হেঁটে চলা যাবে, চালানো যাবে সাইকেল, চলবে রিকশা ও ঘোড়ার গাড়ি। দ্রুতগামী যানবাহনের জন্য থাকবে আলাদা পথ, থাকবে নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা। থাকবে প্রয়োজনীয় সড়কবাতি ও উন্নত প্রক্ষালণ কক্ষ। হকারদের তথ্যভাণ্ডার গঠন করে তাদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ফুটপাত দখলমুক্ত করা হবে। এভাবে গড়ে তুলব আমাদের সচল ঢাকা।
৪. সুশাসিত ঢাকা : ঢাকায় একসময় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ছিল। মাদক নির্মূল, জুয়া, কিশোর অপরাধসহ নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয়জনিত বিভিন্ন অপরাধ রোধসহ এলাকাভিত্তিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা কার্যকর ও সংশোধন কেন্দ্র নির্মাণ করব। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন হবে বাংলাদেশে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথম দুর্নীতিমুক্ত সংস্থা। বছরের ৩৬৫ দিন, সপ্তাহের সাত দিন, ২৪ ঘণ্টা নাগরিক সেবা প্রদানের জন্য খোলা থাকবে। মশকের প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস, মশক নিধনে দৈনন্দিন ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ। প্রয়োজনীয় সংখ্যক হাসপাতাল-ডিসপেনসারি ও প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপনসহ মাতৃসদন, পরিবার পরিকল্পনা, জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। শিক্ষার মানোন্নয়ন ও দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সংখ্যক কারিগরি ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ। গৃহকর বৃদ্ধি হবে না। হতদরিদ্র সন্তান-সন্ততির শিক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরদের শিক্ষা, বিনোদন ও চিকিৎসাসেবায় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাকে আরো কার্যকর করতে ফায়ার হাইড্রান্ট নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও পাড়া-মহল্লায় অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি প্রবেশের কার্যকর পদক্ষেপসহ প্রয়োজনে নিজস্ব দমকল বাহিনী গঠন করা হবে। বছরের একটি সময় নির্দিষ্ট করে ঢাকার উন্নয়ন ও সেবার সঙ্গে জড়িত সংস্থার কাছে তাদের বার্ষিক কাজের চাহিদাপত্র আহ্বান করা হবে। করপোরেশন কোনো রাস্তা নির্মাণের পরে অন্তত তিন বছরের মধ্যে অন্য সংস্থা ওই রাস্তা খনন করতে পারবে না। আইন, বিধি ও নীতিমালার কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে ঢাকার উন্নয়ন ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে সিটি করপোশনের কাছে সমন্বিতভাবে দায়বদ্ধ করা হবে। সপ্তাহের একদিন নগরবাসী মেয়রের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ পাবেন। ওয়ান স্টপ সার্ভিস ডেস্ক স্থাপন। দায়িত্ব গ্রহণের ৯০ দিনের মধ্যেই মৌলিক সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করব ইনশাআল্লাহ।
৫. উন্নত ঢাকা : বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশের ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নে উন্নত রাজধানী তথা উন্নত ঢাকা গড়ে তোলার বিকল্প নেই। অনেক সময় হয়তো পেরিয়ে গেছে; কিন্তু সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি। পাঁচ বছর মেয়াদি বিভিন্ন প্রকল্পসহ দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে ৩০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে নগরীর উন্নতি সাধন, ইমারত নির্মাণ, ভূমি ব্যবস্থাপনা, ভূমি অধিগ্রহণ, নগর পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে। নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের জনগণের আধুনিক সুযোগ-সুবিধার লক্ষ্যে নতুন প্রকল্প গ্রহণসহ প্রতিটি সড়ক ও নর্দমার উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের মান নিরূপণ করে অন্তত ১০ বছর স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা হবে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ বিবেচনায় নিয়ে জমির যুক্তিসংগত ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য সুব্যবস্থাসহ ছাত্র ও কর্মজীবী মহিলাদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক হোস্টেল গড়ে তোলা হবে। জনগণকে প্রদেয় করপোশনের সব সেবা যথা : বাণিজ্য লাইসেন্স, জন্মনিবন্ধনপত্র, প্রত্যয়নপত্র, গৃহকর, পৌরকর আনুষঙ্গিক অন্যান্য কর তথ্যপ্রযুক্তিগত সেবার আওতায় আনা হবে। সব ক্ষেত্রে অনলাইন সুবিধা সম্প্রসারণ করা হবে। ঘরে বসেই কর এবং নির্ধারিত ক্ষেত্রে ফি পরিশোধ সংক্রান্ত সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। করপোরেশন পরিচালনায় তথ্যপ্রযুক্তিগত ব্যবস্থাপনা প্রচলন করা এবং প্রতিটি ওয়ার্ডকে এর আওতাভুক্ত করা হবে। ২৪ ঘণ্টা হেল্পলাইন এবং নাগরিক সেবা ও সমস্যা, সমাধানে প্রয়োজনীয় তথ্যসমৃদ্ধ নগর অ্যাপ চালু করা হবে। সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় ই-লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা। নগর ভবনে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ রেখে বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও ফ্রি ওয়াই-ফাই। পর্যায়ক্রমে এসব বাস্তবায়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও কার্যসূচি গ্রহণ করা হবে। সর্বোপরি সিটি করপোরেশনের কার্যপরিধির আওতায় সততা, নিষ্ঠা, দক্ষতা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সমন্বিত প্রয়াসে আমাদের উন্নত ঢাকা গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ।
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আমাদের এই ঢাকা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতির আলিঙ্গনে, নানা গোত্র-বর্ণের সাংস্কৃতিক গৌরবময়তা ও ঐতিহ্যমণ্ডিত ঢাকা। এই ঢাকাতে জন্মেছি, বড় হয়েছি, সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়েও স্বপ্ন দেখি এই ঢাকাকে ঘিরে। ঢাকা বলতে আমার বেড়ে ওঠা এই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকাকেই বুঝি। ব্যথাতুর হীম বুকে তাকিয়ে দেখি, এখানেই পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট কালরাতে সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে হারিয়েছি আমার বাবা-মাকে। কিন্তু বিগত দিনে এখানেই পেয়েছি স্নেহ-ভালোবাসা-বন্ধন। এই ভালোবাসাকে পুঁজি করেই, স্বপ্নের উন্নত ঢাকার পথচলায় আপনার আস্থা ও সমর্থনই আমার পাথেয়।
ঢাকা দক্ষিণের নগরবাসীর প্রতি আবেদন জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই মেয়র প্রার্থী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আলোকোজ্জ্বল পথে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় ১১ বছর পূর্ণ হয়েছে। সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ এখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও লক্ষ শহীদের স্বপ্নসাধ ‘সোনার বাংলা’ এবং বর্তমান তারুণ্যের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার দ্বারপ্রান্তে। মানুষের জীবনযাত্রার মান ক্রমাগত বাড়ছে। অমিত সম্ভাবনাময় এই ধারাকেই আমি বেগবান করে উন্নত ঢাকা গড়তে চাই। আমি বিশ্বস্ততার সঙ্গে আপনাদের মতামত নিয়ে মিলেমিশে কাজ করতে চাই। আমাকে মেয়র নির্বাচিত করলে ঢাকাবাসীর জন্য আগামী পাঁচ বছরের প্রতিটি দিন ব্যয় করব।”
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “২০২০ ও ২০২১ সাল আমাদের জাতীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ দুটি বছর। ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুজিববর্ষ’ এবং ২০২১ সালে মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘সুবর্ণজয়ন্তী’ উদযাপনের দ্বারপ্রান্তে সমগ্র জাতি। সমগ্র জাতির সঙ্গে আমিও ইতিহাসের এই মাহেন্দ্রক্ষণ উদযাপনের মাধ্যমে ইতিহাস বিনির্মাণের গর্বিত অংশীদার হতে চাই।”
“‘আমাদের ঢাকা, আমাদের ঐতিহ্য’ এই স্লোগানে জনকল্যাণমুখী ও সুসমন্বিত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে উন্নত ঢাকা হিসেবে গড়ে তোলার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। এই ঢাকার সব নারী-পুরুষ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মই আমার চলার পথে আস্থা, শক্তি ও সাহস। তাদের উদ্দেশেই ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী হিসেবে আমি আমার নির্বাচনী ইশতেহার ২০২০ উৎসর্গ করলাম।”
সব শেষে তাপস বলেন, ‘এই ঢাকা আমাদের সবার প্রাণের ঢাকা। আমি আশা করি, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে উন্নত ঢাকা গড়ে তুলতে সুযোগ দেবেন।’