৮ মাসের সন্তানকে গাছে ঝুলিয়ে হত্যাচেষ্টা, বাবা গ্রেপ্তার
দ্বিতীয় স্ত্রী চলে যাওয়ায় প্রথম স্ত্রীর আট মাসের শিশু সন্তানকে দুই পা রশি দিয়ে বেঁধে আমগাছে উলটো করে ঝুলিয়ে নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টা করেন এক বাবা। নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলায় গতকাল সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এ ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় ওই পাষণ্ড বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে লোহাগড়া থানা পুলিশ।
ওই পাষণ্ড বাবার নাম মামুন শেখ (৩১)। তাঁর বাড়ি উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৩ বছর আগে মামুন শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় কুলসুম বেগমের (২৯)। বিয়ের পর তাঁদের সংসারে এক মেয়ে ও দুই ছেলে সন্তান জন্ম নেয়।
এক বছর আগে মামুন শেখ প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বনিবনা হচ্ছিল না। প্রায়ই তাঁকে যৌতুকের জন্য মারধর ও নির্যাতন করেন তিনি।
গতকাল সোমবার দুপুরে মামুন শেখ কুলসুম বেগমকে তার বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা যৌতুক আনতে বলেন। কিন্তু তাঁর মা-বাবা গরিব বলে তিনি তা আনতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি দিয়ে এলোপাতারি মারধর করেন স্বামী মামুন। মারধরে তাঁর হাতপায়ে, পিঠে, মাথায় জখম হয়। এরপর তাঁকে গলা চেপে ধরে শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন তিনি। এ সময় তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মাফুজা আক্তার সাথী (২৫) প্রথম স্ত্রীর চুলের মুঠি ধরে মেরে স্বামীর বাড়ি থেকে চলে যান।
দ্বিতীয় স্ত্রী চলে যাওয়ায় মামুন শেখ তাঁর প্রথম স্ত্রীর আট মাসের শিশু সন্তান আল হাবিবকে নিয়ে মোটা রশি দিয়ে দুই পা বেঁধে আমগাছে উলটো করে ঝুলিয়ে মারধর ও শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন। পরে প্রথম স্ত্রী কুলসুম বেগম ও তাঁর শাশুড়ি মামুনের হাত থেকে শিশুটিকে রক্ষা করতে গেলে তাঁদেরও মারধর করেন তিনি। এরপর তাঁর শাশুড়ি আসমা বেগমও কুলসুমকে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দেন।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘শিশুটির মা কুলসুম বেগম বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। সেই মামলার আসামি মামুন শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’