যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলমের ৬৬তম জন্মদিন আজ
দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলমের ৬৬তম জন্মদিন আজ সোমবার। সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের টিভি লাউঞ্জে কেক কেটে এবং মিষ্টিমুখ করিয়ে তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
এ সময় তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, এনটিভির পরিচালক নুরুদ্দীন আহমেদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি কবি হাসান হাফিজ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নবনির্বাচিত সভাপতি ওমর ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব শেখ মামুন, দপ্তর সম্পাদক সেবিকা রানি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি (একাংশ) কাদের গনি চৌধুরী, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক (একাংশ) সাজ্জাদ আরম খান তপুসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকেরা।
সাইফুল আলম ১৯৭৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় সাপ্তাহিক ‘কিশোর বাংলা’য় সহসম্পাদক হিসেবে সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেন। এরপর নিরবচ্ছিন্নভাবে এই পেশায়ই সাফল্যের সঙ্গে পথ চলছেন। কিশোর বাংলার পর তিনি দৈনিক জনতায় জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক (১৯৮৩-৮৪), দৈনিক নব অভিযানে প্রধান প্রতিবেদক (১৯৮৫), দৈনিক ইনকিলাবে (১৯৮৬ থেকে ১৯৯৯ সালের আগস্ট পর্যন্ত) জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দৈনিক যুগান্তরের পথচলার শুরু থেকেই পত্রিকাটির সঙ্গে আছেন সাইফুল আলম। ১৯৯৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর তিনি দৈনিক যুগান্তরে প্রধান প্রতিবেদক হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর পত্রিকাটির উপসম্পাদক, নির্বাহী সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর তিনি যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পান। পরে যুগান্তরের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষির্কীর অনুষ্ঠানে সাইফুল আলমকে সম্পাদক ঘোষণা করেন পত্রিকাটির স্বপ্নদ্রষ্টা ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি সাপ্তাহিক চিত্রালী, মশাল, আগামী, স›দ্বীপসহ বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখি করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি। এ ছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ২০১৭-২০১৮, দুই দফায় যুগ্ম সম্পাদক (১৯৯৫-১৯৯৬ ও ১৯৯৭-১৯৯৮) ও দুবার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সাইফুল আলম বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের দুবার নির্বাচিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং কয়েক দফায় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকাস্থ বৃহত্তর কুমিল্লা সাংবাদিক সমিতির উপদেষ্টা এবং চাঁদপুর প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন চাঁদের হাটের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হিসেবে এক যুগ (১৯৭৯-১৯৯০) দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি শিশু কল্যাণ পরিষদের ব্যবস্থাপনা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও সদস্য হিসেবে কয়েক দফায় দায়িত্ব পালন করেন।
সাইফুল আলম বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ সম্পাদক পরিষদেরও সদস্য। ১৯৮২ সালে তাঁর প্রথম বই ‘ছেঁড়াপাতা’ (শিশু-কিশোর গল্প) প্রকাশিত হয়। এর দ্বিতীয় সংস্করণ ‘নিম ফুলের ঘ্রাণ’ নামে প্রকাশ হয় ১৯৯৬ সালে। দ্বিতীয় বই ছড়া-কবিতা ‘হাত বাড়ালেই আকাশ’। তৃতীয় বই ‘কিছু ভাবনা কিছু কথা’। জাগৃতি থেকে ২০১৩ সালে বের হয়। চতুর্থ বই ‘মাইনাস নয় প্লাসের প্রজ্ঞাই গণতন্ত্র’। এটি দেশ প্রকাশন থেকে প্রকাশ হয়। পঞ্চম বই ‘গণতন্ত্রের যাত্রা ও অন্যান্য’। ২০১৯ সালে পলল প্রকাশনী এটি প্রকাশ করে। তিনি বাংলাদেশ মিউজিক জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের আবদুর রহমান চিশতি স্মৃতি পুরস্কার (২০০৭), পদক্ষেপ পুরস্কার (২০১০), জাতীয় সমন্বিত উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সম্মাননা স্মারক (২০১৪) ও আলতাফ আলী হাসু স্মৃতি পদক (২০১৯) পেয়েছেন।
সাইফুল আলম রাজধানীর মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু করেন। এরপর মতিঝিল কেন্দ্রীয় সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৭৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ১৯৭৭ সালে স্নাতক ও ১৯৭৮ সালে স্নাতকোত্তর করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদের সহ-সভাপতি ছিলেন। সাইফুল আলমের জন্ম ১৯৫৬ সালের ১ নভেম্বর ঢাকার ফরাশগঞ্জে। বাবা মোহাম্মদ আলী আরশাদ মিয়া এবং মা বেগম শামসুন নাহার। স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম। তিনি পেশায় ব্যাংকার।