১৮৬ শতাংশ সুদ না দেওয়ায় শিকলে বেঁধে নির্যাতন!

Looks like you've blocked notifications!
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামে সুদখোরের বাড়িতে শিকলবন্দি খলিল হাওলাদার। ছবি : এনটিভি

প্রায় ১৮৬ শতাংশ সুদসহ আসল টাকা পুরোপুরি পরিশোধ না করায় পটুয়াখালীর চরবেষ্টিত উপজেলা রাঙ্গাবালীতে শিকলে বেঁধে খলিল হাওলাদার (৩২) নামের এক যুবককে নির্যাতন করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একজনকে আটক করে।

মঙ্গলবার সকালে রাঙ্গাবালীর ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী, নির্যাতনের শিকার যুবক ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় কয়েকজন জানায়, উপজেলার কোড়ালিয়া গ্রামে ‘সুদ ব্যবসায়ী’ হিসেবে পরিচিত ঝুমুর বেগমের কাছ থেকে চলতি বছরের শুরুতে দ্বিগুণ সুদের ওপর সাত হাজার টাকা নেন একই গ্রামের খলিল হাওলাদার। সেই টাকা সুদসহ পরিশোধের জন্য মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে ঝুমুরের বাড়িতে যান খলিল। সেখানে গিয়ে মূল টাকা এবং সুদসহ  ১০ হাজার ৫০০ টাকা ঝুমুরকে দিতে চান। কিন্তু ঝুমুর দাবি করেন ২০ হাজার টাকা। দাবিকৃত টাকা না পাওয়ায় ঝুমুর, তাঁর স্বামী মিজু হাওলাদার ও ছেলে মহারাজ জোর করে খলিলকে শিকল দিয়ে ঘরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ফেলে। এরপর তারা খলিলকে মারধর করে। কয়েকবার ঝুমুর তাকে দা দিয়ে কোপানোর চেষ্টা করে। এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ খলিলকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে ঝুমুরসহ আরো চার-পাঁচজন নারী বাধা দেন।

দুই ঘণ্টা পর সকাল ১০টার দিকে খলিলকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ঝুমুরের স্বামী মিজু হাওলাদারকে আটক করে।

নির্যাতনের শিকার  খলিল হাওলাদার বলেন, ‘আমি ঝুমুরের কাছ থেকে দ্বিগুণ সুদের ওপর সাত হাজার টাকা নিয়েছিলাম। সেই টাকা সুদসহ সাড়ে ১০ হাজার টাকা হয়েছে। টাকা ফেরত দিতে ঝুমুরের বাড়িতে গেলে তিনি আমার কাছে মাসিক সুদ হিসেবে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। এতে আমি রাজি না হওয়ায় আমার পকেট থেকে ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ঝুমুর, তাঁর স্বামী ও ছেলে আমাকে শিকল দিয়ে বেঁধে মারধর করে। ঝুমুর দুই-তিন বার গলার কাছে দা নিয়ে কোপাতে উদ্যত হয়।’

জানতে চাইলে রাঙ্গাবালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনোজ কুমার সরকার বলেন, ‘সুদের টাকার জন্য এভাবে শিকলে বেঁধে রাখার ঘটনা আমি কখনো দেখিনি। খলিলকে উদ্ধার করতে গেলে ঝুমুরসহ আরো চার-পাঁচজন নারী আমাদের বাধা দেয়। অনেক চেষ্টার পর আমরা খলিলকে উদ্ধার করি।’

এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আরেফিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তাঁরা কোনো অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।