কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির প্রথম সভা

হরতাল মোকাবিলা করায় হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের প্রশংসা

Looks like you've blocked notifications!
হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের নবগঠিত কার্যকরী ও উপদেষ্টা কমিটির প্রথম সভায় অতিথিরা। ছবি : এনটিভি

বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর হরতাল অবরোধ দক্ষতার সাথে মোকাবিলা করায় হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্রের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মো. আবু জাহির। 

বৃহস্পতিবার রাতে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে জেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের নবগঠিত কার্যকরী ও উপদেষ্টা কমিটির প্রথম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আবু জাহির। 

আবু জাহির বলেন, হবিগঞ্জে বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধ দক্ষতার সাথে মোকাবিলা করেছে পুলিশ। বিগত তিন মাসে বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধে হবিগঞ্জ ছিল সারা দেশের চেয়ে শান্তিপূর্ণ। এ হিসেবে হবিগঞ্জে বর্তমান পুলিশের অপরাধ দমনে অভিজ্ঞতা হয়েছে। এ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে। 

সংসদ সদস্য আরো বলেন, বিগত দিনে হবিগঞ্জে অনেক পুলিশ সুপার এসেছেন এক ট্রাক ফার্নিচার নিয়ে। আর যাওয়ার সময় কয়েক ট্রাক সেগুনের ফার্নিচার নিয়ে গেছেন। কিন্তু বর্তমান পুলিশ সুপার হলেন ব্যতিক্রম। তিনি তাঁর দক্ষতায় হবিগঞ্জকে অনেক শান্তিপূর্ণ রেখেছেন।

মানবপাচার সম্পর্কে আবু জাহির বলেন, মানবপাচারকারীরা সারা দেশকে কলঙ্কিত করছে। মানবপাচারের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আরো বলেন, ‘আমার কাছে অভিযোগ রয়েছে রাতে হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও সরকারি স্থাপনায় মাদকসেবীদের আনাগোনা থাকে। সেদিকে পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশিং সদস্যদের নজর রাখতে হবে। মাদকের ভয়াল থাবা থেকে হবিগঞ্জের যুবসমাজকে রক্ষা করতে হবে। থানা থেকে দালাল ও টাউট-বাটপাড়দের বিতাড়ন করতে হবে।’ 

জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবুল খায়েরের সভাপতিত্বে সভায় আওয়ামী লীগের মহিলা সংসদ সদস্য কেয়া চৌধুরী বলেন, হাসপাতালে সাধারণ মানুষ বিপদে পড়ে চিকিৎসার জন্য যান। কিন্তু তাঁরা সঠিক চিকিৎসা পান না। হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় অনেক দুর্নীতি রয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘সভ্যতার দিক থেকে আমরা ব্রিটেন থেকে ৫০০ বছর পেছনে পড়ে রয়েছি।’ মাদক সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘হবিগঞ্জ শহরে এসপি কলোনি নামে মেথরপট্টিতে অবৈধ মদের ব্যবসার অভিযোগ পেয়েছি। আপনারা চাইলে আগামী ১০ দিনের ভেতরে ১০-১২ জন ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে মেথরপট্টিসহ মাদক ব্যবসায়ীদের সব কারখানা উচ্ছেদ করা হবে।’ 

পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র বলেন, কোনো ব্যক্তির প্রকাশ্য আয়ের উৎস নেই, অথচ বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। তাঁর আয়ের উৎস পুলিশ খুঁজে বের করবে। 

হবিগঞ্জের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মতিন খান বলেন, সত্যিকারের কোনো নির্যাতিত থানায় যেতে চায় না। থানা থেকে টাউট-বাটপাড় ও পলিটিক্যাল টাউটদের বিতাড়ন করতে হবে। পলিটিক্যাল টাউটরা দলের নাম ব্যবহার করে ফায়দা লোটেন। 

মতিন খান গ্রামের মুরুব্বিদের উদ্দেশে বলেন, ‘গ্রামে কোনো দাঙ্গা-হাঙ্গামা হলে সালিস-বিচারের জন্য এক শ্রেণির মুরুব্বিদের টাকা দিতে হয়। মুরুব্বিদের যে পরিমাণ টাকা দিতে হয়, এর চেয়ে কম টাকা দিয়ে মামলা সারা যায়। 
জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আরব আলী বলেন, হবিগঞ্জ শহরের বাইপাস সড়কে ও বহুলা এলাকায় ওপেন মাদক বিক্রি করা হচ্ছে। পুলিশ সব কিছু জানে কিন্তু গ্রেপ্তার করে না। তিনি পুলিশের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা পয়সা খান ভালো কথা। কিন্তু মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করেন।’

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমদুল হক, হবিগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র পিয়ারা বেগম, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, রোটারিয়ান ডা. জমির আলী, অ্যাডভোকেট পুণ্যব্রত চৌধুরী বিভু, অ্যাডভোকেট ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজন, শ্রমিক লীগ নেতা আরব আলী, ফজলুর রহমান চৌধুরী, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মোহাম্মদ ফরিয়াদ প্রমুখ।