গ্রামে বিয়ে খেতে গিয়ে লাশ হলেন ব্যবসায়ী

Looks like you've blocked notifications!
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় স্থানীয় দুই চেয়ারম্যান সমর্থকদের সংঘর্ষে নিহত ব্যবসায়ীর স্বজনদের আহাজারি। ছবি : এনটিভি

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের সমর্থকদের সংঘর্ষে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ছয়জন।

আজ মঙ্গলবার সকালে এ সংঘর্ষে বোমা হামলায় মারা যান ব্যবসায়ী হোসেন খান (৩২)। তিনি উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের মীর আলী মাদবরকান্দি গ্রামের জলিল খানের ছেলে। ঢাকা থেকে এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গ্রামে গিয়েছিলেন তিনি।

সংঘর্ষের ঘটনায় আহত জাহাঙ্গীর মাদবর, নুরু মিয়া খান ও ইলিয়াছ দড়িকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত সেকেন্দার ছৈয়াল, রজব আলী মাদবর ও নূর হোসেন খানকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সংঘর্ষে অন্তত দুই পক্ষের ৩০টি ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।

শরীয়তপুরের সহকারী পুলিশ সুপার তানভীর আহম্মেদ বলেন, এ ঘটনার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। ওই গ্রাম থেকে কিছু দেশি অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনো কোনো মামলা হয়নি।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বড়কান্দি ইউপির চেয়ারম্যান সিরাজ সরদার ও সাবেক চেয়ারম্যান শফিজ উদ্দিন খলিফার মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। গত রোববার স্থানীয় দুর্বাডাঙ্গা বাজারে দুইপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে একটি সংঘর্ষ হয়। এতে সিরাজের কয়েকজন সমর্থকের বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। সোমবার রাতে সিরাজের সমর্থকরা রঞ্চন ছৈয়ালকান্দি গ্রামে শফিজ উদ্দিনের সমর্থকদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয়। পরে আজ সকালে আবার সিরাজের সমর্থকরা শফিজ উদ্দিনের সমর্থকদের ওপর হামলা করে।

এ সময় তারা ওই গ্রামে বোমারও বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে হোসেন খান আহত হন। তাঁকে উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কতর্ব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের স্ত্রী মেরিনা আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী এলাকায় কোনো দলাদলির মধ্যে ছিল না। তিনি ঢাকায় ব্যবসা করতেন। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গ্রামে এসেছিলেন। আমার স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চাই।’

জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মাহাবুবুল আরেফিন বলেন, মৃত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাঁর মাথায় বোমার আঘাত ছিল। আঘাতে তাঁর মাথার ডান পাশের একটি অংশ উড়ে গিয়েছিল।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে সিরাজ সরদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

সাবেক চেয়ারম্যান শফিজ উদ্দিন খলিফা বলেন, ‘সিরাজ সরদার সব সময় আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালান। ২০১৩ সালেও তিনি আমার একজন কর্মীকে হত্যা করেছেন।’

সহকারী পুলিশ সুপার তানভীর আহম্মেদ বলেন, সংঘর্ষের পর ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার পর এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।