বাঘায় পুলিশ-আ. লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া

Looks like you've blocked notifications!

রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় জমি রেজিস্ট্রির ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুই পুলিশ কনস্টেবলসহ এক সরকারি কর্মচারী আহত হয়েছেন। 

আজ সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এরপর পুলিশের রিজার্ভ ফোর্স এক কাউন্সিলরের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ লাঠিসোটা  উদ্ধার করে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাঘা পৌরসভার কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস সরকার আজ দুপুরে আবদুল আজিজ নামের এক যুবলীগকর্মীকে নিয়ে বাঘা সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে যান। তিনি দলিল লেখকদের বিনা পারিশ্রমিকে রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার আবদার করেন। কিন্তু এতে দলিল লেখকরা রাজি হননি। পরে এ নিয়ে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি স্বপন সরকারের সঙ্গে কুদ্দুসের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে কুদ্দুসের সঙ্গে আসা যুবলীগকর্মী কবির হোসেন দলিল লেখকদের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন। 

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে কাউন্সিলর আবদুল কুদ্দুসের বাড়ির সামনে অবস্থিত বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাঁর ছোট ভাই ও ছেলের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ২৫-৩০ জন কর্মী-সমর্থক লাটিসোটা নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ের দিকে আসে। এ সময় পুলিশ বাঁধা দিলে কাউন্সিলরের লোকজন ইট-পাটকেল ও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় বাঘা থানার পুলিশ কনস্টেবল মজিবুর রহমান, রয়েল হোসেন এবং জরিনা নামের এক সরকারি কর্মচারী আহত হন। আহতদের বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঘা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর আবদুল কুদ্দুস সরকার বলেন, ‘দলিল লেখকরা প্রত্যেক দলিলের ক্ষেত্রে অবৈধভাবে অতিরিক্ত টাকা নেয়। এ ক্ষেত্রে তাদের শক্তি জোগান বাঘা থানা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তসিকুল ও তাঁর লোকজন। আমি অতিরিক্ত টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমার ছেলেদের সঙ্গে তারা সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে।’

বাঘা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি স্বপন সরকার অভিযোগ করে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী দলিল রেজিস্ট্রির টাকা নেওয়া হয়। অতিরিক্ত কোনো টাকা নেওয়া হয় না।

আবদুল কুদ্দুস সরকারি দলের নেতা হওয়ার সুবাদে প্রতি সপ্তাহে জমি রেজিস্ট্রির মক্কেল খুঁজে বের করেন। এরপর উল্লেখিত ব্যক্তির কাছ থেকে নিজে টাকা নিয়ে বিনা পারিশ্রমিকে দলিল লেখকদের দলিল লিখতে বাধ্য করেন। সোমবার এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে তাঁর লোকজন দলিল লেখক সমিতির লোকজনের ওপর হামলার চালায়।’ 
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী মাহামুদ জানান, আবদুল কুদ্দুসের লোকজন দলিল লেখকদের ওপরে হামলা চালালে পুলিশ এবং ইউএনও মিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে পুলিশের রিজার্ভ ফোর্স এসে আবদুল কুদ্দুসের বাড়ি তল্লাশি করলে সেখানে থেকে বিপুল পরিমাণ লাটিসোটা পাওয়া যায়। হামলার সময় ককটেল নিক্ষেপের ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি। 

বাঘার ইউএনও হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘দুই পক্ষকে ডেকেছি। উভয় পক্ষের কাছে ঘটনা জানার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’