তরুণীর মামলায় সানির ঠিকানা ভুল, বিপদে জারিকারক!

Looks like you've blocked notifications!

ক্রিকেটার আরাফাত সানির বিরুদ্ধে করা যৌতুকের মামলার ঠিকানা নিয়ে বিপদে পড়েছেন আদালতের নেজারত শাখার জারিকারক। সানির বিরুদ্ধে করা যৌতুকের মামলায় ঠিকানা দেওয়া হয়েছে - সরকার বাড়ি, আমিনবাজার, থানা-তেজগাঁও, জেলা-ঢাকা। কিন্তু এ ধরনের কোনো ঠিকানা ঢাকা শহরে নেই বলে জানিয়েছেন নেজারত শাখার কর্মচারীরা।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের নেজারত শাখায় দেখা যায় সানির বিরুদ্ধে সমনটি ঢাকার মহানগর হাকিম রায়হানুল ইসলামের আদালত থেকে পাঠানো হয়েছে। সে সমনের স্মারক নং ছিল ২৩২/১৭। সেখানে বিচারকের স্বাক্ষর দেওয়া ছিল। সানিকে আদালতে হাজিরের জন্য আগামী ৪ মে দিন ধার্য করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সিএমএম আদালতের নাজির এ জে এম নাজমুল আহসান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সমনের ঠিকানাটি মনে হচ্ছে ভুল। সমনটি জারিকারক জাহাঙ্গীরের কাছে হাওলা করা হয়েছে। তিনিই সমনটি জারি করবেন। তবে এমন ধরনের কোনো ঠিকানা আছে বলে আমার মনে হয় না। যদি ঠিকানা ভুল হয়, তাহলে আমরা আদালতে এ ধরনের কোনো ঠিকানা নেই বলে প্রতিবেদন দেব। এরপর আইন মোতাবেক বিচারক ব্যবস্থা নেবেন।’

বাদী নাসরিন সুলতানার আইনজীবী নাসরিন জাহান রুবি বলেন, ‘ঠিকানা লিখতে আমাদের ভুল হয়েছে। এখানে থানা- সাভার হবে। মনে হয়, আমাদের টাইপিং মিসটেক। কালকেই ঠিক করে দেওয়া হবে।’

গতকাল সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম রায়হানুল ইসলামের আদালতে ২০ লাখ টাকার যৌতুক চেয়ে মামলা করেন এক তরুণী। বিচারক বাদীর জবানবন্দি শুনে সানিকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন এবং সানির মা নার্গিস আক্তারকে মামলা থেকে বাদ দেন।  মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে পাঁচজনকে।

মামলায় বাদীনিকে সহজ-সরল, স্বামীভক্ত নারী, সু-গৃহিণী, আইন মান্যকারী ও শান্তিপ্রিয় নাগরিক দেখানো হয়েছে। অন্যদিকে আরাফাত সানিকে অত্যাচারী, নারীলোভী, যৌতুকলোভী, নারী নির্যাতনকারী, আইন অমান্যকারী দেখানো হয়েছে।  

আরজি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর ওই তরুণীর সঙ্গে আরাফাত সানির বিয়ে হয়। বিয়ের সময় পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করা হয়। বিয়ের পর তরুণীর বোনের বাড়িতে প্রথমে আরাফাত সানি তার সঙ্গে সংসার জীবন শুরু করেন। সংসার জীবন শুরু করার পর আরাফাত সানি বিভিন্ন অজুহাতে মেয়েটিকে ঘরে তুলে নেন না এবং বোনের বাড়িতে একরুম ঘরভাড়া করে থাকতে বলেন। তবে আরাফাত সানি কোনো ধরনের টাকা-পয়সা দিতে পারবেন না বলে জানান।

আরজিতে আরো বলা হয়, বিবাহের ছয় মাস অতিবাহিত হওয়ার পর ২০১৫ সালের ২৯ জুলাই ‘যৌতুকলোভী’ আরাফাত সানি ওই তরুণীকে ২০ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলেন। যৌতুকের টাকা এনে দিতে পারবেন না বলে জানালে তরুণীকে একা রেখে আরাফাত সানি অন্যত্র চলে যান। এরপর সানি বাদীনিকে কিছু ভরণপোষণের টাকা দিলে তাও পরে বন্ধ করে দেন। এরপর আরাফাত সানি মাঝেমধ্যে বাদীনিকে এসে মারধর করেন।

এরপর মীমাংসার চেষ্টা করলে আরাফাত সানি সাড়া দেন না। তরুণী আরাফাত সানিকে বোনের বাড়িতে ডেকে এনে আকুতি মিনতি করে তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। আরাফাত সানি তখন ক্ষেপে গিয়ে বলেন যৌতুকের টাকা না এনে দিলে ঘরে নেওয়া সম্ভব নয়। গত ২৩ ডিসেম্বর নাসরিনকে আরাফাত সানি বলেন টাকা না দিলে পরিণাম খারাপ হবে এবং  তরুণীর সঙ্গে আরাফাত সানির কিছু অন্তরঙ্গ ছবি আছে, সেগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবেন। যার কারণে তরুণী গত ২৫ ডিসেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

সর্বশেষ গত ১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় আরাফাত সানি তরুণীর ভাড়া করা বাড়িতে এসে দেখা করেন এবং বলেন ২০ লাখ টাকা না দিলে আর সংসার করবেন না।