নতুন সংজ্ঞা দিলেন ট্রাইব্যুনাল

উপাসনালয়ে হামলাও মানবতাবিরোধী অপরাধ

Looks like you've blocked notifications!

এখন থেকে কোনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা, ধর্মীয় গোষ্ঠীর ওপর হামলা এবং কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পর ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের কাজে বাধা প্রদান মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। আর এই অপরাধের বিচার হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেই।

urgentPhoto

আজ মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের সৈয়দ হাসান আলীর মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর্যবেক্ষণ অংশে এসব কথা বলেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

এই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক।

পর্যবেক্ষণে ট্রাইব্যুনাল আরো বলেন, ‘আসামির অনুপস্থিতিতে রায় দেওয়া ট্রাইব্যুনালের জন্য হতাশাজনক। আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়ে এর আগে আমরা মন্তব্য করেছি। আসামির অনুপস্থিতিতে বিচার হলে বিচার নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেন। আসামিপক্ষ যদি উপস্থিত থাকত, তাহলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ শুনানির মাধ্যমে বিচার সম্পন্ন করা যেত।’

ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘ট্রাইব্যুনাল আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়ে আদেশ দিতে পারেন। কিন্তু গ্রেপ্তারে পুলিশকেই ভূমিকা রাখতে হবে। আসামিকে গ্রেপ্তারে ব্যর্থতা কোথায়, সে গবেষণা করার মতো সুযোগ ট্রাইব্যুনালের নেই। আসামি উপস্থিত হলে বিচার আরো গ্রহণযোগ্য হতো।’

ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার ধর্মীয় বিধি অনুযায়ী শেষকৃত্য করার অধিকার রয়েছে। তা থেকে যদি কাউকে বঞ্চিত করা হয় এবং ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা ও ভাংচুর করা হয়, তা-ও মানবতাবিরোধী অপরাধ। ট্রাইব্যুনাল সে কথাই বলেছেন।

তুরিন আরো বলেন, ‘কাউকে শারীরিক নির্যাতনই শুধু নির্যাতন নয়, মানসিক নির্যাতন করলেও তা নির্যাতন হিসেবে গণ্য হবে বলে ট্রাইব্যুনাল পর্যবেক্ষণে বলেছেন।’

হাসান আলীর বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল তাঁর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।  অভিযোগ পাঁচটির মধ্যে তিনটিতে আমৃত্যু কারাদণ্ড, দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১১ নভেম্বর হাসান আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। একই বছরের ২২ আগস্ট আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করে প্রসিকিউশন। এর পর ওই বছরের ৭ ডিসেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়, চলতি বছরের ৩০ মার্চ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। হাসান আলীর বিরুদ্ধে মোট তিনটি হত্যাকাণ্ড, অপহরণ, নির্যাতন, দুটি গণহত্যা, অগ্নিসংযোগসহ মোট ছয়টি অভিযোগ আনা হয়। গত ২০ এপ্রিল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, হাসান আলীর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মাছিহাতা গ্রামে। তাঁর বাবা মাওলানা সৈয়দ মুসলেহ উদ্দিন ছিলেন জেলা শহরের (তৎকালীন মহকুমা সদর) হয়বতনগর আলিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল। এ সূত্রে তাঁরা কিশোরগঞ্জ থাকতেন। তাঁর বাবা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এবং কিশোরগঞ্জ মহকুমা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।