ভারতে নয়, বাংলাদেশে কেন : বিএনপি
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্র হোক এটা বিএনপি চায়। কিন্তু তা সুন্দরবনের নিকটবর্তী এলাকা রামপালে নয়। রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প হলে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। পরিবেশবাদীদের পর্যবেক্ষণ। বিজ্ঞানীদের পরিবীক্ষণ।’
urgentPhoto
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান এ কথা বলেন। এ সময় তিনি প্রশ্ন তুলেন, ‘ভারতের পাওয়ার থার্মাল কোম্পানি ভারতে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে গিয়েছিল কিন্তু সেখানে তারা আপত্তির মুখে পড়েছে। যে প্রকল্প ভারত করছে না, কেন এটা বাংলাদেশে? কেন এটা সুন্দরবনের কাছে?’
তবে কক্সবাজারের মহেশখালীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে কোনো আপত্তি জানায়নি বিএনপি।
দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আরো বলেন, ‘রামপাল থেকে মাত্র সাড়ে আট কিলোমিটার দূরে আমাদের সবার প্রিয় সুন্দরবন। বিশ্ব হেরিটেজের তালিকায় ওপরের দিকে সুন্দরবনের অবস্থান। এখানে যেন বিদ্যুৎকেন্দ্র না হয়- তা নিয়ে কেবল পরিবেশবাদীরা নন, রাজনীতিবিদরা নন, বিশিষ্ট নাগরিকরা নন, সারা পৃথিবীর পরিবেশবাদীরা খুব উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ইউনেস্কো উদ্বেগ প্রকাশ করে গত বছর সরকারকে চিঠি দিয়েছে।’
‘চলতি মাসে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকা রিভিউ হচ্ছে। সুন্দরবন এ তালিকায় থাকবে কি থাকবে না তা রিভিউ করা হবে। যদি সুন্দরবন বিপন্ন হয়ে যাওয়ার তালিকায় পড়ে যায় তবে আমাদের গর্বের বিষয়, অহঙ্কারের বিষয় হারিয়ে যাবে।’
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন করার মতো অনেক বিকল্প উৎস আছে। কিন্তু আমাদের অনেকগুলো সুন্দরবন নেই।’
বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদসহ অন্য সব রাজনৈতিক দল এমনকি যারা রাজনীতি করেন না তাঁরা সবাই এ বিষয়গুলোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অত্যন্ত সুস্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, সুন্দরবনের কাছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা যাবে না। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, যাঁরা বিএনপিকে ভোট দেন না, যাঁদের অনেকেই নৌকা মার্কায় ভোট দেন- এ বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে তাঁদেরও উদ্বেগ আমরা লক্ষ করেছি।’
বিএনপির মুখপাত্র আরো বলেন, ‘সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য নষ্ট হলে পরিবেশ, মানুষ ও প্রকৃতির ওপর যে বিপর্যয় আসবে তা সামাল দেওয়ার মতো ক্ষমতা আমাদের থাকবে না। তারপরও সরকার এ থেকে সরে আসছে না।’
আসাদুজ্জামান আরো বলেন, ‘ভারতসহ অন্যান্য দেশের বিনিয়োগ নিয়েই আমরা কাজ করব কিন্তু সে বিদ্যুৎ প্রকল্প কেন রামপালেই করতে কবে? কেন সুন্দরবনের কাছেই করতে হবে? উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী নিজের এলাকায় করুক, তাতে আমাদের আপত্তি নাই। আমরা চাই এ বিদ্যুৎ প্রকল্পটি হোক, কিন্তু তা রামপালে না।’