শিক্ষার্থীকে ‘হল থেকে বহিষ্কার’, বেরিয়ে গেলেন সহপাঠীরাও
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীকে ‘সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও হল থেকে বহিষ্কারের’ প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাঁর সহপাঠীরা। তাঁরাও হল ছেড়ে এখন রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন।
আজ বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়টির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী শামসুজ্জামান বাপ্পিকে অস্থায়ী হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে প্রথম ব্যাচের সব শিক্ষার্থী হল ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। তাঁরা অস্থায়ী হলটির সামনের প্রধান ফটকে অবস্থান করছেন।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম ব্যাচের ছাত্র মো. ইমরান বলেন, ‘বাপ্পীকে যে অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। যখন সে আন্দোলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় চালুর জন্য, এর বিরুদ্ধে একটি পক্ষ তখন থেকে তার বিরুদ্ধে কাজ করছে। এখন তাকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ওর জীবনের কোনো নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে এভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিল প্রশাসন।’ তিনি আরো বলেন, ‘ওর বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা না হলে আমরা অনশনে যাব।’
এ ব্যাপারে শামসুজ্জামান বাপ্পি বলেন, ‘২০১৫ সালে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করার জন্য আমি ও আমার বন্ধুরা আন্দোলন শুরু করেছিলাম। সেই আন্দোলনের ফলে একই বছরের শেষ দিকে কার্যক্রম শুরু হয়। যখন আমরা শহীদ মিনারে ফুল দিতে যেতে চাই, জাতির জনকের শোক দিবসে পালন করার ব্যাপারে কথা বলি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন করি, আমাদের সবাইকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। প্রশাসনের সব অনিয়ম নিয়ে কথা বলায় বিশ্ববিদ্যালয় সামান্য অভিযোগে আমাকে বহিষ্কার করে। এটা মূলত আমার মুখ বন্ধ করার চেষ্টামাত্র।’
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা বলেন, ‘আমি বতর্মানে চট্টগ্রাম অবস্থান করছি। এ বিষয়ে আমি অবগত না। দেখি কী করা যায়।’
বাপ্পীকে হল থেকে বহিষ্কারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম মুন্না ও সদস্য-সচিব আবদুল্লাহ আল মামুন।
পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের জেলা কমিটির নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সংহতি প্রকাশ করে অবিলম্বে বাপ্পীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান।
ছাত্রাবাসের নিয়মশৃঙ্খলা ভঙ্গ করার অভিযোগে গত বছর ৪ আগস্ট বাপ্পিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় প্রশাসন। সবশেষ আজ বিকেলে প্রশাসনের নির্দেশে পুলিশ গিয়ে তাকে হল থেকে বের করে দেয়।
২০১৪ সালে শুরু হওয়া এই বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম চলছে শহরের শাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের দুটি শ্রেণিকক্ষে। ওই স্কুলেরই একটি শিক্ষক কোয়ার্টারকে অস্থায়ী ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।