বাংলাদেশে আইএস থাকার প্রমাণ নেই : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

বাংলাদেশে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) থাকার কোনো প্রমাণ নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে বিভিন্ন দেশের পুলিশপ্রধানদের সম্মেলনের শেষ দিনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী এ দাবি করেন। তিনি বলেন, দেশীয় যেসব জঙ্গি আছে তারা অনলাইনভিত্তিক।
শাহরিয়ার আলম আরো বলেন, ‘দেশে ইসলামিক স্টেট (আইএস) বা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের অস্তিত্ব নেই। সম্প্রতি দেশে যেসব সন্ত্রাসী হয়েছে, আমরা দেখেছি এসব হামলা দেশীয় সন্ত্রাসীরা চালিয়েছে। আইএস বা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক সংগঠনের সঙ্গে এদের যোগাযোগ আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই।’
দক্ষিণ এশিয়ার ১৪টি দেশের ৫৮ জন পুলিশ কর্মকর্তার অংশগ্রহণে পুলিশপ্রধানদের তিনদিনব্যাপী সম্মেলনে বেশির ভাগ সময়ই জঙ্গিবাদ ও জঙ্গি ইস্যু আলোচনায় ছিল।
প্রতিটি দেশের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ এ সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানান। এ সময় বারবার উঠে আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কথা। বলা হয়, বন্দিবিনিময় ও পাশের দেশে পালিয়ে থাকা অপরাধী ধরার বিষয়টি। সম্মেলনের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে অংশ নেওয়া দেশগুলোর প্রতিনিধিরা ১৭টি বিষয়কে প্রধান করে যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করেন।
পরে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক সাংবাদিকদের জানান সম্মেলন থেকে তাঁদের প্রাপ্তির কথা। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে এ দেশে জঙ্গিবাদ বিস্তার লাভ করায় সম্মেলনে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে চুক্তির প্রস্তাব দিলেও আইনের বাধ্যবাধকতা থাকায় তাতে স্বাক্ষর করে করতে অস্বীকার করে সংস্থাটি।
পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম তাদের (ফেসবুক) সঙ্গে একটা এমওইউ (সমঝোতা স্মারক) করতে, কিন্তু তাদের নীতিমালায় কোনো দেশের সঙ্গে এমওইউ করে না। তারা এমওইউ করতে সম্মত হয়নি।’
সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা মোট ১৪টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রবন্ধগুলোতে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল এবং বিশ্বব্যাপী অপরাধের প্রকৃতি চিহ্নিতকরণ ও আন্তদেশীয় অপরাধ দমনে একটি কৌশল উদ্ভাবনের বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে।
এর আগে জঙ্গিবাদ বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ রোহান গুনারত্নে বলেছেন, ‘হলি আর্টিজানে হামলাটি আইএস (ইসলামিক স্টেট) করেছিল; জেএমবি (জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ) নয়।’
ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর পলিটিক্যাল ভায়োলেন্স অ্যান্ড টেররিজম রিসার্চের (আইসিপিভিটিআর) পরিচালক গুনারত্নে বলেন, ‘জেএমবি কোনো বিদেশিকে এখনো মারেনি। কোনো ইতালিয়ান বা জাপানি তাদের শত্রু নয়। বাংলাদেশে আইএস আছে এটি স্বীকার করে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’