কিশোরগঞ্জে মিজারুল কায়েসের জানাজা অনুষ্ঠিত
ব্রাজিলে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিজারুল কায়েসের জানাজা কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় নিজ গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার হোসেন্দি হাইস্কুল মাঠে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজা পরিচালনা করেন স্থানীয় হোসেন্দি জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মো. ইসমাইল হোসেন। আজ বাদ আসর তাঁকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তাঁর মা-বাবার কবরের পাশে দাফন করার কথা রয়েছে।
সাবেক এই পররাষ্ট্রসচিবের মরদেহ কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিমানে গত রোববার দিবাগত রাতে দেশে আনা হয়। এর আগে ব্রাজিলের ব্রাসিলিয়ায় পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় তাঁকে শেষ বিদায় জানানো হয়। গতকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধায় অনেকেই স্মরণ করেন সাবেক এই পররাষ্ট্রসচিবের কর্মময় জীবনকে। শহীদ মিনারে নেওয়ার আগে সকাল সাড়ে ৮টায় তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। বাদ আসর গুলশানের আজাদ মসজিদেও তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে মিজারুল কায়েসের মরদেহ হোসেন্দি হাইস্কুল মাঠে নেওয়া হয়। এ সময় সেখানে স্থানীয় সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন, জেলা প্রশাসক আজিমুদ্দিন বিশ্বাস, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু, পাকুন্দিয়া পৌরসভার মেয়র আখতারুজ্জামান খোকন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্নপূর্ণা বিশ্বাস ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান জেলার মানুষদের পক্ষে মরদেহ গ্রহণ করেন। পরে সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকসহ সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা মিজারুল কায়েসের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
জানাজা শুরুর আগে মিজারুল কায়েসের বড় ভাই মেজর জেনারেল (অব.) ইমরুল কায়েস পরিবারের পক্ষ থেকে সেখানে বক্তব্য দেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর ছোট ভাই আমেরিকা প্রবাসী অধ্যাপক শাকিল কায়েস, তিন ভগ্নিপতি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে উপসচিব হুমায়ুন কবীর।
পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোতায়েম হোসেন স্বপন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম কাকন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উপজেলা ইউনিট কমান্ডার মেজবাহ উদ্দিন, স্থানীয় হোসেন্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান আকন্দসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ জানাজায় অংশ নেন। জানাজা শেষে মিজারুল কায়েসের মরদেহ নিয়ে তাঁর স্বজনরা আবার হেলিকপ্টারে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।
মিজারুল কায়েসের বড় ভাই মেজর জেনারেল (অব.) ইমরুল কায়েস বলেন, ‘আমরা বনানীতে আমাদের মা-বাবার কবরের পাশে আসরের নামাজের পর তাঁকে (মিজারুল কায়েস) দাফন করার পরিকল্পনা করেছি।’
গত ১১ মার্চ ব্রাজিলের স্থানীয় সময় রাত ৯টায় ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে মিজারুল কায়েস ইন্তেকাল করেন। গত ১৫ মার্চ মুসলিম দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের আয়োজনে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৮২ ব্যাচের বিসিএস কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজারুল কায়েস এর আগে পররাষ্ট্রসচিব ছাড়া যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনার এবং রাশিয়ায় রাষ্ট্রদূতসহ দেশ-বিদেশে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন।