সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে দ্বিতীয় দিনের ভোট চলছে

Looks like you've blocked notifications!

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে দ্বিতীয় দিনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার শেষ দিনের ভোট গ্রহণ সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। রাতে শুরু হবে ভোট গণনা।

গতকাল বুধবার প্রথম দিনে পাঁচ হাজার ৮১ জন ভোটারের মধ্যে এক হাজার ৯৫০ জন আইনজীবী ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। নির্বাচন-সংক্রান্ত উপকমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এ ওয়াই মশিউজ্জামান সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

নির্বাচনে প্রতিবারের মতো এবারও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের ‘সাদা’ প্যানেল এবং বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদের ‘নীল’ প্যানেলের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন সাধারণ আইনজীবীরা।

গত বছর সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনে ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতিসহ আটটি পদে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত আইনজীবীরা বিজয়ী হন। সম্পাদকসহ ছয়টিতে নির্বাচিত হন বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীরা। এবারের নির্বাচনেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চায় সরকার-সমর্থিত আইনজীবী প্যানেল। অন্যদিকে জয়ের ধারায় ফিরতে মরিয়া বিএনপি ও জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা।

দুই দলের প্রধান শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া নিজ দলীয় আইনজীবীদের নিয়ে সভা ও বৈঠক করেছেন। তাতে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজের মাধ্যমে নিজেদের পক্ষে ফল আনার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।

এবারের নির্বাচনকে ঘিরে চলছে নানা রকম আলোচনা। উভয় প্যানেলই দাবি করছে, নির্বাচনে জয়ী হবে তারা।

দুই প্যানেলই নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। অভ্যন্তরীণ কোন্দল কমিয়ে আনাসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে যেকোনো মূল্যে বিজয় ছিনিয়ে আনতে মাঠে রয়েছেন সরকার-সমর্থক ক্ষমতাসীন আইনজীবীরা।

সংগঠনের পূর্ণ শক্তি ফিরে পেতে মরিয়া বিএনপি ও জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা। নিজেদের কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা দখলে নিতে দুই দলের আইনজীবীরাই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

নির্বাচনে সরকার-সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে সভাপতি পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু। আর সম্পাদক হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম বুদু। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত প্যানেল থেকে সভাপতি পদে লড়ছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বারের সাবেক সভাপতি মো. জয়নুল আবেদীন। সম্পাদক হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও বর্তমান সম্পাদক এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।

আওয়ামীপন্থী প্যানেল থেকে সহসভাপতি পদে অজিবউল্লাহ ও হোসনে আরা, কোষাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম হিরু, সহসম্পাদক শফিকুল ইসলাম ও সেলিম আজাদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কুমার দেবুল দে, এ বি এম নূরে আলম উজ্জ্বল, হাসিনা মমতাজ, রুহুল আমিন তুহিন, হাবিবুর রহমান হাবিব, মাহমুদুন্নবী উজ্জ্বল ও শেখ মো. মাজু মিয়া।

বিএনপিপন্থী প্যানেল থেকে সহসভাপতি পদে উম্মে কুলসুম বেগম (রেখা) ও ড. মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া, কোষাধ্যক্ষ পদে এ বি এম রফিকুল ইসলাম তালুকদার (রেজা) এবং সহসম্পাদক পদে কাজী জয়নুল আবদীন ও শামীমা সুলতানা (দীপ্তি) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সদস্যপদে লড়ছেন শেখ তাহসিন আলী, মো. এমাদুল হক, আয়েশা আক্তার, মো. আহসানউল্লাহ, মো. মুসাব্বির হাসান ভূঁইয়া (রোমান), মোহাম্মদ হাসিবুর রহমান ও মৌসুমি আখতার।

সরকার-সমর্থিত আইনজীবী প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি একটি পেশাজীবী সংগঠন। এই সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হলে সংগঠনের সদস্যদের মর্যাদা রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করব। সব দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে আইনজীবীদের কল্যাণে বেঞ্চ ও বারের মধ্যে দূরত্ব দূর করতে সচেষ্ট হব।’

অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট দেশের সাধারণ মানুষের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল। অতীতের মতো এবারও নির্বাচিত হলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করব। আইনজীবী সমিতি ও বেঞ্চের মধ্যে যে দূরত্ব রয়েছে, তা কমিয়ে এনে সিনিয়র ও জুনিয়র আইনজীবীদের সম্মান রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব। এ ছাড়া আইনজীবীদের দীর্ঘদিনের দাবি, ২০ তলা ভবন নির্মাণ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’

প্রতি এক বছর পরপর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। গত নির্বাচনে সভাপতি পদে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও সম্পাদক পদে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।