বদচরিত্রের ছেলেমেয়েদের খুঁটির সাথে বাঁধার নির্দেশ
বদচরিত্রের ছেলেমেয়েদের বিদ্যুতের খুঁটির সাথে আর সন্ত্রাসীদের হাত-পা বেঁধে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর ও বন্দর) আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান। সেই সঙ্গে তাদের খাবার-দাবারও দিতে বলেছেন। যাতে তারা ওই বাঁধা অবস্থায় ঈদ করার শাস্তি পান।
urgentPhoto
আজ বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভাকক্ষে জেলার বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন, পরিবহন মালিক শ্রমিক সংগঠন, জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিম ওসমান এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ নিট পোশাক উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের সমিতির (বিকেএমইএ) সভাপতি সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগেই পোশাক কারখানার মালিকদের শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস পরিশোধ করতে বলেছেন।
বৈঠকে তিনি পবিত্র রজমান মাসে নারায়ণগঞ্জ শহরের যানজট নিরসনে বেকার তরুণ, যুবক ও কলেজছাত্রদের স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করার অনুরোধ জানান। এর বিনিময়ে তিনি ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেন।
সভায় উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে সেলিম ওসমান বলেন, ‘বদচরিত্রের ছেলেমেয়ে রাস্তাঘাটে যদি ধরা পড়ে একেবারে তারের খাম্বার সাথে বেঁধে রাখবেন। ওরে খাওন দিবেন। পরন দিবেন। সবই দিবেন। ঈদ যেন তারের খাম্বার সাথে করে। ওর পিছমোড়া বাঁধ দিবেন। একটা সন্ত্রাসী ধরেন আর ঝুলাইয়া রাইখা দেন, হাত-পা বেঁধে। এটা জনগণকে করতে হবে। এটা পুলিশ করলে দোষ হবে।’
বিকেএমইএর সভাপতি সেলিম ওসমান বলেন, পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের বেতন বোনাস ঈদের আগেই দেওয়া হবে। যাতে তাঁরা ঈদের কেনাকাটা করার সময় পান। আর কোনো কারণে কোনো গার্মেন্টস যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে শ্রমিকদের শত ভাগ পাওনা ঈদের আগেই পরিশোধ করে দিতে হবে। প্রয়োজনে স্ত্রীর গয়না, জমি-জমা বিক্রি করে হলেও দিতে হবে।
শ্রমিকদের ডেকে এনে প্রেসক্লাবের সামনে এবং শহীদ মিনার চত্বরে আন্দোলন করার সমালোচনা করেন এই সংসদ সদস্য। তিনি নগরীর যানজট ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শিক্ষার্থী ও বেকার যুবকদের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, তারা যদি স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে সহযোগিতা করে তাহলে তাদের পুরস্কার দেওয়া হবে।
পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে নারায়ণগঞ্জ জেলার সাত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও বক্তব্য দেন। সভায় বলা হয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল, সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর, মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা, বন্দর থানার মদনপুর, রূপগঞ্জের ভুলতা, আড়াইহাজারের পাঁচরুখী ও ফতুল্লার পঞ্চবটি, পাগলা এবং নারায়ণগঞ্জ সদরের বঙ্গবন্ধু সড়ক, সিরাজদ্দৌলা সড়কসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যানজট নিরসনে ফুটপাথের দোকানপাট উচ্ছেদ করতে হবে। একই সাথে পুলিশের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে।
সেলিম ওসমান বলেন, ‘কোথাও যেন এই রোজার মাসে অরাজকতা সৃষ্টি না হয়। কোনো কারখানা পুরো বোনাস দেয়, কোনো কারখানা অর্ধেক বোনাস দেয়। এটা মালিক-শ্রমিকের রিলেশনের ব্যাপার। কিন্তু বখরার জন্য কেউ যেন শ্রমিকদের উসকানি না দেন। শ্রমিকদের বাড়ি থেকে ডেকে এনে বিকেএমইএ অফিসের সামনে কারা দাঁড় করায়। কথায় কথায় প্রেসক্লাবের সামনে কিছু প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড় করায়। কোনো আলোচনা ছাড়াই। আসেন আলোচনা করি।’
পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘চাঁদাবাজি কে কে করে আমরা কাউকে দোষারোপ করি না। সবই আমাদের লোক। যত সেক্টরেই বলি, যত জায়গায় চাঁদাবাজি হয়, এই পুলিশেরই ভাই পরিবহন সেক্টরে, মালিক একজন, শ্রমিক একজন। আবার বিচারক একজন, উকিল একজন। সবই এই পুলিশের ভাই।’