নেদারল্যান্ডসের অর্থায়নে করা প্রকল্প দেখতে পটুয়াখালী সফরে আসেন দেশটির অবকাঠামো উন্নয়ন ও পরিবেশমন্ত্রী মেলানি স্যুজ ভান। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। যদিও প্রকল্প এলাকার স্থানীয় সংসদ সদস্য এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না।

পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রেসিডিয়াম সদস্য। অন্যদিকে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার একই দল থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং দলের সাবেক মহাসচিব। 

আজ বুধবার সদর উপজেলার ছোটবিঘাই ইউনিয়নের ভুতুমিয়া এলাকায় যান নেদারল্যান্ডসের মন্ত্রী মেলানি স্যুজ ভান। সেখানে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে না দেখে বরং একই দলের নেতা পানিসম্পদমন্ত্রীকে দেখে বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়।
   
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী-১ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য রুহুল আমিন হাওলাদার অভিযোগ করেন, জাতীয় পার্টির দ্বন্দ্বের জের এসে তাঁর (রুহুল আমিন) ওপর ভর করেছে। তাঁকে এ সফরের কথা জানানোই হয়নি।
 
তবে সফরে স্থানীয় সংসদ সদস্য কেন নেই- এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘সরকারের একজন মন্ত্রী হিসেবে অন্য দেশের মন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে ওই মন্ত্রীকে সম্মান দেখানো হয়েছে। যেহেতু পানিসম্পদ বিষয়ে দেখভাল করার জন্য নেদারল্যান্ডসের ওই মন্ত্রী পটুয়াখালী সফর করেছেন।’ 

মেলানি স্যুজ ভান ভুতুমিয়া এলাকা পরিদর্শন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের ‘ব্লু গোল্ড প্রকল্প’ এবং ম্যাক্স ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। এ সময় আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ ছিলেন নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মোহাম্মদ বেলাল, ম্যাক্স ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভেন লি পোল ও ওকা লি পোল, ফাউন্ডেশনের আবাসিক প্রতিনিধি ইমাম মাহমুদ রিয়াদ প্রমুখ। 

পটুয়াখালী জেলা জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সভাপতি খায়রুল আলম মামুন বলেন, ‘সরকারি দল ও জেলা প্রশাসন জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মী এবং আমাদের সংসদ সদস্যকে কোনো কর্মসূচিতেই রাখছে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের পটুয়াখালী সফরে কোনো নিমন্ত্রণপত্রে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে রাখা হয়নি। তবুও আওয়ামী লীগের এ নেতার সম্মানে আমন্ত্রণ না পেয়েও রুহুল আমিন পটুয়াখালী পৌঁছে তাঁর সব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।’ 

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক অমিতাভ সরকার বলেন, ‘যেকোনো অনুষ্ঠানের বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের শুধু জানিয়ে দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করা জেলা প্রশাসনের কর্তব্য।’

এ ব্যাপারে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খান মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘প্রশাসন থেকে নেদারল্যান্ডসের মন্ত্রী আসার চিঠি পেয়েছি।’ রুহুল আমিনকে এ সফরে আমন্ত্রণ করা না করা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।