মনিরুল ইসলামের ভাষ্য

‘আস্তানাজুড়ে জঙ্গিদের’ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন দেহ

Looks like you've blocked notifications!
ছবি : এনটিভি

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ফতেপুরে (এলাকাটি নাসিরপুর নামেও পরিচিত) ‘জঙ্গি আস্তানা’য় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘অপারেশন হিটব্যাক’ শেষ হয়েছে। এতে সাত থেকে আটজন নিহত হয়েছেন। তাঁরা বিস্ফোরণের মাধ্যমে নিজেদের উড়িয়ে দিয়েছেন বলে ধারণা পুলিশের। তাঁদের দেহ বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে।  

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অভিযান শেষ হয়েছে। আমরা ভেতরে বেশকিছু লাশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখেছি। সেগুলো একত্রিত করলে পুরো সংখ্যাটি পাওয়া যাবে। তবে তা সাত-আটজনের কম হবে না। এরা আত্মহনন করে থাকতে পারে।’

‘আমরা বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে তাদের লাশ দেখেছি। এদের লাশ স্বাভাবিকভাবে দেখলে কেউ চিনবে না। কারো মাথা হয়তো কয়েক টুকরো হয়ে গেছে। হাতের কোনো চিহ্ন নেই। শরীর দুমড়েমুচড়ে গেছে। এভাবে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন লাশ পড়ে আছে।’

অভিযান শেষে সোয়াট সদস্যরা বাড়ির ভেতরে গিয়ে একটি বোমা অবিস্ফোরিত অবস্থায় পেয়েছেন, তাঁরা সেটির বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন বলেও জানান মনিরুল ইসলাম।

মৌলভীবাজার শহরের বড়হাট ও সদর উপজেলার ফতেপুর এলাকায় গত বুধবার থেকে ঘেরাও করে রাখেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এই বাড়ি দুটির মালিক লন্ডনপ্রবাসী সাইফুর রহমান।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের দুটি জঙ্গি আস্তানার মধ্যে ফতেপুরে ‘অপারেশন হিট ব্যাক’ নামে সোয়াটের এই অভিযান শুরু হয়। রাতে অভিযান বন্ধ করে দিয়ে আজ ভোর থেকে শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তা শুরু হয়নি। সকাল সাড়ে ৭টায় সোয়াটের একটি দল ফতেহপুরের জঙ্গি আস্তানায় পৌঁছায়। সকাল ৮টার দিকে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট ফতেহপুরের জঙ্গি আস্তানার বাড়িতে পৌঁছায়। পরে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অভিযান শুরু হয়।

অভিযান শুরুর পর দুপুর ১২টার কিছু আগে থেকে টানা গুলির শব্দ শোনা যায়। এ সময় বেশ কয়েক দফায় ঘটনাস্থলে থেকে থেমে থেমে গুলি চলে। বেলা ১টা ৪ মিনিটে ফতেহপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকে বড় একটি বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসে। এরপর সোয়াটের সদস্যরা ওই বাড়ির ভেতরে গ্যাস ছোড়েন। এ সময় ঝাঁঝাল গ্যাসে পুরো এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এর পর থেকে আবারও ওই বাড়ির আশপাশ থেকে টানা গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। 

এদিকে শহরের বড়হাট এলাকায় সন্দেহজনক জঙ্গি আস্তানাটি ঘেরাও করে রেখেছে পুলিশ। সকালে বেশ কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা গেছে। এ এলাকা দিয়ে কাউকে যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছে না।