৩৫ দিন পর মুক্ত বন্যা ও পান্না

Looks like you've blocked notifications!

৩৫ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের দুই বোন  স্কুল ছাত্রী বুশরা আক্তার পান্না ও বন্যা আক্তার (২০)। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি উভয়কে আটক করে হরতালে পিকেটিং ও একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

কিশোরগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত আজ বৃহস্পতিবার পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকার বিনিময়ে দুই বোনের জামিন মঞ্জুর করেন। পরে বিকালে কারাগার থেকে মুক্তি পান তারা। মেয়েদের বাবা খায়ের মিয়া ও মা মরিয়ম বেগম বীনা এ কথা জানান।

মেয়েদের মধ্যে বুশরা দশম শ্রেণিতে পড়ে আর তার বড় বোন বন্যা আক্তার দুই শিশুর মা। খায়ের মিয়া ও মরিয়ম জানান, মেয়েদের আটক করে নির্যাতন করে আদালতে পাঠানো হয়।

পান্না ও বন্যার মা মরিয়ম বেগম বীনা জানান, একটি মামলার সন্দেহভাজন হিসেবে তাঁর ছেলে কাউছার (২৫) কে  আটক করতে ভৈরব থানায় তখনকার কর্মরত পুলিশের জেষ্ঠ্য উপ-পরিদর্শক মো: নজমুল হুদার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তাদের বাড়িতে আসে। পুলিশ আচমকা বাড়ির টিনের তৈরি সদর গেইট ভেঙ্গে বাড়িতে ঢুকেন। তখন ঘরে থাকা দুই বোন পান্না আর বন্যা এগিয়ে এসে বাড়ির গেইটে কড়া না নেড়ে ভেঙ্গে ঢুকার প্রতিবাদ করেন। এই নিয়ে পুলিশের সাথে বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে নজমুল হুদা দুই বোনকে কিল-থাপ্পর ও লাঠি দিয়ে প্রহার করে ঘরে ঢুকে কাউছারের খোঁজ করে। এ সময় পুলিশ তাদের ঘরের আসবাব ও মালামাল তছনছ করতে থাকলে তারা এর প্রতিবাদ করেন। এক পর্যায়ে কাউছারকে না পেয়ে পান্না ও বন্যাকে আবারও মারধর করে থানায় ধরে নিয়ে যায়। পরে ২০১৬ সালে বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধের সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব থানার অদূরে আলশেফা হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় বাসে থাকা এক যাত্রী পিকেটারদের ইট-পাটকেলে আহত হয়ে মারা যাওয়ায় করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করে।

এ ঘটনায় মেয়েদেরকে অকথ্য গালাগালিসহ শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে তখন অভিযোগ করা হয় তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে। তখন পান্না-বন্যাকে অন্যায়ভাবে আটক ও  নির্যাতন বিষয়ে এলাকায় নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এই নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারিত হলে চাপের মুখে পড়ে পুলিশের ও অভিযুক্ত কর্মকর্তা ভৈরব থানা থেকে বদলির আদেশ নিয়ে গাজীপুর জেলায় চলে যান।

বন্যা-পান্নার বাবা রিক্সাচালক খায়ের মিয়া জানান, তিনিসহ তার পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগ সমর্থক। তিনি সদ্য সমাপ্ত পৌর এলাকার ৪নং ওয়ার্ডের একজন ভোটার (ডেলিগেটর) ছিলেন। তার ক্রমিক নং ৩০ আর সদস্য নং ৬০৬৭৫০। তার অভিযোগ, তিনি একজন আওয়ামী লীগার হওয়া সত্বেও মেয়েরা কি করে বিএনপি-জামায়াতের পিকেটিংয়ে অংশ নিয়ে গাড়িতে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে মানুষ হত্যা করলো ? মামলার বর্ণনা মতে ২০১৫ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে ওই ঘটনা ঘটে। সেবার আমার ছোট মেয়ে জেএসসি পরীক্ষার্থী ছিলো। আর বন্যা তো ছিলো তার স্বামীর বাড়ি গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদী গ্রামে। তিনি মিথ্যা ও বানোয়াট ঘটনায় তার মেয়েদের গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও জেলে পাঠানোর ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দাবি করেন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার নজমুল হুদার বিচার।