ট্যানারির মালিকদের ৩০ কোটি টাকা জরিমানা মওকুফ

Looks like you've blocked notifications!
এনটিভির পুরোনো ছবি

রাজধানীর হাজারীবাগের ট্যানারি কারখানার সব কার্যক্রম বন্ধ করে হলফনামা দাখিলের পর জরিমানা বাবদ ৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা মওকুফ করেছেন আপিল বিভাগ।

তবে ট্যানারি শ্রমিকদের কল্যাণে ১৫৪টি কারখানার মালিককে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দিতে হবে। শ্রম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এ টাকা জমা দিতে বলে হয়েছে।

আজ রোববার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও মির্জা হোসেইন হায়দার।

আদেশ দেওয়ার সময় আদালত বলেন, ‘বুড়িগঙ্গা রক্ষা করতে গিয়ে ট্যানারি সাভারে স্থানান্তর করা হচ্ছে। সেখানে গিয়ে ধলেশ্বরী নদী দূষণ করা চলবে না। এ বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যদি একটি নদী রক্ষা করতে গিয়ে আরেকটি দূষণ করা হয়, তাহলে কী লাভ?’

এর আগে গত ৩০ মার্চ আপিল বিভাগ ৬ এপ্রিলের মধ্যে ট্যানারি বন্ধ করে আদালতকে জানাতে বলেছিলেন। ট্যানারি কারখানা বন্ধ করে হলফনামা আকারে আদালতে জানানোর পর আপিল বিভাগ এই আদেশ দিলেন।

আদালতে ট্যানারির মালিকদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এবং রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

এর আগে গত ১৯ মার্চ ১৫৪ ট্যানারি মালিককে বকেয়া বাবদ ৩০ কোটি ৮৫ লাখ জরিমানা পরিশোধের আদেশ স্থগিত করে শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।

গত ২ মার্চ ১৫৪ ট্যানারি কারখানাকে বকেয়া বাবদ ৩০ কোটি ৮৫ লাখ জরিমানা দুই সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ দেন।

পরে ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ফিনিশড লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন হাইকোর্টে আবেদন করেন।

হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরিয়ে সাভারের হেমায়েতপুরে নিতে আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন না করায় গত বছরের ১৮ জুলাই ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ হাজার টাকা করে ধার্য করেছিলেন আপিল বিভাগ। শিল্প সচিবকে এই অর্থ আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল। সেই জরিমানা আদায়ে ব্যর্থতার কারণে শিল্প সচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়।

আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে হাজারীবাগে ট্যানারি প্রতিষ্ঠান চালু রাখায় ১৫৪ প্রতিষ্ঠানের মালিককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছিলেন হাইকোর্ট। গত বছরের ১৮ জুলাই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এর আগে গত বছরের ১৬ জুন বিচারপতি সৈয়দ মোহম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ ট্যানারি মালিকদের পরিবেশের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে প্রদানের নির্দেশ দেন।

পরে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ জুন হাইকোর্টের আদেশ ১৭ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

সেই হিসেবে আবেদনটি শুনানির জন্য আসলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের জরিমানার সিদ্ধান্ত ঠিক রেখে পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছিলেন।