ঘোড়াশাল ও পলাশ সার কারখানায় উৎপাদন বন্ধ
গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় পুনরায় বন্ধ হয়ে গেছে নরসিংদীর ঘোড়াশাল ও পলাশ সার কারখানার উৎপাদন। সারা দেশে গ্যাস সংকটের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ১৪২২ ও ৩০৫ মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি সার কারখানা।
কারখানা কর্তৃপক্ষ আজ মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে, সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) অধীনস্থ সার কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় সার কারখানা দুটিতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তিতাস কর্তৃপক্ষ।
সার কারখানা সূত্রে জানা যায়, ঘোড়াশাল সার কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ৪২২ মেট্রিক টন। পলাশ সার কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা ৩০৫ মেট্রিক টন। সরকারি সিদ্ধান্তে প্রতি বছর গ্রীষ্মকালে সার কারখানায় গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ রাখে তিতাস কর্তৃপক্ষ।
কারখানা দুটির উৎপাদন বিভাগ থেকে জানা যায়, এভাবে চলতে থাকলে চলতি বছরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে এবং দেশীয় ইউরিয়া সারের ঘাটতি দেখা দেবে।
পলাশ সার কারখানার সিবিএর সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, কারখানা দুটি কেপিআই মান-১ বিশিষ্ট উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন সার কারখানা। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে উৎপাদন বন্ধ থাকার কারণে কারখানার মূল্যবান যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ছাড়া উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন কারখানার বিভিন্ন ভেসেলের মূল্যবান ক্যাটালিস্ট সংরক্ষণ করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে। উৎপাদন বন্ধ থাকার কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় কারখানাগুলো আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। কারখানার গ্যাস প্রত্যাহারের কারণে উৎপাদন বন্ধ হলে শ্রমিক-কর্মচারীরা কর্মোদ্যম হারিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এভাবে একের পর এক কারখানা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় কারখানার স্থায়ী ব্যয় অব্যাহত থাকায় তারল্য সংকট দেখা দেয়। ফলে লাভজনক প্রতিষ্ঠান লোকসানের সম্মুখীন হয়।
এ বিষয়ে ঘোড়াশাল সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী অমর কুমার বিশ্বাস বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক গ্যাস প্রত্যাহার করে নেওয়ায় গতকাল রাত থেকে কারখানার উৎপাদন বন্ধ করা হয়। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত কারখানা চালু করা যাবে না। তবে কবে নাগাদ কারখানা চালু করা হবে তা জানাতে পারেননি তিনি।
সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিসিআইসি নিয়ন্ত্রণাধীন এই কারখানা দুটি গত বছরের ৩১ মার্চ গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিলে কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ প্রায় ছয় মাস বন্ধ থাকার পর ৬ অক্টোবর গ্যাস সংযোগ দেওয়া হলেও বেশ কয়েকবার বন্ধ হয়ে যায়। এ বছর ১৭ এপ্রিল সোমবার রাত থেকে গ্যাস সংযোগের জন্য পুনরায় বন্ধ করা হলো।