পায়ে লিখে বিউটির জিপিএ ৫-এর হ্যাটট্রিক!

Looks like you've blocked notifications!
পায়ে লিখে পিইসি ও জেএসসির পর এবার এসএসসিতেও জিপিএ ৫ পেয়েছে বিউটি। পুরোনো ছবি : এনটিভি

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছিল জয়পুরহাটের মেয়ে বিউটি আকতার। এবার এসএসসিতেও জিপিএ ৫ পেয়েছে সে। আর এই হ্যাটট্রিক জিপিএ ৫-এর অসামান্য অর্জন বিউটি করেছে পায়ে লিখে! জন্ম থেকেই যে তার দুটি হাত নেই!

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার শিবপুর গ্রামের মেয়ে বিউটি আকতার। আকলাশ শিবপুর-শ্যামপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চলতি বছর বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষা দেয় বিউটি। ক্ষেতলাল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ছিল বিউটির পরীক্ষার কেন্দ্র।

হাত নেই বিষয়টি কখনো ভাবায়নি বিউটিকে। নিজেকে কখনো প্রতিবন্ধী ভাবেনি। বরং অন্য শিক্ষার্থীদের মতোই সে নিয়মিত স্কুলে গিয়েছে। ক্লাস করেছে। নিয়মিত পড়াশোনা করেছে। পরীক্ষা দিয়েছে। একের পর এক অতিক্রম করেছে ১০টি ক্লাস। শুধু পরীক্ষায় অংশ নেওয়া নয়, পরীক্ষায় সবচেয়ে ভালো ফলও করেছে। এরই প্রমাণ প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ অর্জন। সাধারণ গ্রেডে বৃত্তিও পেয়েছে বিউটি।

শারীরিক বাধা তো দূরের কথা, পরিবারের আর্থিক অবস্থাও বিউটির অদম্য ইচ্ছেকে এতটুকু নড়িয়ে দিতে পারেনি।

বিউটির বাবা বায়েজিদ হোসেন একজন বর্গাচাষি। অভাব-অনটনের সংসার। অভাবের কারণে একসময় ভ্যান চালাতেন বায়েজিদ। বায়েজিদের দুই ছেলে মেয়ের মধ্যে বিউটি ছোট। এসব চিত্রও বিউটিকে থামিয়ে দিতে পারেনি। বরং মনোযোগ ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে জয় করে নিয়েছে সব প্রতিকূলতাকে।

বিউটি এখানেই থেমে যেতে চায় না। বিউটি শিক্ষক হতে চায়। আদর্শবান শিক্ষক হয়ে সমাজকে কিছু একটা দিতে চায় বিউটি।

বিউটির স্কুল ক্ষেতলালের আকলাশ শিবপুর-শ্যামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকামদ্দিন বলেন, ‘বিউটি আকতারের মধ্যে লেখাপড়ার প্রতি প্রবল ইচ্ছা লক্ষ্য করেছি। ও নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকত। নিজেকে কখনো প্রতিবন্ধী মনে করত না। প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সহযোগিতা পেলে বিউটি আকতারের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন নিশ্চয়ই পূরণ হবে।’