বৃহত্তর যশোরকে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন

Looks like you've blocked notifications!

বৃহত্তর যশোরকে বিভাগ ঘোষণা ও বাস্তবায়নের দাবিতে আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়। বৃহত্তর যশোর উন্নয়ন ও বিভাগ বাস্তবায়ন পরিষদের উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

বৃহত্তর যশোর উন্নয়ন ও বিভাগ বাস্তবায়ন পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও যশোর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট খান টিপু সুলতান। মাগুরা জেলা সমিতি, ঢাকার সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী শফিকুর রহমান শাকিলের সঞ্চালনায় সংগঠনের পক্ষ থেকে অবস্থানপত্র পাঠ করেন বৃহত্তর যশোর সমিতি, ঢাকার সাধারণ সম্পাদক কাজী রফিকুল ইসলাম।

দেড় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও সমাবেশে বৃহত্তর যশোরকে বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিকে সমর্থন করে বক্তব্য দেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ  সহসভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ সাহা, সহসভাপতি সাকুরা সাবের, নড়াইল জেলা সমিতি, ঢাকার সাধারণ সম্পাদক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হাসান ইকবাল, মাগুরা জেলা সমিতি, ঢাকার সিনিয়র সহসভাপতি  অ্যাডভোকেট কাজী রেজাউল হোসেন, মাগুরা জেলা সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিয়া মাসুদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আবদুল মজিদ, যশোর ইনফো ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন সিদ্দিকী মিশু, বৃহত্তর যশোর উন্নয়ন ও বিভাগ বাস্তবায়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান বিপুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাইদুজ্জামান তুষার, সরদার আবদুল গফ্ফার, মো. নাসিরুল ইসলাম নাসির, মো. রবিউল ইসলাম রিংকু, কোষাধ্যক্ষ মো. নাসির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল চৌধুরী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. উজ্জ্বল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক জাকারিয়া অর্ণব, সংগঠনের যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান খান প্রমুখ।

সভায় বক্তারা বলেন, যশোর শুধু বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে পুরাতন জেলাই নয়, সমগ্র ভারতের মধ্যে প্রথম জেলা। যশোর শুধু একটি জেলা নয়, যশোর একটি ইতিহাস, স্বাধীন বাংলার উৎপত্তিস্থল, মহান মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার। তাঁরা বলেন, আজকের বিভাগ খুলনা একসময়ে যশোরের একটি মহকুমা ছিল যা যশোর জেলা হওয়ার ৬১ বছর পর ১৮৪২ সালে মহকুমা এবং ১০০ বছর পর ১৮৮২ সালে জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৭৮১ সালে ইংরেজ সরকার কর্তৃক তৈরি যশোরের মানচিত্রে উল্লেখ আছে বৃহত্তর খুলনা ছাড়াও যশোরের অধীনে ছিল ভারতের ২৪ পরগনা, নদীয়া, বাংলাদেশের কুষ্টিয়া, পাবনা ও ফরিদপুরের অনেকাংশ। যশোরের বেনাপোল বন্দর থেকে সরকার বছরে যে তিন হাজার কোটি টাকার রাজস্ব পায় তা দিয়ে যশোরের উন্নয়ন না করে বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার উন্নয়ন করা হয়। যশোরের ফুল, মাছ, সবজিসহ অনেক কিছুই উৎপাদনে শীর্ষে অবস্থান করছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এই জেলাটি ভারত বিভক্তের পর থেকে শুধু অবহেলাই সহ্য করেছে। সবচেয়ে হতাশার, আজকের যশোরকে বিভাগ ঘোষণার জন্য দাবি জানাতে হচ্ছে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, এই দাবি শুধু আবেগের নয়, এটি সময়োপযোগী এবং অপরিহার্য। যেসব যুক্তিতে অন্যান্য জেলাকে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ব্যবস্থা হিসেবে বিভাগ করার পরিকল্পনা চলছে, সেসব যুক্তি ও যোগ্যতার সব কিছুই বিদ্যমান বৃহত্তর যশোরে আছে। সরকারের চলমান এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যশোরকে বিভাগ ঘোষণা বৃহত্তর যশোরবাসীর প্রাণের দাবি। মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে বৃহত্তর যশোরের চারটি জেলা যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ ও নড়াইলের পাশাপাশি চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুরকে অন্তর্ভুক্ত করে যশোরকে বিভাগ বাস্তবায়নের জোর দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) গাজী সাইফুর রহমান, ডিজিএম মোহসিন হোসাইন, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ মো. নজরুল ইসলাম, চারটি জেলা ও উপজেলা সমিতির নেতৃবৃন্দসহ বৃহত্তর যশোরের পাঁচ  শতাধিক ব্যক্তি।