জঙ্গি আস্তানা : ঝিনাইদহের তথ্য ঢাকায় মেলে না

Looks like you've blocked notifications!

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঝিনাইদহের ‘জঙ্গি আস্তানা’ থেকে একটি বস্তা উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বস্তার ভেতরে বিস্ফোরক দ্রব্য রয়েছে। এ ছাড়া দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা।

আজ রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য দেন মনিরুল। তিনি জানান, আহত পুলিশ কর্মকর্তার কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্তি উপকমিশনার (এডিসি) নাজমুল করিম। অন্যজন ঝিনাইদহ পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই)।  

তবে ঝিনাইদহ পুলিশ জানিয়েছে, দুই আস্তানার ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে আটটি হাতবোমা ও একটি পিস্তল। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই সদস্য আহত হয়েছেন। 

আজ ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘গত শুক্রবার শামীম (জোয়ার্দার) নামের এক জঙ্গিকে ঝিনাইদহ থেকে গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। শামীমের দেওয়া তথ্য মতে, ঝিনাইদহে শামীমের বাড়িতে মাটির নিচে এক বস্তা বিস্ফোরক রাখা আছে। আজ অভিযান চালিয়ে ওই বাড়ির মাটির নিচ থেকে বস্তাটি উদ্ধার করা হয়।’

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘শামীমের কাছ থেকে হঠাৎপাড়ার জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়া যায়। আজ ওই জঙ্গি আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই অভিযানে দুই জঙ্গি নিহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’ 

‘নিহত দুই জঙ্গির মধ্যে একজন সুইসাইডাল ভেস্টসহ পুলিশের দিকে এগিয়ে আসছিল। তাই পুলিশ তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশের গুলিতে বা নিজের বোমায় ওই জঙ্গি নিহত হয়েছেন। আরেক জঙ্গি বাড়ির ভেতরে নিহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে,’ বলেন মনিরুল।
 
টেররিজম ইউনিটের প্রধান বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওই অভিযানে (হঠাৎপাড়া) দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের একজন কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্তি উপকমিশনার (এডিসি) নাজমুল করিম। তাঁর হাত ভেঙে যাওয়ায় প্রথমে ঝিনাইদহে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাঁকে ঢাকায় আনা হয়েছে। আহত আরেকজন ঝিনাইদহ পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই)।’  

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঝিনাইদহের অভিযানে বজরাপুর গ্রামের হঠাৎপাড়ার বাড়ির মালিক জহিরুল ইসলাম ও তার ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা থেকে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল (বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট) ঝিনাইদহের পথে রওনা হয়েছে।’

পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, আজ সকালে মহেশপুর উপজেলার বজরাপুর গ্রামের হঠাৎপাড়ায়  অভিযান শুরু হলে সেখানে দুই ‘জঙ্গি’ নিহত হন। সেখানে এখনো অভিযান চলছে। আর সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামের যে বাড়িটি ‘জঙ্গি আস্তানা’ সন্দেহে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘিরে রেখেছিল, সেখানে প্রাথমিকভাবে অভিযান শেষ হয়েছে। 

ঝিনাইদহে ভাষ্য ভিন্ন
ঝিনাইদহের পুলিশ জানিয়েছে, লেবুতলা ও হঠাৎপাড়া থেকে মোট পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।

আজ দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) দিদার আহমেদ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘লেবুতলা গ্রামের ওই বাড়ির মালিক শরাফত জোয়ারদারের কলেজপড়ুয়া ছেলে শামীম জোয়ারদারকে আটক করা হয়েছে। তাঁর কাছ থেকে আটটি হাতবোমা ও একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।’  

ঝিনাইদহ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখও এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন, ঝিনাইদহে অভিযানকালে বজরাপুর গ্রামের হঠাৎপাড়ার বাড়ির মালিক জহিরুল ইসলাম, তাঁর কিশোর ছেলে জসীম উদ্দিনসহ (১২) মোট চারজনকে আটক করা হয়েছে। 

মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদুল কবীরও বলেন, সকালে উপজেলার বজরাপুর গ্রামে অভিযান শুরু হলে সেখানে দুই ‘জঙ্গি’ নিহত হন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই সদস্য আহত হন।