কুশিয়ারার পানিতে প্লাবিত নবীগঞ্জের দুই ইউনিয়ন
আবার বন্যায় প্লাবিত হয়েছে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দুটি ইউনিয়ন। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন সহস্রাধিক পরিবার।
স্থানীয় কুশিয়ারা নদীর পানিতে দীঘলবাক ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রবেশ করে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, স্কুল, মাদ্রাসা, দোকান, আউশ ধান, বিভিন্ন জাতের সবজি ক্ষেত, পুকুর ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন স্থানীয়রা।
এ ছাড়া ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ গ্রাম, নাদামপুর ও পাঠানহাটি গ্রামের শতাধিক পরিবার একই অবস্থায় রয়েছে। কুশিয়ারা নদীতে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি নড়খাই নদী দিয়ে প্রবেশ করায় দুটি ইউনিয়নের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়।
অন্যদিকে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের বেশ কয়েকটি ডাইক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। যে কোনো সময় এসব ডাইক ভেঙে নবীগঞ্জ উপজেলার আরো ১০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে হুমকির মুখে পড়তে পারে দেশের বৃহত্তম গ্যাস কূপ বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড ও বিবিয়ানা পাওয়ার প্লান্ট। ডাইক ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন স্থানীয় লোকজন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দীঘলবাক বাজারের অন্তত শতাধিক দোকানে পানি ঢুকে গেছে। দীঘলবাক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলজার মিয়া বলেন, বর্ষার মৌসুমে তাঁদের শতাধিক দোকান পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় দু-তিন মাস দোকান বন্ধ রাখতে হয়। ফলে অনেক ব্যবসায়ীর পরিবারকেই প্রায় না খেয়ে দিন কাটাতে হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মহসিন মিয়া জানান, দীঘলবাক এলাকার প্রায় ৯৫ শতাংশ ঘরবাড়ি পানিবন্দি অবস্থায় আছে। কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার ওপর প্রবাহিত হওয়ায় এসব এলাকার বাসিন্দাদের মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারি কোনো ধরনের ত্রাণ পাননি বলে অভিযোগ করেন পানিবন্দি মানুষরা। তার ওপর রাত হলেই শুরু হয় সাপসহ অন্য পোকামাকড়ের আতঙ্ক। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে সরকারি সহায়তারও দাবি জানিয়েছেন।
দীঘলবাক ইউপির চেয়ারম্যান আবু সাঈদ এরলা মিয়া বলেন, সাম্প্রতিক বন্যায় দীঘলবাকের অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ডাইকের বাইরের গ্রামগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা না নিলে দীঘলবাক বিলীন হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। এরই মধ্যে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেছেন বলেও জানান চেয়ারম্যান।
প্রায় সাতদিন ধরে ওই এলাকার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটালেও বিষয়টি সম্পর্কে জানতেন না নবীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজিনা সারোয়ার। টেলিফোনে এনটিভি অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি আগে কেউ জানায়নি, তাই জানতাম না। কিছুক্ষণ আগে জেনেছি এবং সরেজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’