খাগড়াছড়িতে নারী সংগঠকদের সঙ্গে পুলিশ-বিজিবির সংঘর্ষ

Looks like you've blocked notifications!

খাগড়াছড়িতে হিল উইমেনস ফেডারেশনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষ হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, ওই ঘটনায় তাঁদের নয় সদস্য আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে হিল উইমেনস ফেডারেশন দাবি করেছে, তাঁদের ২৫ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার সকালে শহরের স্বনির্ভর এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। হিল উইমেনস ফেডারেশন হচ্ছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সমর্থিত সংগঠন।

জানা যায়, সকাল ১০টার দিকে শহরের স্বনির্ভর এলাকায় হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেষ্টা করে। এ সময় পূর্ব অনুমতি না থাকার অভিযোগ করে পুলিশ মিছিলে বাধা দেয়। 

অন্যদিকে ওই সংগঠনের নেতাকর্মীরাও মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এরপরই শুরু হয় সংঘর্ষ, ধাওয়া ও পাল্টাধাওয়া।

এ সময় পুলিশ গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সহায়তা চাইলে বিজিবির সদস্যরা এসে যোগ দেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরাও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে বিজিবির একজন হাবিলদারসহ ৩ বিজিবি ও ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়। 

৩২ বিজিবি অধিনায়ক হাসানুজ্জামান চৌধুরী জানান, পূর্ব কোনো কর্মসূচিবিহীন হঠাৎ বেলা ১০টার দিকে স্বনির্ভর বাজারে সমাবেশ করতে চেষ্টা করে ইউপিডিএফ ও হিল উইমেনস ফেডারেশন। এ সময় পুলিশ বাধা দেয়। কিন্তু পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে বিজিবির কাছে সহযোগিতা চায়। বিজিবি পুলিশের সহযোগিতা করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছা মাত্র সমবেত ইউপিডিএফ ও হিল উইমেনস ফেডারেশন কর্মীরা আক্রমণ করে। তাঁরা এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল ও গুলতি ছুড়তে থাকে। এ সময় ইটপাটকেল ও গুলতির আঘাতে তিনজন বিজিবিসহ পুলিশের বেশ কয়েকজন আহত হয়।

খাগড়াছড়ি সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল আল মাসুদ জানান, হামলায় এসআই হায়াতসহ ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। ওই হামলায় তিনিও আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। এ ঘটনায় হিল উইমেনস ফেডারেশনের ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে। হামলারকারীদের আটকের অভিযান চলছে। 
এ ব্যাপারে হিল উইমেনস ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক নীতি শোভা চাকমা দাবি করেন, পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে হামলা করে পুলিশ ও বিজিবি। তিনি জানান, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী মিছিল চলছিল। পুলিশ এসে তাতে বাধা দেয়। ব্যানার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ মিছিলে নারীদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় ফেডারেশনের ২৫ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানান নীতি শোভা চাকমা। 

এদিকে, ঘটনার পর মহালছড়ি, মাইসছড়ি, পানছড়ি এলাকায় যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাহেন্দ্র ও মোটর সাইকেলসহ প্রায় ২৫টি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। এর মধ্যে মানিকছড়িতে একটি পিকআপ ভ্যান ও পানছড়িতে দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় জেলার অভ্যন্তরে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা। যানবাহন ভাঙচুরের প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি শহরে মিছিলও বের করে শ্রমিকরা। তবে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। তবে দূরপাল্লার গাড়ি ওই জেলায় আসা-যাওয়া করছে।  

এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেক মো. আবদুল হান্নান জানান, অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় পরিবহন শ্রমিকদের মিছিলে বাধা দেওয়া হয়।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় জেলার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে ওসি আবদুল হান্নান।