লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড

‘দোয়া করেন, আমাদের যেন কষ্টে মৃত্যু না হয়’

Looks like you've blocked notifications!
লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৌলভীবাজারের একই পরিবারের পাঁচ সদস্য নিখোঁজ আছেন। ছবি : সংগৃহীত

লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৌলভীবাজারের একই পরিবারের পাঁচ সদস্য নিখোঁজ আছেন। স্বজনরা তাঁদের খোঁজ চাইছেন। বেঁচে না থাকলে তাঁদের লাশ যেন দেশে আনার ব্যবস্থা করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার নিখোঁজ প্রবাসী কমরু মিয়ার মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে জানা যায় ওই পরিবার সম্পর্কে।

স্বজনরা জানালেন, ৯০ বছর বয়সী কমর উদ্দিন কমরু মিয়া বছর খানেক ধরে সপরিবারে গ্রেনফেল টাওয়ারের একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। গত মঙ্গলবার রাতে ওই ভবনে আগুন লাগার পর থেকে খোঁজ মিলছে না কমরু মিয়ার স্ত্রী, সন্তানসহ পরিবারের পাঁচ সদস্যের।

নিখোঁজ প্রবাসী কমর উদ্দিন কমরু মিয়ার বাড়ি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আখাইলকুড়া ইউনিয়নের খৈসাউরা গ্রামে। কমরু মিয়ার দুই স্ত্রীর মধ্যে প্রথম স্ত্রী জুলিখা বিবি (৭৫) তাঁর তিন সন্তান সুজন মিয়া (৫০), মিনা বেগম (৫২) ও জোসনা বেগমকে (৬০) নিয়ে দেশে থাকেন।

কমরু মিয়া দ্বিতীয় স্ত্রী রাবেয়া বেগম ও তিন সন্তান আবদুল হামিদ (৩২), আবদুল হানিফ (২৫) ও হুসনা আক্তার তানিমাকে (২২) নিয়ে লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারের ২৪ তলা ভবনের ১৭ ও ১৮ তলায় থাকতেন। বড় ছেলে আবদুল হাকিম (৩৫) বিয়ে করায় নববধূকে নিয়ে পাশের ভবনে থাকতেন।

মঙ্গলবার রাতে গ্রেনফেল টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে স্বজনদের খোঁজ পাচ্ছেন না দেশে বসবাসরত কমরু মিয়ার পরিবার। তাঁরা জানান, অন্য একটি ভবনে থাকার কারণে সন্তানদের মধ্যে বেঁচে আছেন শুধু আবদুল হাকিম। তিনি দেশে অবস্থানরত পরিবারের অন্যদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখছেন।

কমরু মিয়া, তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ও অপর তিন সন্তান আদৌ বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেছেন না পরিবারের সদস্যরা। তাই খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে দিয়ে সময় পার করছেন তাঁরা।

দেশে থাকা কমরু মিয়া ও তাঁর প্রথম স্ত্রীর সন্তান সুজন মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, আমাদের স্বজনের সন্ধান চাই। তাঁরা কী অবস্থায় আছেন, আমরা জানতে চাই। যদি তাঁরা মারা যান তাহলে তাঁদের লাশ যেন দেশে আনার ব্যবস্থা করা হয়।’

লন্ডনে অবস্থানরত কমরু মিয়ার ছেলে আবদুল হাকিম বাংলাদেশে অবস্থানকারী ভাই সুজন মিয়াকে জানান, রাত আড়াইটার দিকে বোন তানিমার সঙ্গে তাঁর কথা হয়। সে বলছিল, ‘আমরা সবাই এখন বাথরুমে, আমাদের বের হওয়ার কোনো উপায় নেই, দোয়া করেন আমাদের যেন কষ্টে মৃত্যু না হয়। পারলে আমাদের উদ্ধার করেন।’ তাঁর আকুতি এখনো আমার কানে ভাসে। ওই ফোন কলের পর তাদের কারো মোবাইলে রাত আড়াইটার পর থেকে আর যোগাযোগ করা যায়নি।

সুজন মিয়া জানান, আগামী ২৯ জুলাই লন্ডনে অবস্থানকারী বোন তানিমার বিয়ে হওয়ার কথা। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে এসে ছিলেন তনিমা। ঈদের পর তাঁদের দেশে আসার কথা ছিল।