পরিবেশের সুরক্ষায় নাটোরের সদর উপজেলায় নতুন একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। গতকাল শুক্রবার যাত্রা শুরু হয় ‘শাখী’ নামের সংগঠনটির।

সদর উপজেলার কানাইখালী মহল্লার স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা গড়ে তুলেছেন সংগঠনটি। ‘প্রকৃতি ও মানুষের সাথে’ স্লোগানে যাত্রা করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি আগামী ২০২০ সালের মধ্যে অন্তত এক লাখ গাছ লাগার পরিকল্পনা করেছে।

আজ শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, নাটোর সদর উপজেলার নদী ও জলাশয়ে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করবেন সংগঠনটির সদস্যরা। এ ছাড়া অবৈধ দখলের কারণে মৃতপ্রায় নদীগুলো আবারও চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রকৃতির জীবনদায়ী জলাশয়গুলোতে আবার প্রাণ সঞ্চার করা ও সভা-সমাবেশের মাধ্যমে দখলমুক্ত রাখার দাবি নিয়ে সরব থাকতে চায় ‘শাখী’।

পরিবেশ সংরক্ষণের পাশাপাশি সমাজকল্যাণ ও মানবতার সেবায় অঙ্গীকার নিয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান, শিক্ষা প্রসারে বিনামূল্যে ইংরেজি ভাষা প্রশিক্ষণের মতো সামাজিক ও মানবিক কর্মসূচি গ্রহণ করবে সংগঠনটি।

নাটোরের কানাইখালী মহল্লায় আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংগঠনটির পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়ার উদ্দেশে ১৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ‘শাখী’র প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন এস এম জাকারিয়া বুলবুল।

কমিটিতে সাতজনকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাতজনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান সনি, এস এম বদরুদ্দোজা রুবেল, আজিজুল হাসান তুষার, হাসানুল্লাহ হীরা, হাসিবুল ইসলাম হীরক, সংকেত বিন খালিদ ও সোহান রাজ। যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন রেজাউল ইসলাম রনি, নূর আল-আমিন সাদ, পিয়াস আহমেদ, আনোয়ারা ইসলাম, তাজমিনা লিজা, ইমরান হোসেন বাঁধন ও সাব্বির আহমেদ সোহাগ।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিক, শিক্ষক, স্থানীয় সুশীলসমাজের প্রতিনিধিসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

সংগঠনের নামকরণ

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব নিয়ে বিচলিত সমগ্র বিশ্ব। পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বাড়ছে প্রতিবছর। হুমকির মুখে পৃথিবী নামক এই গ্রহটির প্রাণীরা। বাংলাদেশেও এর কোনো ব্যতিক্রম নয়। বরং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে, বাংলাদেশ তার অন্যতম। বিজ্ঞানীরা এরই মধ্যে সাবধান করেছেন, প্রতিনিয়ত বর্ধিষ্ণু সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা অদূর ভবিষ্যতে তলিয়ে দিতে পারে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল। সৃষ্টি করতে পারে লাখ লাখ ‘ক্লাইমেট রিফিউজি’। এই প্রেক্ষাপটে একমাত্র ব্যাপকভাবে গাছ লাগানো, সামাজিক বনায়ন ও পরিবেশবিষয়ক গণসচেতনতা সৃষ্টির মতো উদ্যোগই পারে উদ্ভূত পরিস্থিতির লাগাম টেনে ধরতে। সে কারণেই এই সংগঠনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘শাখী’, যা বৃক্ষের সমার্থক।