পঞ্চগড়ে চার মাস ধরে আদালত বর্জন আইনজীবীদের
পঞ্চগড়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে সদরের জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ এ জি এম মনিরুল হাসান সরকারের আদালত প্রায় চার মাস ধরে (১০৭ দিন) বর্জন করে আসছেন আইনজীবীরা। এতে প্রায় চার হাজার দেওয়ানি মামলার বিচারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
জজ মনিরুল হাসান একই সঙ্গে তেঁতুলিয়া, আটোয়ারী ও দেবীগঞ্জ উপজেলার সহকারী জজ হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। আদালত বর্জনের কারণে চারটি উপজেলার দেওয়ানি মামলার কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
গত ৮ মার্চ আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির বিশেষ বর্ধিত সভা শেষে আদালত বর্জনের এই ঘোষণা দেওয়া হয়। সেই থেকে আদালত বর্জন অব্যাহত রয়েছে। আইনজীবীদের দাবি, অবিলম্বে এই বিচারককে স্থানান্তর করা হোক।
পঞ্চগড় জেলা আইনজীবী সমিতি জানায়, পঞ্চগড় সদরের জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ এ জি এম মনিরুল হাসান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আদালতে বিভিন্ন সময় জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক ও অবিচারকসুলভ আচরণ করেন। গত ৭ মার্চ জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুব উল আলমের সঙ্গে অবিচারকসুলভ, অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। এ নিয়ে পরদিন ৮ মার্চ দুপুরে বিশেষ বর্ধিত সভা আহ্বান করে জেলা আইনজীবী সমিতি। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ এ জি এম মনিরুল হাসানের অপসারণের দাবিসহ তাঁর আদালত অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজল বলেন, ‘এ জি এম মনিরুল হাসান আদালতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুব উল আলমের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক, অবিচারক সুলভ আচরণ করেছেন। আমরা এই বিচারকের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তার আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি। এ ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে অবহিত করেছি।’
একটি মামলার বিবাদী মজিবর রহমান আদালত চত্বরে বলেন, ‘চার মাস ধরে খালি ঘুরছি। কোনো আইনজীবী আদালতে যাচ্ছেন না। খালি তারিখ পড়ছে।’
সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘আইনজীবীদের দীর্ঘদিন আদালত বর্জনের ফলে বিচারপ্রার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দেওয়ানি মামলার কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। অবিলম্বে এ অবস্থার অবসান হওয়া দরকার।’
এ ব্যাপারে জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ এ জি এম মনিরুল হাসান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।