হরিধানের উদ্ভাবক হরিপদ কাপালী আর নেই

Looks like you've blocked notifications!
হরিধানের উদ্ভাবক হরিপদ কাপালী গতকাল বুধবার গভীর রাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ছবি : এনটিভি

হরিধানের উদ্ভাবক হরিপদ কাপালী আর নেই।

গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১টা ১০ মিনিটে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়নের আসাননগর গ্রামের নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। তিনি স্ত্রী সুনিতা রানী কাপালী (৭৫) ও পালিত ছেলে রূপকুমারকে রেখে গেছেন। তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।

হরিপদ কাপালীর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এলাকার জনপ্রতিনিধি ছাড়াও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক শাহ মুহাম্মদ আকরামুল হক, সাধুহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজির উদ্দিনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শেষবারের মতো বিনয়ী ও মিশুক হরিপদ কাপালীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। পরে তাঁর শেষ কৃত্য সম্পন্ন হয়।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. খান মো. মনিরুজ্জামান হরিপদ কাপালীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তাঁর মৃত্যুকে কৃষি বিভাগ তার পরিবারের একজন সদস্যকে হারিয়েছে। তিনি ছিলেন একজন আদর্শ মানুষ, কৃষক।

হরিপদ কাপালী ১৯২২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আসাননগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৬ সালে তিনি উচ্চফলনশীল একটি ধানের জাত উদ্ভাবন করেন। পরে তাঁর নাম অনুসারেই ধানটির নাম রাখা হয় ‘হরিধান’। অক্ষরজ্ঞানহীন এই কৃষক কৃষিতে অনন্য অবদান রাখায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাঁকে সম্মাননা জানায়, পুরস্কৃত করে। সরকার তাঁর জন্য একটি বাড়ি তৈরি করে দেয়। এলাকার মানুষ তাঁকে নিয়ে গর্ব করতেন।

‘হরিধান’ উদ্ভাবনের পরই মূলত হরিপদ কাপালীর নাম গণমাধ্যমে আসে এবং সারা দেশে তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন। পাশাপাশি তিনি কৃষিসংশ্লিষ্ট গবেষকদেরও নজর কাড়েন। মানুষ তাঁর ধান সম্পর্কে আগ্রহী হন এবং এ ধানের চাষ শুরু করেন। তবে এখন আরো উচ্চফলনশীল ধান বাজারে আসায় ‘হরিধানের’ চাষ তুলনামূলকভাবে কমে গেছে।