সীতাকুণ্ডে অজ্ঞাত রোগে ৯ শিশুর মৃত্যু, আতংক

Looks like you've blocked notifications!

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অজ্ঞাত রোগে একই এলাকার নয় শিশু মারা গেছে। এক সপ্তাহ ধরে এ রোগ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েছে লোকজন।

খবর পেয়ে প্রশাসন আক্রান্ত আরো ৩৬ শিশুকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করেছে। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, এটি একটি অজ্ঞাত রোগ। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যাবে এ রোগের উৎস।

সীতাকুণ্ডের বারআউলিয়া মধ্য সোনাছড়ি পাহাড়ি এলাকায় বাস করে শতাধিক ত্রিপুরা পরিবার। সপ্তাহখানেক ধরে এ এলাকার শিশুরা ভুগছে অজ্ঞাত রোগে। এর মধ্যে শিশুদের জ্বর, শরীর ব্যথা, রক্তপড়া, কাশিসহ শরীরের দেখা দিয়েছে নানা উপসর্গ। এর মধ্যে আজ বুধবার একই দিনে মারা গেছে চার শিশু। দুদিনে মারা যায় পাঁচজন। পরপর শিশু মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আতংক শুরু হয়। তবে কী কারণে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে তা কেউ বলতে পারছে না।

প্রশাসন বলছে, আজ চার শিশু মারা যাওয়ার পর তারা খবর পেয়েছেন। এর কয়েকদিন আগে থেকে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে আরো বেশ কিছু শিশু। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী  কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, ‘ডায়াগনসিস (রোগ নির্ণয়) হওয়ার পর আসলে বলা যাবে কী কারণে বাচ্চাগুলোর এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। আমরা প্রশাসনিকভাবে এই এলাকার সংক্রমণটা আশপাশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে; আমি ইতিমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছি। বাচ্চারা যে স্কুলে পড়াশুনা করে সেই স্কুলগুলোতে যেতে বাচ্চাদের বিরত করে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা ডা. এস এম নুরুল করিম বলেন, ‘প্রথমে জ্বর আসে। জ্বর আসার পরে, দুই-তিন পরে বাচ্চার গায়ে র‍্যাশ ওঠে, লালচে দাগ। এরপর আস্তে আস্তে একটু শ্বাসকষ্ট, কাশি শুরু হয়। এরপর পায়খানা, সাথে সাথে রক্ত যেতে পারে। নাক দিয়ে একটু রক্ত পড়তে পারে। আলটিমেটলি খিঁচুনি ও শ্বাসকষ্ট—এই দুইটা মিলে বাচ্চাগুলো মারা যাচ্ছে। ঢাকা থেকে টিম আসছে, স্যামপ্লিং (নমুনা) পরীক্ষা করে তারপর বলা যাবে কোন ধরনের রোগ।’

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, ‘শিশুরাই আক্রান্ত হচ্ছে। ছোট্ট বাচ্চা থেকে ১০ বছরের মধ্যে, পাঁচ-ছয় বছরের বেশি। এই বাচ্চাগুলো যাতে অন্যান্য এলাকায় না যায় আপাতত স্কুল-টিস্কুলে (যেন না যায়)। ইউএনও মহোদয়ের সঙ্গে আলাপ করেছি। যেহেতু রোগটা এখনো ডায়াগনসিস হয় নাই। আপাতত দুই-চারদিন বা কয়দিন একটু আইসোলেশনে (আলাদা)  থাকুক। আমরা আপাতত অজ্ঞাত রোগ হিসেবেই চালাচ্ছি। এটা বিশাল একটা নতুন, আমাদের অভিজ্ঞতায় এ ধরনের (রোগে) পড়ি নাই।’

সিভিল সার্জন আরো বলেন, ‘আমাদের কাজ হলো অবশ্যই সব আক্রান্ত বাচ্চাকে হসপিটালাইজড করা। এর মধ্যে ঢাকা থেকে টিম আসতেছে। তারা এসে বাচ্চাগুলোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। জায়গাগুলো দেখবে সার্ভে করে। তারা ঘোষণা দেবে কী রোগে কী হলো। আমাদের আপাতত বলছে যে, অজ্ঞাত রোগে চারদিনে নয়টা শিশু মারা গেছে। আমরা সব ব্যবস্থাই নিচ্ছি।’

জানা গেছে, অজ্ঞাত রোগে আক্রান্তের পর স্থানীয় লোকজন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে না গিয়ে হোমিও চিকিৎসাসহ স্থানীয়ভাবে ঝাড়-ফুঁকে চিকিৎসা নিয়েছে।