সাতক্ষীরায় মুণ্ডা পরিবারের ওপর হামলার বিচার দাবি
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার জেলেখালী গ্রামের আদিবাসী মুণ্ডা পরিবারের ওপর হামলার বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। আজ রোববার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করে এই দাবি জানান মুণ্ডা সম্প্রদায়ের লোকজন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে স্বপন মুণ্ডা বলেন, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে আটটি ইউনিয়নে আদিবাসী মুণ্ডারা বসবাস করে। এর মধ্যে জেলেখালী গ্রামের মুণ্ডাপাড়ায় তিন বিঘা ৭২ শতক জমিতে ১৩টি আদিবাসী মুণ্ডা পরিবার দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। কিন্তু গ্রামের কিছু লোক তাঁদের সেখান থেকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা করছে।
স্বপন বলেন, বসতভিটা ও ছাগলকে কেন্দ্র করে গত ৮ জুলাই জেলেখালী গ্রামের নূর ইসলাম কাগজী, তাঁর ছেলে আলমগীরসহ কয়েকজন ব্যক্তি সুরঞ্জন মুণ্ডার বাড়িতে ঢুকে তাঁর স্ত্রী মিনা রানী মুণ্ডাকে (৩৫) বেদম মারপিট করে। তাঁকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তারা এখন মিনা রানী মুণ্ডাসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকিধমকি দিচ্ছে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এর আগেও একইভাবে তাঁদের ওপর হামলা করেছে একটি চক্র। তিনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মুণ্ডা পরিবার হওয়ায় তারা যথাযথ ন্যায় বিচার ও আইনি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না। তারাও অন্য সম্প্রদায়ের লোকদের মতো রাষ্ট্রের সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সমাজে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকতে চায়।
জেলেখালী গ্রামের মুণ্ডা পরিবারের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের করে বিচারের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে স্বপন মুণ্ডা বলেন, আদিবাসীদের আর কেউ যেন হামলা ও নির্যাতনের শিকার না হয়। তিনি আহত মিনা রানীর চিকিৎসা খরচ মেটানোরও দাবি জানান।
পরে জেলেখালী মুণ্ডাপাড়ার আদিবাসীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আদিবাসী ছাত্র ও যুব পরিষদ সাতক্ষীরা জেলা শাখার পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে মানববন্ধন করা হয়। এতে অংশ নেন পরিতোষ মুণ্ডা, নিরাপদ মুণ্ডা, আল্লাদী মুণ্ডা, মন্টু মুণ্ডা, কালিবালা, বুলুরানী, জানামনি, গৌরপদ মুণ্ডাসহ জেলেখালী মুণ্ডাপাড়ার আদিবাসীরা। মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন বেসরকারি সংস্থা স্বদেশের নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত।