রেলস্টেশনে হামলার অভিযোগ, ‘বাড়তি টাকায় টিকেট বিক্রি’

Looks like you've blocked notifications!

কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের টিকেট কাউন্টারে একদল দুর্বৃত্তের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে আহত হয়েছেন বুকিং সহকারী নজরুল ইসলাম।

গতকাল বৃস্পতিবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন ভৈরব বাজার রেলওয়ে জংশনের সিনিয়র বুকিং সহকারী কিশোর নারায়ণ চৌধুরী।

তবে সংশ্লিষ্টরা বুকিং সহকারীর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে টিকেট বিক্রির অভিযোগ করেছেন।

এদিকে আহত বুকিং সহকারী নজরুল ইসলামের স্ত্রী শাহিদা স্মৃতি জানান, সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত তাঁর স্বামীকে নিয়ে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে আছেন। তাঁর স্বামী কানে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। বিষয়টি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। স্বামীর প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বিষয়টি নিয়ে তিনি আইনি প্রক্রিয়ায় যাবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আহত বুকিং সহকারী নজরুল ইসলাম জানান, তিনি গতকাল রাত সাড়ে ৮টায় ডিউটি শেষে টিকেট বিক্রির টাকার হিসাব মেলানোর সময় মো. দুলাল মিয়া নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে চার-পাঁচজনের একদল সন্ত্রাসী অতর্কিতে টিকেট কাউন্টারে ঢুকে তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। একপর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ওই দুর্বৃত্তরা তাঁর কাছে থাকা ৫১ হাজারেরও কিছু বেশি টাকা লুটে নিয়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে, বিষয়টিকে অত্যন্ত ন্যক্কারজনক আখ্যা দিয়ে ভৈরব রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সভাপতি আবদুস সালাম জানান, ঘটনাটি অবগত হয়ে এরই মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তাদের প্রাথমিক তদন্ত শেষ হওয়ার পর তারা আন্দোলনের বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

এ বিষয়ে দুলাল মিয়া মোবাইল ফোনে জানান, গতকাল রাতে পৌরসভার একজন প্রকৌশলীসহ দুই আত্মীয়কে নিয়ে তিনি দুটি টিকেটের জন্য কাউন্টারে যান। টিকেট চাওয়ার পর তাঁদের জানানো হয় আসন ফাঁকা নেই।  স্ট্যান্ডিং টিকেট নিতে হবে। এ কথা শুনে তাঁরা ফিরে আসেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই তাঁদের ওই আত্মীয় অতিরিক্ত টাকা দিয়ে টিকেট কিনে আনেন। বিষয়টি তৎক্ষণাৎ কিশোর নারায়ণ চৌধুরীকে জানালে তিনি বুকিং সহকারী নজরুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি প্রতি টিকেটে ২০ টাকা অতিরিক্ত আদায়ের কথা স্বীকার করেন। পরে এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে বচসা এবং একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

দুলাল মিয়া আরো জানান, তিনি স্থানীয়ভাবে একজন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার। দুর্বৃত্তপনা বা সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটানোর কোনো ইতিহাস তাঁর জীবনে নেই। টাকা লুটের বিষয়টিকে তিনি ডাহা মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক আখ্যা দিয়ে তিনি সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।

এদিকে, হামলার বিষয়টি নিয়ে এই প্রতিবেদক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাৎক্ষণিক স্ট্যাটাস দিলে সেখানে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়। অসংখ্য ফেসবুকার তাঁদের কমেন্টসের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানান। তাঁরা হামলার বিষয়টিকে ভৈরব টিকেট কাউন্টারে দীর্ঘদিনের অনিয়মের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখেন। তাঁরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের টিকেট কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি প্রক্রিয়া শুরুর দাবি জানান।