হাত কেটে নিয়ে উল্লাস করতে করতে গেল প্রতিপক্ষ!

Looks like you've blocked notifications!

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বাদশা (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে তার প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় তারা তার দুই পায়ের রগ কাটে। পরে বাম হাত কনুই পর্যন্ত কেটে উল্লাস করতে করতে চলে যায় বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।

খবর পেয়ে বাদশার স্বজনরা তাঁকে উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠান। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. কে এন এম জাহাঙ্গীর।

বাদশা ভৈরবের শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। তিনি স্থানীয়ভাবে হাজি জয়নালের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। এক সময় নৌপথে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন জানা গেছে। প্রায় ১০ বছর আগে ডাকাতি ছেড়ে দিয়ে স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। পরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করে সদস্য হিসেবেও নির্বাচিত হন। দু-তিন বছর ধরে হাজি জয়নাল বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি তাঁর সমর্থকদের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।

স্থানীয় লোকজন জানায়, আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে বাদশা মিয়া স্থানীয় ভবানীপুর বাজার থেকে সিএনজি অটোরিকশাযোগে ভৈরব যাচ্ছিলেন। পথে সুলেমানপুর এলাকার ব্রিজের মাথায় পৌঁছলে ১০-১৫ জনের একদল দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্রের মুখে তাঁকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে নেয়। পরে রাস্তার পাশের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে ধারালো অস্ত্রের উপর্যুপরি আঘাতে তাকে জখম করে। এ সময় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হামলাকারীরা তাঁর দুই পায়ের রগ কাটে। পরে কনুই পর্যন্ত বাম হাত কেটে উল্লাস করতে করতে চলে যায়।

নাম প্রকাশের অপারগতা জানিয়ে ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ভবানীপুর গ্রামের আলমের বাড়ির পাশু অহিদ (২৫), সেলিম (২৪), আলমগীর (২০),নজরুল (২০), রাজু (১৮), রুবেল (২২), আল আমিনসহ (২০) ১০-১৫ জন ছেলে বাদশাকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে নেয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জয়নুদ্দিন সরকার জানান, বাদশার ওপর আজকের হামলার সঙ্গে জয়নাল ও হুমায়ুনের পক্ষের পূর্ববিরোধের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটি একটি ভিন্ন বিষয় হতে পারে। কারণ হিসেবে তিনি জানান, ভৈরব পৌরসভার মেয়র ফখরুল আলম আক্কাছের মধ্যস্থতায় ওই দুই পক্ষের সালিস মীমাংসার পর থেকে মিলে-মিশে বসবাস করছে। একের বাড়িতে অন্যে দাওয়াত-জিয়াফতও চলছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত চার-পাঁচদিন আগে বাদশার ছেলে আরমানকে (১৪) মারধর করে আলমের বাড়ির কিছু লোকজন। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ তৈরি হলে স্থানীয় মুরুব্বিরা মিটিয়ে দেন।

এদিকে, বাদশার পরিবারের অভিযোগ, প্রতিপক্ষ হুমায়ুনের সমর্থক মেরাজ, জমির, সেলিম, হেলু ও নজরুলসহ অন্যান্য লোকজন এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হুমায়ুন জানান, আগের বিরোধের সঙ্গে এ ঘটনার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। গ্রামের ঝগড়ার সময় যে পক্ষ তৈরি হয়েছিল, এখন এর কোনো অস্তিত্ব নেই। তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা জানিয়ে দোষীদের বিচার দাবি করেন।