প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ
রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিসিসি)। একসঙ্গে দেড় লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়ের জন্য তৈরি করা হয়েছে দুই লাখ ৬০ হাজার বর্গফুট আয়তনের বিশাল প্যান্ডেল।
প্রতিবারের মতো এবারও সাধারণ মানুষের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, বিচারপতি ও কূটনীতিকসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এক কাতারে নামাজ আদায় করবেন। অসুস্থ থাকায় প্রধান জামাতের ইমামতি করতে পারছেন না বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব মাওলানা সালাউদ্দিন। তাঁর পরিবর্তে নামাজ পড়াবেন চট্টগ্রাম জামিয়াতুল ফালাহ মসজিদের খতিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আল কাদেরী।
মাঠের নিরাপত্তা রক্ষার্থে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) টিভিসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশগুলো ময়দানের বিভিন্ন জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে। বৃষ্টিতে যাতে সমস্যা না হয়; সে জন্য মাঠের ওপর মোটা ত্রিপলের ছাউনি টানানো হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য রাখা হয়েছে ড্রেনেজ ব্যবস্থা। থাকছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জাতীয় ঈদগাহে নারীদের নামাজ আদায়ের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেখানে একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারী নামাজ আদায় করতে পারবেন। নারীদের জন্য পৃথক গেটসহ মোট তিনটি গেট করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির জন্য সুপ্রিম কোর্টের গেটটি সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী আবুল হাসনাত এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ঈদ জামাতের জন্য যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হয়েছে। একসঙ্গে ২০০ মানুষ অজু করতে পারবে। এ ছাড়া ভিআইপিদের জন্য পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ টয়লেট রাখা হয়েছে। অন্যরা হাইকোর্টের মাজারে টয়লেট ব্যবহার করতে পারবে। জেনারেটর-মাইকসহ যা যা প্রয়োজন তার সব কিছুই রাখা হয়েছে। তবে শেষ মুহূর্তে আবহাওয়া খুব বেশি বৈরী হলে নামাজের স্থান পরিবর্তন করে বায়তুল মোকাররম মসজিদে স্থানান্তর করার বিষয়টিও আমাদের মাথায় আছে।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্রে আরো জানা গেছে, ঈদের নামাজে নাশকতা ঠেকাতে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে স্থানীয় সময়সূচি অনুযায়ী মহানগরীর ৯০টি ওয়ার্ডে মোট ৩৬১টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুতির দায়িত্বে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পিয়ারু সন্সের ব্যবস্থাপক মোজাম্মেল হক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, অন্যান্য বছরে ১০ রমজানের পর থেকে ময়দান প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়। এবার ১ রমজান থেকে কাজ শুরু করায় অনায়াসে সব কাজ গুছিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এবার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ৮০০টি ফ্যান রাখা হবে। এর মধ্যে ভিআইপিদের জন্য ১০০টি স্ট্যান্ড ফ্যান বসানো হয়েছে। রাষ্ট্রপতির জন্য একটি কুলিং মেশিন ও ভিআইপিদের জন্য ১১ হাজার বর্গফুট জায়গায় লালগালিচা ও কার্পেট এবং সাধারণ মানুষদের জন্য কার্পেট, ম্যাট ও চাদর বিছানো হয়েছে।
মোজাম্মেল হক বলেন, এবার বৃষ্টি হলেও মুসল্লিদের নামাজ আদায়ে কোনো অসুবিধা হবে না। মাঠের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চার ফুট ঢালু করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে উচ্চতাও। পুরো মাঠের বৃষ্টির পানি ত্রিপলের ওপর দিয়ে মাটিতে পড়বে। সেখান থেকে ফেঞ্জ ড্রেনিং ব্যবস্থার মাধ্যমে দ্রুত বৃষ্টির পানি পাঁচটি মাস্টার ড্রেনে চলে যাবে।
রাজধানীতে ঈদ জামাত
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজের সময়সূচি সকাল সাড়ে ৮টায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকায় বিভিন্ন মসজিদ ও ঈদগাহ ময়দানে ঈদের বিশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
বায়তুল মোকাররমে পাঁচটি জামাত
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদুল ফিতরের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়ে বেলা ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা পর পর জামাত অনুষ্ঠিত হবে।