বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে ফাটল, আতঙ্কে সিরাজগঞ্জবাসী

Looks like you've blocked notifications!
সিরাজগঞ্জ শহরের রানীগ্রাম শিমুলতলায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে হঠাৎ করে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেখানে বালুর বস্তা রেখে কাজ শুরু করেছে পাউবো। ছবি : এনটিভি

সিরাজগঞ্জ শহরের রানীগ্রাম শিমুলতলায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে হঠাৎ করে ফাটল দেখা দেওয়ায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে শহরবাসীর মাঝে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ওই ফাটল মেরামতে তাৎক্ষণিক কাজ শুরু করে দিলেও সংশয় কাটছে না মানুষের। এ ঘটনার পর থেকেই পুরো এলাকাটিকে নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে ফেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেখানে বালুর বস্তা দিয়ে কাজ শুরু করেছে পাউবো। তবে আতঙ্ক বিরাজমান। ফাটলের খবর শুনে শহরের বিভিন্ন মহল্লার শত শত আতঙ্কিত মানুষ ঘটনাস্থলে এসে ভিড় জমায়। তারা দ্রুত বাঁধটি মেরামত করে সিরাজগঞ্জ শহরকে বন্যার হাত থেকে রক্ষার দাবি জানায়।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের রানীগ্রাম শিমুলতলা অংশে এ ফাটল দেখা দেয়। একই স্থানে বুধবার বিকেলেও বাঁধ ফুটো হয়ে দক্ষিণ সাইডে পানি চুয়ে চুয়ে প্রবেশ করতে শুরু করে। দিনভর কাজ করে সন্ধ্যার আগে ওই ফুটো বন্ধ করে পাউবো। এদিকে বাঁধটির নিরাপত্তায় এর দুই প্রান্তে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী রণজিৎ কুমার সরকার জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি ট্রাক ওই বাঁধের ওপর দিয়ে পার হওয়ার সময় রানীগ্রামের শিমুলতলা এলাকায় দেবে যায় এবং ফাটল দেখা দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাৎক্ষণিক ফাটল সংস্কারে কাজ শুরু করে পাউবো।

পাউবোর প্রকৌশলী জানান, ইঁদুরের গর্তের কারণে বাঁধের ওই অংশে লিকেজ হয়েছে। তবে এ নিয়ে শহরবাসীর আতঙ্ক হওয়ার কিছু নেই।

রানীগ্রাম মহল্লার হায়দার আলী শেখ, মনিরুজ্জামান, ফটিক আলী শেখ, আব্দুল মজিদ, ইয়াছিন আলী জানান, রানীগ্রামের বাঁধটির পশ্চিমাংশে পানিতে টইটুম্বর করছে। মাত্র এক ফুট নিচে আছে বানের পানি। ওই বাঁধটি সামান্য ধসে গেলেই বন্যার পানি রানীগ্রাম, নতুন ভাঙ্গাবাড়ী, জানপুর, পুরাতন ভাঙ্গাবাড়ী, বাহিরগোলা হয়ে সিরাজগঞ্জ শহরের এসএস রোড, মুজিব সড়ক ও ইবি রোড তলিয়ে যাবে। পুরো শহর বন্যা কবলিত হয়ে পড়বে। এসব কারণে তারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘হঠাৎ করেই শিমুলতলা স্থান দিয়ে একটি ট্রাক চলে যাওয়া ফাটল দেখা দিয়েছে বলে শুনেছি। এ বিষয়ে আমরা এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সার্বক্ষণিক বাঁধটির ওপর কড়া নজর রাখছি। এ খবরে এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।’

সিরাজগঞ্জ জেলা উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি ও স্থানীয় দৈনিক কলম সৈনিকের সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ জানান, ১৯৮৮ ও ২০০৭ সালের ভয়াবহ বন্যায় পুরো সিরাজগঞ্জ শহর তলিয়ে গিয়েছিল। শহরের বিভিন্ন স্থানে বাঁধ নির্মাণ হওয়ায় বেশ কয়েক বছর আশঙ্কামুক্ত ছিল সিরাজগঞ্জ শহরবাসী। কিন্তু রানীগ্রাম বাঁধটি ভেঙে গেলে ৮৮ কিংবা ২০০৭ সালের চেয়েও ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়বে সিরাজগঞ্জবাসী। এ জন্য তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

সিরাজগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম জানান, গত ১২ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি চার সেন্টিমিটার কমে এখন বিপৎসীমার ১৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি কমছে। এ জন্য রানীগ্রাম বাঁধ নিয়ে আতঙ্ক হওয়ার কিছু নেই।