‘সততা স্টোর’ পণ্য আছে, বিক্রেতা নেই
দোকানের তাকে সাজানো আছে কলম, পেনসিল, খাতা, জ্যামিতি বক্স, রাবার, বিস্কুট, চানাচুর, চকলেটসহ বিভিন্ন রকমের শিক্ষাসামগ্রী। দোকানে পণ্য রয়েছে থরে থরে। কিন্তু কোনো মালিক নেই, বিক্রয়কর্মী নেই, এমনকি নজরদারির জন্য নেই কোনো সিসি ক্যামেরা। পণ্যের গায়ে দাম লেখা আছে। ক্রেতা সেই দাম দেখে পণ্য নিয়ে নির্ধারিত বাক্সে টাকা রেখে দেবেন নিজ দায়িত্বে। পঞ্চগড়ের ‘সততা স্টোর’ থেকে এভাবেই পণ্য ক্রয় করতে হয়।
সদর উপজেলায় মাঘই পানিমাছ পুকুরী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে এই ‘সততা স্টোর’ স্থাপন করা হয়েছে। এর ক্রেতা মূলত শিক্ষার্থীরাই। পণ্য হিসেবে রয়েছে নানা শিক্ষা উপকরণ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সততা ও ন্যায়-নীতির অনুশীলনের সুযোগ করে দিতেই এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু ওয়াদুদ ‘সততা স্টোর’-এর উদ্বোধন করেন। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মো. গোলজার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন হাফিজাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মুছা কলিমুল্লাহ, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আবু জেকের, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম রোকশানুল ইসলাম, দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবিদা সুলতানা প্রমুখ।
সততা সংঘের তত্ত্বাবধায়ক হালিম রানা বলেন, শিক্ষার্থীদের মাঝে নৈতিকতা ও সততার অনুশীলনের লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আকতারুন নাহার বলেন, এটিকে সততার ব্যবহারিক শ্রেণিকক্ষ বলা যেতে পারে। নির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা মেনে ওই দোকান থেকে তাদের প্রয়োজনীয় যেকোনো পণ্য কিনতে পারবে শিক্ষার্থীরা। দোকানের চারপাশে তাকে সাজানো আছে কলম, পেনসিল, খাতা, জ্যামিতি বক্স, রাবার, বিস্কুট, চানাচুর, চকলেটসহ বিভিন্ন রকমের শিক্ষাসামগ্রী। একটি পণ্য অতিরিক্ত নিলে বা টাকা না দিলে দেখার কেউ নেই। তবু সততার পরীক্ষায় পাস করতে পারে কি না, তা দেখার পালা। প্রতিদিন স্কুল চলাকালীন ওই দোকান খোলা থাকবে। কেবল স্কুলের শিক্ষার্থী-শিক্ষকরাই এ দোকান থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবে। শিক্ষার্থীরা ক্রয় করার পদ্ধতি সম্পর্কে শিক্ষকদের পাশাপাশি ক্যাপ্টেনের সহযোগিতা নিতে পারবে।