হাত-চোখের পর প্রাণও গেল সেই প্রেমিকের

Looks like you've blocked notifications!
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সামনে গতকাল শনিবার রাতে অ্যাম্বুলেন্সে তুহিন মোল্লা। পরে ওই অ্যাম্বুলেন্সে করেই তাঁর লাশ আনা হয়। ছবি : এনটিভি

দুই হাত ও চোখের পর প্রাণও গেল তুহিন মোল্লার (১৮)। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর পাথালিয়া গ্রামে প্রেমিকার বাবা ও তাঁর তিন ভাইয়ের হামলায় গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।

হামলাকারীরা তুহিনের বাবা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য শওকত আকবর মোল্লার দুই হাত ও দুই পা কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। আহত করে আরো দুই আত্মীয়কে। আকবরকে ঢাকায় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতালে) পাঠানো হয়েছে। তাঁর দুই পা কেটে ফেলতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসক।urgentPhoto

তুহিনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য আজ রোববার দুপুরে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে আনা হয়। ঘটনার পর থেকে তুহিনের চাচা হামলাকারী লায়েক মোল্লা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা পলাতক।

চর পাথালিয়া গ্রামের একাধিক বাসিন্দা জানান, তুহিন চর পাথালিয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য শওকত আকবর মোল্লার (৫৮) ছেলে। তুহিনের সঙ্গে তাঁর বড় চাচা লায়েক মোল্লার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে মনিকার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঈদের দিন বিকেলে মনিকাকে নিয়ে ঘুরতে বের হন তুহিন। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি লায়েক মোল্লা ও তাঁর তিন ছেলে। সাজা দিতে তুহিনকে বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে নিয়ে যান। সেখানে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে তুহিনের দুই হাত কেটে ফেলেন এবং দুই চোখ উপড়ে ফেলেন। এ সময় তুহিনের বাবা শওকত আকবর মোল্লা ও দুই আত্মীয় বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। তাঁরা শওকত আকবর মোল্লার দুই হাত ও দুই পা কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেন। অন্য দুজনকে আহত করেন। পরে তাঁদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে রাতেই তুহিন ও তাঁর বাবাকে ঢাকার উদ্দেশে পাঠানো হয়। রাত ১২টার পর শিমুলিয়া ফেরিঘাটে তুহিন মোল্লার মৃত্যু হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক অনুপ কুমার মজুমদার জানান, হামলাকারীরা তুহিনের দুই হাত কেটে ফেলে ও চোখ তুলে ফেলে। গুরুতর জখম হওয়ায় শওকত আকবরের দুই হাত ও দুই পা শরীর থেকে কেটে ফেলতে হবে। বাবা-ছেলেকে ঢাকায় পাঠানোর পথে তুহিনের মৃত্যু হয়। আর শওকতকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতালে) পাঠানো হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন মোল্লা জানান, নিহত তুহিনের চাচা ও তাঁর তিন ছেলে হামলা চালিয়ে এলাকা ছেড়ে পলিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা একটি ছুরি উদ্ধার করেছে।