সাক্ষাৎকার

ডিজিটাল মিডিয়ায় আরো অনেক কিছু করার আছে

Looks like you've blocked notifications!
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের হেড অব ডিজিটাল মিডিয়া মো. আজিম হোসাইন। ছবি : সাইফুল সুমন

মো. আজিম হোসাইন। দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের হেড অব ডিজিটাল মিডিয়া হিসেবে কাজ করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) কিছু কোর্সে ক্লাসও নেন তিনি। সুযোগ পেলেই ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে জানাশোনা বাড়িয়ে নেন। এ জন্য চোখ রাখেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। তিনি মনে করেন, এই চর্চা তাঁর জ্ঞানকে আরো ঋদ্ধ করে। ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে এসেছিলেন এনটিভি অনলাইনে। এক সাক্ষাৎকারে জানালেন তাঁর জানা-অজানা নানা কথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিরাজুম মুনিরা ও হোমায়রা ফাতেমা নিজাম।

এনটিভি অনলাইন : প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ দেশের অন্যতম বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান। আপনাদের প্রায় পাঁচ হাজারের মতো পণ্য। এতে বড় প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল মিডিয়ার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কেমন লাগছে?

মো. আজিম হোসাইন : আসলে কাজটা অনেক চ্যালেঞ্জিং এবং সত্যিকার অর্থেই অনেক কাজ। যদি বলা হয় যে, কেমন লাগছে, গতানুগতিকভাবে হয়তো বলা যায় যে খুব ভালো লাগছে। আর আমি বিশ্বাস করি এটা অনেক পরিপূর্ণ একটা কাজ। নিজের কাছেই মনে হয় যে, হ্যাঁ একটা কিছু করছি।

প্রতিদিন যখন আমার দিন শুরু হয় তখন কাজটা নিয়ে এক রকম অনুভূতি থাকে। দিনের শেষ যখন হয় তখন আরেক রকম অনুভূতি। আবার যখন বাসায় চলে যাই তখনো অনেকটা যেন কাজের মধ্যেই থাকি। ওই সময় চিন্তা হয়, আমার পরবর্তী কী কাজ বাকি আছে, সেগুলো আমি কীভাবে সম্পূর্ণ করব। 

এরপর যখন নতুন দিনের শুরু হয় তখন সেই কাজগুলো নিয়েই একটা চ্যালেঞ্জ অনুভব করি যে, এই কাজগুলো আজকে করতে হবে। অনেক সময় কিছু কাজ থাকে যেগুলো শেষ করার পর দেখা যায়, আসলে মাত্র ২০ ভাগ শেষ করেছি। অর্থাৎ আমি যেটাকে পুরো কাজ বলে মনে করেছিলাম, সেটা আসলে কেবল ২০ ভাগ! ফলে নতুন উদ্যমে আবার পরবর্তী কাজ শুরু করি।

এনটিভি অনলাইন : অর্থাৎ সব সময়ই আপনি আপনার পদটাকে ধারণ করেন? 

মো. আজিম হোসাইন : একজ্যাক্টলি (ঠিক তাই)। আসলে আমার মনে হয়, ডিজিটাল মিডিয়াটা বা ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজটা আপনি চাইলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২৪ ঘণ্টাই করতে পারবেন। 

আসলে মার্কেটিংয়ের মূল কাজটা সবসময়ই ভোক্তাকেন্দ্রিক, আর এখন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের যুগে যেহেতু আমাদের পণ্যগুলোর ভোক্তা সবসময়ই অনলাইন মিডিয়াতে থাকে তাই যারা এই মিডিয়ার মার্কেটিংয়ের সাথে জড়িত তাদের সবসময়ই কাজ করার সুযোগ থাকে

আর এখন যেই সময়টা আমরা পার করছি সেখানে প্রতিদিনই নতুন নতুন বিষয় আসছে, বদল হচ্ছে। আমরা অনেক কম জানি। সত্যি বলতে কী, সেই জায়গা থেকে ২৪/৭ (চব্বিশ ঘণ্টা, সাতদিন) এনগেজড থাকলে আপনি আরেকজনের থেকে একটু বেশি জানবেন। সব যে জানবেন এ রকম না, আপনি হয়তো যাদের সঙ্গে চলছেন, যে সোসাইটি মেইনটেইন করছেন, তাদের থেকে একটু বেশি জানবেন। এটাই হলো বিষয়। 
এনটিভি অনলাইন : প্রাণ-আরএফএল তাদের পণ্যের প্রচার-প্রসার ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্র্যান্ড সম্পর্কে মানুষকে পরিচিত করে তোলে। প্রাণের এই হাজার হাজার পণ্যকে পরিচিত করে তুলতে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ভূমিকা কতটুকু?

মো. আজিম হোসাইন : একটা পণ্যের প্রচারে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ভূমিকাটা আসলে অবিচ্ছেদ্য একটা অংশ। একটা ব্র্যান্ড বা একটা প্রোডাক্ট বা একটা সার্ভিসের প্রচারটা নির্ভর করবে যে সেই পণ্যের উদ্দেশ্য কী, কাজ কী, পণ্যটা কাদের প্রয়োজন মেটাবে, তার ওপরে। এটাই হচ্ছে ব্র্যান্ডের মূল চরিত্র। 

ব্রান্ডের প্রচার এর উদ্দেশ্য সাধারণত ওই ব্র্যান্ডের ব্র্যান্ড ম্যানেজারের কাছ থেকে আসে। আমরা যারা বাস্তবায়ন অংশে থাকি তাঁরা মিডিয়ার মিক্স অ্যানালাইসিস বা মিশ্র বিশ্লেষণ করি। একটা পণ্যের টার্গেট গ্রুপটা কোথায় আছে প্রথমে সেটা খুঁজে বের করা হয়। প্রাণের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রাণের বিভিন্ন রকমের পণ্য রয়েছে। এমন কিছু পণ্য রয়েছে যেগুলোর বিষয়ে আগে থেকে কিছু বলা যায় না। মানে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আপনি এটা ঠিক করে বের হন না যে আজ একটা চিপস খাবেন। কিন্তু রাস্তায় বেরিয়ে এক কাপ চা খাওয়ার পর আপনার মনে হয় নতুন এই চিপস বা চকলেটটা খেয়ে দেখি।

আবার কিছু পণ্য আছে যেগুলো অনেক ভেবে চিন্তে কেনা হয়, যেমন ফার্নিচার। অনেক দোকান দেখে, বাজেট ঠিক করে, অনেক চিন্তা করে তবেই আপনি একটা ফার্নিচার কিনতে বের হন।  

তাই পণ্যের চরিত্র অনুযায়ী মার্কেটিংয়ের পার্থক্য হয়। একেকটা পণ্যের টার্গেট গ্রুপ একেক জায়গায় থাকে। সেই অনুযায়ী ঠিক করা হয় যে ওই গ্রুপকে কীভাবে এবং কোন উপায়ে পণ্যের তথ্যটা পৌঁছানো হবে। 

প্রাণের বেশিরভাগ পণ্যই হচ্ছে একেবারে জনসাধারণ পর্যায়ের ভোক্তার জন্য। সে কারণে এই ক্ষেত্রে ডিজিটাল মিডিয়া মার্কেটিংটা যথাযথভাবে করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এনটিভি অনলাইন : বিশ্বের ১৩২টি দেশে প্রাণ পণ্য রপ্তানি করে। এই সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে প্রাণ ডিজিটাল মার্কেটিং টিম কী ভূমিকা পালন করছে?

মো. আজিম হোসাইন : একটা বিজনেস সম্প্রসারণের জন্য দুইটা উপায়ে কাজ হয়। প্রথমত, যেসব দেশে আমাদের কোনো পণ্য নাই, সেসব দেশের জন্য ওই দেশ থেকে যদি কেউ আগ্রহী হয়, তাহলে সে আমাদেরকে খোঁজে। সেজন্য কাজ থাকে আমাদের তথ্য জানার যে পথগুলো আছে, যেমন ওয়েবসাইট, সেগুলোকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করা। তারা কোনো তথ্য চাইলে সঠিক তথ্যটি দেওয়া। আর আরেকটা হলো, নতুন কোনো দেশে পণ্য জনপ্রিয় করার জন্য দেখা যে সেটি ওই দেশের মানুষের জন্য কতটুকু প্রয়োজনীয়। সেক্ষেত্রে ওই দেশেও মিডিয়ার মিশ্র বিশ্লেষণ করতে হয়। 

এনটিভি অনলাইন : তাহলে তো এই ১৩২ দেশেই আলাদা আলাদা মার্কেটিং করতে হয়? সেই দেশের সংস্কৃতি এবং পারিপার্শ্বিকতা অনুযায়ী?

মো. আজিম হোসাইন : ঠিক বলেছেন। দেখেন, ফ্রুটো জুসটা বিশ্বের অনেক দেশে রপ্তানি হয়। এখন ফ্রুটোর জন্য আফ্রিকাতে একরকম বিজ্ঞাপন থাকে, আরবে আরেকরকম বিজ্ঞাপন ব্যবহার করা হয়। আবার দুবাই ও কুয়েতের বিজ্ঞাপনের ধরনও আলাদা। কারণ কুয়েতের জন্য যে ধরনের বার্তা, যে ধরনের তথ্য দিতে হয় তা নির্ভর করে তাদের রীতি-নীতি, সংস্কৃতির ওপর। তাঁদের মূল্যবোধ এক রকম, আফ্রিকারটা আরেক রকম। ফলে এসবের ওপরই বিষয়টা নির্ভর করে। ওভাবেই পরিকল্পনা সাজাতে হয়। 

এনটিভি অনলাইন : সেই বিজ্ঞাপনগুলো স্থানীয় বিজ্ঞাপন নির্মাতাদের দিয়েই করানো হয়? না কি আপনারা নিজেরাই করেন?

মো. আজিম হোসাইন : বেশিরভাগ সময় স্থানীয় বিজ্ঞাপন নির্মাতাদের মাধ্যমেই করা হয় কাজগুলো। কারণ তা না হলে লোকালাইজড টোনটা বা স্থানীয় আবেগটা পাওয়া যাবে না। 

যেহেতু টার্গেট গ্রুপটা ব্র্যান্ডটাকে নিজের মনে করে তাই তাদের মতো করেই বার্তাটা দিতে হয়। যেন ভোক্তারা ওই নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডটাকে নিজের মনে করেন, সেটার সঙ্গে যুক্ত থাকেন। 
এনটিভি অনলাইন : বাংলাদেশে মোবাইল ফোন বিপ্লব ঘটেছে। ইন্টারনেটের ব্যবহারও বেড়েছে। ফেসবুক ব্যবহারকারীর দিক থেকে ঢাকা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী। এ অবস্থায় প্রাণ-আরএফএল কি প্রচলিত মার্কেটিংয়ের চেয়ে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে বেশি জোর দিয়েছে? আগের চেয়ে বেশি খরচ করছে?

মো. আজিম হোসাইন : আসলে খরচটা নির্ভর করবে আমি কী চাই তার ওপর। আমাদের চাওয়া যেমন বাড়ছে খরচটাও অবশ্যই বাড়বে। এটা শুধু আমাদের নয়, মানে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিষয় নয়, বাংলাদেশে যতগুলো অর্গানাইজেশনই আছে তার চাওয়াটা যেহেতু বাড়ছে, তাই তাদের এই মিডিয়াতে খরচটাও বাড়ছে। 

আরেকটা বিষয় হচ্ছে যে এখন অনেক ডিজিটাল বিজনেসও আসছে। যেমন ধরেন পাঠাও বা উবার। এগুলো পুরোপুরি ডিজিটাল নির্ভর। ফলে ওইটার পেছনেও মানুষের খরচ বাড়ছে। 

এনটিভি অনলাইন : প্রচলিত বা প্রথাগত মার্কেটিংয়ের চেয়ে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কি আপনারা বেশি জোর দিচ্ছেন?

মো. আজিম হোসাইন : সত্যিকার অর্থে এটা নির্ভর করে পণ্যটা কী? তবে যদি সবমিলিয়ে বলা হয় এখনো ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে খরচ অনেক কম করা হয়। আমি মনে করি বাংলাদেশে  গোটা মিডিয়া বাজারের ৫-৬ শতাংশের বেশি হবে না ডিজিটালের খরচ। অবশ্য আপনি যদি পণ্যগুলোকে ভাগ করেন, তাহলে কিছু পণ্যের মার্কেটিং শতভাগ ডিজিটাল। ই-কমার্স বা এফ-কমার্স ভিত্তিক ব্যবসাগুলো।

আবার কিছু আছে একটুও ডিজিটাল না। যেমন মুরগি মার্কা ঢেউটিন। সে কারণে যখন গোটা বিষয়টা একসঙ্গে বিবেচনা করা হয়, তখন পরিসংখ্যানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের পরিমাণটা খুব কমই দেখা যায়। 

আবার ধরেন যদি শুধু প্রাণের জন্য বলি, তাহলেও এটা ৫/৬ শতাংশ। টেলকো ব্যবসার জন্য এটা হয়তো আরেকটু বেশি। 

এনটিভি অনলাইন : গুগল, ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মের পাশাপাশি পাবলিশার বা সংবাদমাধ্যমের ওপর ভর করেই ডিজিটাল ক্যাম্পেইন বা প্রচার প্রচারণা আপনারা চালিয়ে থাকেন। কোন মাধ্যম থেকে আপনারা বেশি সাড়া পান- প্ল্যাটফর্ম না পাবলিশার?

মো. আজিম হোসাইন : আসলে কাউকে বেশি গুরুত্ব দেওয়াটা কঠিন। প্লাটফর্মে বেশি, না কি পাবলিশার বেশি- পুরোটাই নির্ভর করে আমার উদ্দেশ্য কী? আমার উদ্দেশ্য যদি হয়, এখান থেকে লিড জেনারেশন করব। তাহলে অবশ্যই আমি মনে করি, প্লাটফরম বেশি সাপোর্টটা দেয়। আবার আমার লক্ষ্য যদি হয়, জনগণের মাঝে সচেতনতা বাড়াব, তখন আবার পাবলিশার বেশি সাহায্য করে। 

এনটিভি অনলাইন : বিজ্ঞাপনে আসলে কতটুকু সচেতনতা সৃষ্টির বিষয় থাকে?

মো. আজিম হোসাইন : বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে প্রায় ৮০ শতাংশই সচেতনতার বিষয় থাকে। কারণ হচ্ছে, একটা পণ্য বিক্রি যে হবেই তার নিশ্চয়তা আপনি দিতে পারবেন না।

আবার আপনি একটা বিক্রির জন্যই বলবেন যে প্রাণ প্রিমিয়াম ঘি আপনার খাবারকে আরো সুবাসিত করবে। অথবা আপনার খিচুড়িটাকে অনেক মুখরোচক করবে। এটা কি বিক্রির জন্য না সচেতনতার জন্য? এটা সংজ্ঞায়িত করাটাও কঠিন হয়ে যায় অনেক সময়। 

এই সচেতনতা সৃষ্টির জন্য পাবলিশার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে পণ্যের প্রচারের বিষয়টাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিলে প্ল্যাটফর্মটা জরুরি। ফলে যে ওয়েবসাইট বা যে মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ও পাবলিশারের সমন্বয় ঘটায় সেই হয় সবচেয়ে ভালো। যাকে বলা যায় অলরাউন্ডার। 

যেমন, আমার প্ল্যাটফরম হয়তো একটা গেমিং অ্যাপস। আমাকে তখন দেখতে হয়, কোথায় বিজ্ঞাপন দিলে সবচেয়ে বেশি লাভ হবে আমার। অর্থাৎ কোথায় গেলে বেশি ভোক্তার সঙ্গে যুক্ত থাকা যাবে, সেটা মাথায় রাখতে হবে। 

এই গেমিং অ্যাপসে বিজ্ঞাপন যোগ করলে শুধু খেলা পছন্দ করেন এমন মানুষকে পাওয়া যাবে। অন্যদিকে পাবলিশারের নিজের একটা ব্র্যান্ড ইমেজ থাকে, তাদের দর্শকদেরও একটা পোর্টফোলিও আছে। 

তখন কী হয়, আপনি ওই দর্শককে লক্ষ্য করতে চান, তাহলে ওই পাবলিশারটা গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণ হিসেবে আমি যদি বলি উইমেন চ্যাপ্টার। আরএফএল প্লাস্টিকসের জন্য উইমেন চ্যাপ্টার গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ব্রেভারের জন্য উইমেন চ্যাপ্টার গুরুত্বপূর্ণ না। এখন উইমেন চ্যাপ্টারে যদি কোড বসানো থাকে গুগলের প্ল্যাটফর্মের একটা, তাহলে হয়তো সে ওই বিজ্ঞাপনটা ওখানে পাবে, কিন্তু সে তো অবজেকটিভ ওরিয়েন্টেড টার্গেট বা নির্ধারিত লক্ষ্য অনুযায়ী ভোক্তা পাচ্ছে না। 

আরেকটা বিষয় হচ্ছে, প্রত্যেক পাবলিশারের যেহেতু একটা ব্র্যান্ড ইমেজ আছে, ওই ব্র্যান্ড ইমেজ অনুযায়ী তার পাঠকদেরও একটা প্রোফাইল আছে, ওই প্রোফাইলের লোকগুলোকে যদি টোটাল আমি টার্গেট করতে চাই, তখন ওই পাবলিশারটায় যাওয়া আমার জন্য কস্ট ইফেকটিভ বা ভালো হয়। তখন ওটাই গুরুত্ব পায় বেশি। 

এনটিভি অনলাইন : আপনারা যখন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য পাবলিশারকে বেছে নেন, সেক্ষেত্রে তাদের কোন জিনিসগুলোর দিকে আপনারা বেশি নজর দিয়ে থাকেন? সেখানে কী ঘাটতি আছে বলে আপনার মনে হয়?

মো. আজিম হোসাইন : পাবলিশারে আমরা দেখি, গুগল অ্যানালেটিক্স, বাউন্স রেট, সোর্স, এলেক্সা র্যাংকিং এবং সর্বোপরি পাবলিশারের ব্র্যান্ড ইমেজ। প্রত্যেকটারই একেকটা আলাদা মূল্য আছে। বাউন্স রেট গুরুত্বপূর্ণ, সোর্স তো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যদি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সোর্স হয়, তাহলে সেটার মাধ্যমে আমরা পাবলিশারের চরিত্রটা বুঝতে পারি। আবার যদি সরাসরি সোর্স হয়, সেটাও তখন আমাদের পাবলিশার সম্পর্কে একটা ধারণা দেয়। 

পাবলিশারের ব্র্যান্ড ইমেজ ও ভিজিটর দুটো মিলেই বিজ্ঞাপন দেওয়ার বিষয়টি ঠিক করা হয়। এসবের ওপরই নির্ভর করে বিজ্ঞাপনের মূল্য ।

এনটিভি অনলাইন : ডিজিটাল মাধ্যমের সম্প্রসারণের কারণে এখন ডিজিটাল-কেন্দ্রিক নতুন নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ‘ডিজিটাল বোর্ন’ সংবাদমাধ্যমের আবির্ভাব ঘটছে। নতুন এসব উদ্যোগকে কীভাবে দেখছেন?

মো. আজিম হোসাইন : নতুন উদ্যোগকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাই। নতুন জিনিসটা অনেক সময় দুইভাবে হয়- একটা হচ্ছে বিবর্তিত একটা রূপ, আরেকটা হচ্ছে পুরোপুরি আবিষ্কার। 

আপনি প্রশ্ন করতে পারেন যে আবিষ্কার করাটা কেন দরকার? দেখেন, পৃথিবী যে এই পর্যায়ে এসেছে সেটা কিন্তু আবিষ্কারের জন্যই এসেছে। যখন কোনো কিছু আবিষ্কার করা হয়, তখন সেটা বেশ অদ্ভুত পর্যায়ে থাকে। ধীরে ধীরে টিকে থাকার জন্য এটা বিভিন্নভাবে নিজেকে বদলায়। তারপর একসময় স্থায়ী হয়ে যায়। অর্থাৎ আবিষ্কার না হলে আমি কিন্তু পরিমার্জনের সুযোগ পাব না। তাই যেকোনো নতুন উদ্যোগকেই আমি স্বাগত জানাই। কারণ এ ধরনের উদ্যোগই আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে দেয়। 

দিনে দিনে এই আবিষ্কার বা উদ্ভাবনের ওপর ভিত্তি করে দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে, নতুন চাকরির ক্ষেত্র তৈরি হবে, কাজের  শিক্ষার অনেক ধরনের নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরি হবে।
এনটিভি অনলাইন : বিশ্বব্যাপী গুগল-ফেসবুক ডুয়োপলির কারণে চাপে পড়ছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। বিজ্ঞাপনদাতারা ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে বাজেট বাড়ালেও তার বড় অংশ চলে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক এসব প্ল্যাটফর্মের পকেটে। এ বিষয়ে কিছু বলবেন?

মো. আজিম হোসাইন : বিশ্বব্যাপী গুগল-ফেসবুক ডুয়োপলির কারণে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো চাপে পড়ছে, এটা সত্য। তবে এটাও সত্য যে এই ডুয়োপলিটা শুধু বাংলাদেশে নয়, যেদিন থেকে ফেসবুক জন্মগ্রহণ করেছে- যেদিন থেকে লাইমলাইটে আসা শুরু করেছে, সেদিন থেকেই যেখানে ফেসবুক জন্মগ্রহণ করেছে সেখানেও এই ধরনের একটা যুদ্ধ ছিল। ফলে আমাদের দেখতে হবে ওই দেশটা কীভাবে পরিস্থিতিটা মোকাবিলা করেছে। পরিস্থিতি কীভাবে সে নিজের করে নিয়েছে। 

এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, গুগল বা ফেসবুক নিজে কোনো কন্টেন্ট তৈরি করে না। অন্যের ওপর নির্ভর করে। আমি যদি আজকে ইউটিউবের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে বলি, তাহলে বাংলাদেশে ১০ লাখ ইউটিউবার আছে। এই ১০ লাখ ইউটিউবারের মধ্যে হয়তো এক লাখ ইউটিউবারই মূল ভূমিকা পালন করে। এখন এরা যদি ভালো কন্টেন্ট না দেয়, গুগল ভালো কন্টেন্ট পাবে না। কিন্তু আপনার যে প্ল্যাটফর্ম সেটা তো আপনার। আপনি যদি সিদ্ধান্ত নেন যে আমার কনটেন্ট প্ল্যাটফর্মে আমি এই এই কনটেন্ট দেব, তখন ওই কন্টেন্টটা বা ওই জিনিসটা দেখার জন্য মানুষ আপনার প্ল্যাটফর্মে আসবে।

দ্বিতীয়ত, কারো সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে কাজ করা, যেমন অ্যামাজন ডটকম। অ্যামাজন ডটকমের নিজের কিছু পণ্য আছে, একই সময়ে সে বাইরেরও পণ্যও নেয়। আপনি আপনার ছবি আঁকাগুলোই যদি আমাজনে বিক্রি করেন, সেখান থেকে কিন্তু আমাজনও আপনাকে একটা মাইলেজ দেওয়ার চেষ্টা করবে। আপনাকে গুরুত্ব দেবে। কারণ আপনি তার জন্য তখন একজন ভ্যালু অ্যাডেড পারসন। 

তাই ডুয়োপলি সব সময়ই ছিল, থাকবে। বড় বড় কোম্পানি সবসময় চাপ দেবে। কিন্তু আপনার নিজের যদি একটা পরিচিতি থাকে, কাজের ধরন নির্দিষ্ট থাকে, তাহলে আপনি ওখানেও একটা শক্ত পরিচয় দাঁড় করাতে পারবেন। 

এনটিভি অনলাইন : ওয়েবসাইটের ভিজিটর বা ট্র্যাফিক নির্ণয়কারী গুগল অ্যানালাইটিক্স এবং ওয়েবসাইটের র‍্যাংকিংকারী প্রতিষ্ঠান অ্যালেক্সা। কেউ কেউ ভিজিটর বাড়াতে ক্লিকবেইট নিউজ তৈরি করেন। অন্যদিকে অ্যালেক্সার স্বচ্ছতা নিয়েও অনেক প্রশ্ন আছে। আপনারা বিজ্ঞাপন দেওয়ার সময় কোনটিকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন—র‍্যাংকিং, না ট্রাফিক, নাকি অন্যকিছু?

মো. আজিম হোসাইন : আমি এর আগেও বলেছি। ক্লিকবেইট নিউজটা বলব ডিজিটাল মিডিয়ার একটা ভালো দিক। আবার এইটাই একটা খারাপ দিক। এর মাধ্যমে খুব অল্প সময়েই অনেক জনপ্রিয়তা পেতে পারে। আবার অল্প সময়েই সেটা পড়েও যেতে পারে। এটা সবসময় থাকবে। এটা নিয়েই চলতে হবে। এটাকে বাদ দেওয়া যাবে না। মনে রাখবেন, এভাবে যাদের উত্থান তাঁদের পতনটাও কিন্তু ওই রকম। 

এনটিভি অনলাইন : কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম বিজ্ঞাপন পাওয়ার জন্য নেতিবাচক খবর তৈরি করে থাকে। এই কৌশলে কি বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়? কীভাবে আপনারা বিষয়টি মোকাবিলা করেন?

মো. আজিম হোসাইন : মোকাবিলা করাটা আসলে একেক সময় একেক রকম হয়। অনেক সময় আমাদের পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে এটাকে মিনিমাইজ করার চেষ্টা করি। কোথাও কোথাও পজিটিভ ওয়ার্ড অব মাউথ ছড়ানোর চেষ্টা করি, আবার কোথাও মূল ঘটনাটা ব্যাখ্যা করি। 

এনটিভি অনলাইন : টেলিভিশনের পাশাপাশি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, বিশেষ করে ইউটিউব সারা বিশ্বের মতোই বাংলাদেশে জনপ্রিয়। ইউটিউবে প্রচুর মানুষ নাটক, সিনেমা, গান বা খবর দেখছে। মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে এই মাধ্যমকে আপনারা কীভাবে ব্যবহার করছেন?

মো. আজিম হোসাইন : এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। আমি এটাকে আলাদাভাবে বলতে চাই, মানুষ দেখে এন্টারটেইনড হবে বা বিনোদন নেবে- এটা পৃথিবীর সেই শুরু থেকে হয়ে আসছে। আপনি যদি সেই গ্রিক সিনেমাও দেখেন, দেখবেন যে রাজারা বসে থাকত, ওখানে বাঘের সঙ্গে মানুষ যুদ্ধ করত। এই যে দেখে এন্টারটেইন হওয়াটাই ছিল মূল বিষয়। এখন দেশে এই দেখে বিনোদিত হওয়ার ক্ষেত্রগুলো অনেক কমে গেছে। 

আমাদের স্কুলে কী হতো? খেলা হতো প্রত্যেক স্কুলের মাঠে। গ্রামেগঞ্জে এখন আর খেলা হয় না। তাহলে মানুষের যে মূল চাহিদা সেটা সে কোথা থেকে পূরণ করবে? 

এখন এই বিনোদন দেওয়ার জায়গাটাই দখল করে নিচ্ছে ভিডিও সাইটগুলো। ফলে বিজ্ঞাপনটাও ওখানে চলে যাচ্ছে। আসলে কাকে টার্গেট করছি এটা যখন ঠিক করে ফেলি, তখন দেখি যে তাকে কোথায় পাব। তাকে যদি আমি দেখি যে, খেলাধুলা সম্পর্কিত কন্টেন্টে পাব, তাহলে আমি ওই সম্পর্কিত ইউটিউব বা পাবলিশার অথবা প্ল্যাটফর্মের কাছে যাব। 

মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে যেহেতু আমরা প্ল্যাটফর্ম বা পাবলিশারের ডাটা পেয়ে যাই, সেহেতু তাদের হিস্ট্রির ওপরে বা তাদের ইন্টারেস্টের ওপর ভিত্তি করেই আমরা টার্গেটটা করি।

এনটিভি অনলাইন : প্রাণ স্ন্যাকস টাইম কিছু পুরোনো গানকে নতুন করে মিউজিক ভিডিও করেছিল। ওটার টার্গেট গ্রুপ কারা ছিল?

মো. আজিম হোসাইন : এখানে একটা পয়েন্ট হচ্ছে বিজ্ঞাপন। আরেকটা হচ্ছে যে… দেখেন, ইউটিউব বা ফেসবুক সব সময়ই পেইড মিডিয়া। আপনাকে পে করতে হবে।

পাশাপাশি একটা নিজের মিডিয়াও করতে হবে। নিজের মিডিয়া মানে আপনার নিজের ঘর। আপনি আপনার নিজের ঘরকে এমনভাবে সাজালেন যে মানুষ স্বয়ংক্রিয়ভাবেই আসে। যেমন, একটা পার্ক চালু করলে সেখানে মানুষ এমনিতেই ঘুরতে আসবে। তো এই পার্কটার মধ্যে যদি আপনি পাশাপাশি একটা ব্যবসার পথও খোলা রাখেন, তখন দেখা যাবে এই পার্কটাতে মানুষ ঘুরতেও পারবে আবার আপনার আয়ও হবে। 

ইউটিউবের মূল মেরুদণ্ড কে? ক্রিয়েটর । বাংলাদেশে সংস্কৃতিগতভাবে আমাদের যত ক্রিয়েটর বা স্রষ্টা আছে আমরা যদি সেই ১০ বছর পেছনে যাই, তাহলে দেখব শিল্পীই কিন্তু মূল ক্রিয়েটর। এখন তাঁদের পুরোনো শিল্পগুলো বা গানগুলো যদি কেউ ইউটিউবে দেখতে চায়, পাবে? আমি যদি বলি আইয়ুব বাচ্চু? আইয়ুব বাচ্চুর গানের আমি বলব ৭০ শতাংশই সুন্দর ভিডিও নাই। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল আমাদের যে মূল রিসোর্স ক্রিয়েটরদের গানগুলোকে বা এদের সৃষ্টিগুলোকে আমরা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করব। যেন এই সময়টাতে নতুনদের সঙ্গে ফাইট করতে পারে। এই সময়ের মানুষ যারা ইউটিউব দেখে তাদের পছন্দ হয়। আমাদের আসল জিনিসটাকেই স্রেফ নতুনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মূল জায়গা ঠিক রেখেই। মানুষ এটাকে দেখবে। এটা দেখার ফলে ইউটিউবে যেহেতু মনিটাইজেশনের সুযোগ আছে, তখন সেই ক্রিয়েটররাও একটা রয়্যালিটি ধরনের অর্থ পাবে। ফলে এখন এই সৃষ্টিটা কখনোই আসলে মরবে না। 

রয়্যালিটির এই চর্চা কিন্তু সারা বিশ্বেই আছে। কেউ যদি ১০০ বছর আগেও একটা বই লিখে থাকেন আর সেই বইটা যদি এখনো বিক্রি হয় তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তিনি বা তাঁর উত্তরাধিকারীরা সেই রয়্যালিটি পাবে। কিন্তু দেখেন শাহ আব্দুল করিম কোনো রয়্যালিটি পান না। তাই এসব মাথায় রেখেই মিউজিক ভিডিওর উদ্যোগটা নেওয়া হয়েছিল। 

আর আরেকটা উদ্দেশ্য ছিল, আমি যদি এনটিভির উদাহরণ দেই, আপনার এনটিভিতে কয়টা লোক আসে? আমি যদি ফ্রুটোর ইউটিউব চ্যানেলের উদাহরণ দেই, তাহলে মাসে ১৫ থেকে ২০ লাখ ইম্প্রেশন ফ্রি পায়। কারণ ওর চ্যানেলেই মানুষ আসে। অথচ একটা সময় ১৫ থেকে ২০ লাখ ইমপ্রেশন পাওয়ার জন্য আমাকে ইউটিউবকে টাকা দিতে হতো। তাই নিজের মিডিয়া এবং পেইড মিডিয়ার একটা ভারসাম্য যদি থাকে, তখন দেখা যাবে একটা নির্দিষ্ট সময় পর খরচ কম করতে হবে। 

এনটিভি অনলাইন : শুনেছি, আপনারা নিজেরাই অ্যাড নেটওয়ার্ক তৈরি করেছেন। ডিএফপি, অ্যাডটেকের মতো প্ল্যাটফর্ম থাকতে আপনারা কেন এই উদ্যোগ নিলেন? এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কী ধরনের সুবিধা পাবেন বলে মনে করছেন?

মো. আজিম হোসাইন : এটা আসলে আমাদের নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর জন্যই তৈরি করা। নিজেদের প্রয়োজন বলতে বুঝাচ্ছি, যেহেতু আমাদের এতগুলো দেশে পণ্য যায়, এতগুলো দেশে বিজ্ঞাপনেরও একটা প্রয়োজন থাকে। আবার বাংলাদেশেও যদি বলি আমরা অন্তত ২০টা পাবলিশারের সঙ্গে কাজ করি। দেখা যায় অনেক সময় আমার একটা ক্রিয়েটিভ ২০ জনকে মেইল করতে হয়। বা কেউ হয়তো ওই সময় নাই, এই সময়ে সাপোর্টটা দরকার সেটা পাচ্ছে না, টেকনিক্যাল ঝামেলা, এই কারণে আমাদের নিজেদের অ্যাড নেটওয়ার্ক করা। এরপর কমার্শিয়ালি যদি কেউ এখান থেকে সাপোর্টটা চায় সেটা আমরা দিতে পারব। ওই সক্ষমতাটা থাকবে, কিন্তু মূল উদ্দেশ্যটা হচ্ছে আমাদের নিজেদের সাপোর্ট দেওয়া।

এনটিভি অনলাইন : এবার অন্য প্রসঙ্গ। আপনার জন্ম, পড়াশোনা ও পরিবার… 

মো. আজিম হোসাইন : আমার জন্ম ভোলাতে। আব্বা পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি করতেন। যেহেতু সরকারি চাকরি করতেন, বিভিন্ন জায়গায় বদলি হতে হতো। ফলে ভোলায় জন্ম, ওখানে ক্লাস এইট পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি। এরপর আব্বার বদলির সূত্রে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়েছি পটুয়াখালীতে। এরপর ঢাকায় এসে নর্দান ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হই। সেখান থেকেই বিবিএ-এমবিএ শেষ করি। এরপর আমি অনেক ট্রেনিংয়ে অংশ নিয়েছি। আমার ক্যারিয়ারটা যেহেতু শুরু ব্র্যান্ডে,সেহেতু এই সম্পর্কিত অনেক প্রশিক্ষণ নিই। ডিজিটাল মিডিয়ারও অনেক ট্রেনিং করি। ডিজিটাল ট্রান্সমিশন, ইন্টারেকশন ইন ডিজিটাল মিডিয়া এই ধরনের কিছু ট্রেনিংয়ের পরই মূলত ব্র্যান্ড এবং ডিজিটালের বিষয়ে বোঝাপড়াটা ভালো হয়।

পরিবারে আছেন হচ্ছে আব্বা, মা আর দুই বোন। এদের মধ্যে একবোন আমার বড়, আরেক বোন ছোট। 

এনটিভি অনলাইন : প্রাণে কাজ করছেন কত বছর?

মো. আজিম হোসাইন : প্রাণে কাজ করছি ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে। জানুয়ারিতে আমি ওখানে জয়েন করি ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি ব্র্যান্ড হিসেবে। তখন আমার শুরুটা হচ্ছে স্ন্যাক্স, তারপরে মশলা, সস ও চাল। তখন প্রাণের পোর্টফোলিওটাও এত বড় ছিল না। সবকিছু মিলে একটা ক্যাটাগরি ছিল। যেটাকে কালিনারি ক্যাটাগরি বলে। ওই ক্যাটাগরিটা আমি দেখতাম। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমি ব্র্যান্ড ডিপার্টমেন্টে ছিলাম। 

এনটিভি অনলাইন : ক্যারিয়ার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিংকে কেন বেছে নিলেন এবং কীভাবে এ পেশায় এলেন?

মো. আজিম হোসাইন : সত্যি বলতে, ক্যারিয়ার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিংটা বেছে নিইনি। কারণ তখন বেছে নেওয়ার মতো আসলে অবস্থা ছিল না। এখনো যে খুব আছে সেটাও বলা যাবে না। আসলে মার্কেটিং বিবর্তন হতে হতে এখন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের এই রূপটা এসেছে। যখন ব্র্যান্ডে যখন ছিলাম, তখন বিভিন্ন ট্রেনিং বা ওই সময়ের বিভিন্ন লেখাপড়ার মাধ্যমে জ্ঞান আহরণের ফলে ডিজিটাল এবং ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্ট এই দুইটার ওপর একটা ভালো দক্ষতা এসেছিল। এরপর আমার প্রতিষ্ঠান মনে করল যে এই ডিজিটাল মিডিয়া বিষয়টাকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। তখন আলাদা ডিপার্টমেন্ট চালু করা হলো। 

যেহেতু আমার বেশ দক্ষতা ছিল এই বিষয়ে, তাই প্রাথমিকভাবে আমাকেই বেছে নেওয়া হলো। আমি আর আমার সহকর্মী নাজমুল হিমেল মিলেই মূলত এই ডিপার্টমেন্টটা শুরু করি। আর মাত্র দেড় বছরের মধ্যে আমরা এখন ৫০ জন্যের একটা দক্ষ টিম

এনটিভি অনলাইন : নতুন যারা ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে আসতে চায়, তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?

মো. আজিম হোসাইন : নতুন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে আসতে চাইলে আসলে আমি বলব এই মুহূর্তে যারা গ্রাজুয়েশন করছে, তাদের আসলে ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে এখনই পড়াশোনা করতে হবে। ইনফ্যাক্ট কেউ যদি এই আর্টিকেলটা পড়ে সেই সময়ই যদি ফিল করে যে আমি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ব, তাহলে তাকে প্রতিদিন আলাদা করে সময় বের করতে হবে যেন সেই পড়াশোনাটা এক্সট্রা নিজে থেকে করে। কারণ আমাদের দেশে একটা ক্যারিয়ার সম্পর্কে বা একটা পেশা সম্পর্কে আমরা তখনই স্বপ্ন দেখতে শুরু করি, যখন ওইটা সম্পর্কে একটা প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা করানো হয়। যেমন ধরেন, আমি ব্র্যান্ড ম্যানেজার কেন হতে চাই? কারণ আমার বিবিএ-এমবিএতে ব্র্যান্ড ম্যানেজারের কাজ সম্পর্কে পড়ানো হয়েছে। 

একইভাবে কেউ সাপ্লাই চেইন ম্যানেজার হতে চায়, কেউ অপারেশনাল ম্যানেজার হতে চায়। কিন্তু এই পেশাটা সম্পর্কে আসলে একাডেমিক কোনো পড়াশোনা নেই। যেহেতু পড়াশোনা নেই সেহেতু কেউ চাইলেই চিন্তা করতে পারে না যে সে এই পেশায় কীভাবে আসবে। কারণ পেশাটা মূলত পাস করার পরই চিন্তা করা হয়। 

এই সেক্টরে কাজ করার জন্য প্রথমেই যে প্রস্তুতি নিতে হবে, তার মধ্যে রয়েছে প্রচুর খবর পড়তে হবে। ডিজিটাল মিডিয়ায় কী পরিবর্তন আসছে সেটা খেয়াল রাখতে হবে।

এরপর লিংকডইন অনেক বড় একটা সোর্স। লিংকডইনে মার্কেটিংয়েকটা সল্যুশন আছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ওয়েবসাইট আছে, যেমন মার্কেটিং টিচার, ইন্টারব্র্যান্ড। এগুলো সম্পর্কে যখন পড়বে, বড় পত্রিকাগুলো পড়বে, তখন দেখবে যে এখানে কিছু কেস স্টাডি পাওয়া যায়। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কেস স্টাডি পড়বে, দেখবে যে তারা ডিজিটাল নিয়ে কীভাবে কাজ করেছে। এখান থেকেই সে নিজের পড়াশোনার সঙ্গে একটা সম্পর্ক তৈরি করতে পারবে। এভাবেই ডিজিটাল বিষয়ে জ্ঞান বাড়বে। এটাই আমার পরামর্শ। 

এনটিভি অনলাইন : শুনেছি, আপনি মার্কেটিংয়ের ওপর পড়িয়ে থাকেন। কেন পড়াতে আগ্রহী হলেন?   

মো. আজিম হোসাইন : আমি আইবিএতে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) একটা শর্ট কোর্স করি। কোর্স করার পরে আমি দেখেছি যে, এখানে যারা পড়ছে তারা যদি সেরা জ্ঞানটা পায় তাহলে সে হয়তো বাংলাদেশকে একটা দক্ষ মানবসম্পদ দিতে পারবে। সেক্ষেত্রে আইবিএতে আমি এই বিষয়ে একটা কোর্স চালুর পরামর্শ দেই। কিন্তু তখন কোর্স চালু করা সম্ভব না থাকায় তারা আমাকে প্রত্যেক সেমিস্টারে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ওপর একটা ক্লাস অথবা দুইটা ক্লাস নিতে বলেন। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদেও আমি দু-একটা ক্লাস নিয়েছি। এখনো সুযোগ থাকলে আমি ক্লাস নিই। 

মানুষের সবচেয়ে বড় অক্ষমতা হলো, যতটুকু বুদ্ধি আছে মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা শেষ হয়ে যাবে। মানে পৃথিবীতে এখনো কিন্তু মানুষ তার জ্ঞানগুলোকে সংরক্ষণ করার কোনো সিস্টেম তৈরি করতে পারেনি। এই কারণে একমাত্র উপায় হচ্ছে, আপনি যদি আপনার জানা বিষয়টা অন্যের সঙ্গে শেয়ার করেন, তাহলেই কেবল আপনার আইডিয়াটা বেঁচে থাকবে। এই কারণেই আসলে আমি ক্লাস নিতে আগ্রহী হই।

আমি কখনো মনে করি না আমি সব জানি, কিন্তু যেটুকু জানি সেটুকু শেয়ার করার চেষ্টা করি। আরেকটা লাভ হচ্ছে আমি যত নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে মিশব তত আমার জানাটাও বাড়বে। আমি দেখছি নতুন প্রজন্ম অনেক বেশি ট্যালেন্টেড, যদি তাদের কাছ থেকে কিছু শিখতে পারি, এটাও ক্লাস নেওয়ার একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ

এনটিভি অনলাইন : ডিজিটাল মার্কেটিংয়েও অনেক পরিবর্তন আসছে। কীভাবে সেসব সম্পর্কে আপডেট থাকেন এবং বাস্তবায়ন করেন?

মো. আজিম হোসাইন : আসলে আপডেট থাকা একটা স্বভাব। একটা চলমান প্রক্রিয়া এবং এটা একটা অভ্যাস। আপনি কী কী বিষয়ে আপডেট থাকবেন এটা নির্ভর করবে আসলে আপনি কী জানতে চান? আপনি সেই জিনিসটা সম্পর্কে খোঁজ খবর করেন। গুগল হচ্ছে সবচেয়ে বড় জায়গা, যেখান থেকে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার পরবর্তী পদক্ষেপটা কী হওয়া উচিত। তাই যা জানতে চান তা গুগল থেকে জেনে নিন। অসংখ্য ওয়েবসাইট তৈরি আছে আপনাকে নানা তথ্য জানাতে। 

এনটিভি অনলাইন : আগামী ৫-১০ বছর পর ডিজিটাল মার্কেটিং কেমন হবে? অর্থাৎ এই সেক্টরের ভবিষ্যৎ কী?

মো. আজিম হোসাইন : আসলে বাংলাদেশে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের যোগাযোগ দক্ষতা বা কমিউনিকেশনের এক্সিলেন্সি নিয়েই আমরা শুধু কথা বলি। এই মিডিয়াটায় কাজ করার আরো অনেক কিছু আছে। যেমন বিজনেস অটোমেশন, কাস্টমার সার্ভিস অটোমেশন, প্রোডাক্ট ডিস্ট্রিবিউশনে অটোমেশন। এই জিনিসগুলা নিয়ে আমরা কাজ করি না। যেটা আসলে একটা বিজনেসের ব্যাকবোন। তাই পরবর্তী পাঁচ থেকে ১০ বছরে ডিজিটালে কমিউনিকেশনের চেয়েও ডিজিটালের যে ব্যাকবোন এন্ডের কাজ বিজনেস অটোমেশন, ডেটা মাইনিং এগুলো অনেক বেশি বাড়বে। 

এনটিভি অনলাইন : এখন যেমন ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব এরা এক ধরনের সাম্রাজ্য বিস্তার করে আছে। আপনি কি নতুন কোনো সাম্রাজ্যের আভাস পাচ্ছেন? না কি এগুলোই আরো আপডেট হবে?

মো. আজিম হোসাইন : আমি মনে করি এরা আরো আপগ্রেড হবে। কিন্তু অনেক নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে ছোট ছোট অনেক ক্ষেত্র বের হবে। যেখানে ওই নির্দিষ্ট বিষয়ের জন্য আপনি ওই জায়গাটায় যাবেন। 

গুগল হয়তো অনেক বড় হয়ে আরো আপগ্রেডেড হয়ে আসবে, ফেসবুকও আপডেটেড হয়ে আসবে। কিন্তু দেখা যাবে যে আপনি রেসিপি সংক্রান্ত একটা সমাধান পেতে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় যাচ্ছেন। সবকিছু অনেক বেশি সেগমেন্টেড হয়ে যাবে, অনেক বেশি ফ্র্যাগমেন্টেড হয়ে যাবে। একইসঙ্গে অনেক স্পেশালাইজড সার্ভিস হবে। যে এই সার্ভিসটা এই গ্রুপটার কাছে, এই এই অবজেকটিভটা এখান থেকে আমি পূরণ করতে পারব। আমার যদি বাজেট কম থাকে, আমি এখানে যাব। আমার যদি এরপরে অ্যাওয়ারনেস দরকার হয় আমি এখানে যাব। 

যেমন ধরেন, পোষা প্রাণি সংক্রান্ত সার্ভিস। এটা বাংলাদেশে খুব সমস্যা হয়। যাদের পোষা প্রাণি থাকে তাঁরা জানেন যে এদের একটা ভ্যাকসিন দিতে হলে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যেতে হয়, আসতে হয় একটা ঝামেলা থাকে। কিন্তু কেউ যদি একটা সার্ভিস বের করে যে তার কাছে পশুচিকিৎসক আছে, আপনি যদি রেজিস্ট্রেশন করেন তাহলে বাসায় এসে ভ্যাকসিন দিয়ে যাবে।

আবার আপনি চিন্তা করেন গাড়ি। আপনার গাড়ির ইঞ্জিনের সমস্যা আপনাকে নিয়ে যেতে হবে। তার চেয়ে আপনি রেজিস্ট্রেশন করবেন আপনার এখানে এসে সার্ভিসটা ওরা দিয়ে যাবে। আমি এটা বলতে চেয়েছি যে, এ রকম অনেক স্পেসিফিক স্পেশালাইজড সার্ভিস বের হবে। যার মাধ্যমে জীবনযাপন আরো সহজ হবে। 

এনটিভি অনলাইন : প্রাণ-আরএফএল গ্রুপে কাজের ক্ষেত্রে কোনো আনন্দের ঘটনা কি শেয়ার করবেন?

মো. আজিম হোসাইন : আমার অভিজ্ঞতা বলে প্রাণ আরএফএলে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের অনেক স্বাধীনতা  দেওয়া হয়। এঁরা অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারেন। নতুন জিনিস, নতুন চিন্তা, নতুন উদ্ভাবনকে স্বাগত জানান। 

আপনি প্রাণের ডিজিটাল মিডিয়াতেও যদি দেখেন, লোকাল করপোরেট বা প্রাণের চেয়েও পুরাতন কোম্পানি আছে। কিন্তু তাদের তুলনায় প্রাণের উন্নতিটা বিশ্লেষণ করলেই বিষয়টা বুঝতে পারবেন। 

প্রাণের একজন কর্মীকে ওই পরিমাণে স্বাধীনতা দেওয়া হয় যেন তাঁরা নতুন নতুন চিন্তা উদ্ভাবন করতে পারেন। এরপর এই চিন্তাগুলো সংরক্ষণ করা হয়। এগুলোকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য যা যা করা দরকার তাই করা হয়। 

এনটিভি অনলাইন : ব্যস্ততার মাঝে মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এনটিভি অনলাইনের জন্য কোনো পরামর্শ আছে?

মো. আজিম হোসাইন : আপনাদেরকেও অনেক ধন্যবাদ। এনটিভি অনলাইনের জন্মলগ্ন থেকেই আমি চিনি। এই পরিকল্পনাটাকে যাঁরা বাস্তবায়ন করেছেন তাঁদের দলটাকে চিনি। তাঁদের মধ্যে এই প্যাশনটা ছিল যে আমরা আসলে শক্তিশালী একটা প্ল্যাটফর্ম করতে চাই- যেখান থেকে আমরা পাবলিশার হিসেবেই শক্তিশালী হবো। একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেছেন তাঁরা। 

পাশাপাশি কাজটা করার প্যাশনও ছিল তাঁদের মধ্যে। তাঁরা কাজটা বোঝেন এবং এ সম্পর্কিত জ্ঞানটাও আছে। যে কারণে তাঁরা পাবলিশার হওয়ার পাশাপাশি ইউটিউবেও ভালো কিছু কনটেন্ট দিয়েছেন। প্রচুর মানুষ এই চ্যানেল দেখছে। এই কনটেন্টগুলো যদি না দিতেন এই মানুষগুলো কই যেত? অন্য খারাপ কনটেন্ট দেখত। 

আমি যদি আজকে একটা ভালো কনটেন্ট দেখি, পরবর্তী এক ঘণ্টা আমার যে রকম মানসিকতা থাকবে, আমি যদি এখন একটা ভায়োলেন্স বা খারাপ কনটেন্ট দেখি, আমার এক ঘণ্টার মানসিকতাটা অন্য রকম যাবে। তাই এই ডিজিটাল যুগে যখন মানুষ সহজেই আউট ফোকাস বা ডি ফোকাসড হয়ে যায়, সেই জায়গাটাতে আপনি এমন একটা সার্ভিস দিচ্ছেন যার মাধ্যমে মানুষকে একটা সুস্থ পরিবেশ উপহার দিচ্ছেন। এটা অবশ্যই একটা সাধুবাদ জানানোর মতো উদ্যোগ। 

তবে আমার মনে হয় সময় এসেছে যখন এনটিভির উচিত নেটফ্লিক্সের মতো নিজের একটা ভিডিও সার্ভিং প্ল্যাটফর্ম দাঁড় করানো। যেটা দর্শক সাবস্ক্রাইব করবে, অর্থের বিনিময়ে স্পেশাল কনটেন্ট দেখবে। চাইলে ওটার জন্য বিশেষ কনটেন্ট তৈরি করা যেতে পারে। যেগুলো টেলিভিশনে দেখানো হবে না, শুধু যাঁরা সাবস্ক্রাইব করবেন তাঁরা দেখতে পাবেন।