রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রতিবাদে ভৈরবে কওমি মাদ্রাসার বিক্ষোভ

Looks like you've blocked notifications!
মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরোচিত হত্যা ও নির্যাতন বন্ধের দাবিতে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিক্ষোভ মিছিলের একটি দৃশ্য। ছবি : এনটিভি

মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বর্বরোচিত হত্যা ও নির্যাতন বন্ধের দাবিতে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জামিয়া ইসলামী দারুল উলুম মাদ্রাসা চত্বরে সমবেত হন উপজেলার ১৫টি কওমি মাদ্রাসার দুই সহস্রাধিক শিক্ষার্থী-শিক্ষক, আলেম, বুজর্গ, পীর-মাশায়েখ।

বিক্ষোভ মিছিল ভৈরব বাজারের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে পৌরসভার সামনে শহীদ মিনারের পাদদেশে প্রতিবাদ সভা হয়। এ সময় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম নর-নারী ও শিশুদের রক্ষায় বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড বহন করেন বিক্ষোভকারীরা।

কমলপুর জামিয়া ইসলামী দারুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস মুফতি মাহমুদুল হাসান কাসেমীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন ভৈরব পৌরসভার মেয়র মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফখরুল আলম আক্কাছ, মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, মুহাদ্দিস মাওলানা হাফিজুল্লাহ, হালিমা সাদিয়া মহিলা মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মাহবুবুর রহমান, উপজেলা পরিষদ মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা শহিদুল্লাহ আবরার, ছাত্রনেতা আনাস মাহমুদসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বক্তারা এ সময় বলেন, বৌদ্ধদের ধর্মীয় স্লোগান হলো ‘জীব হত্যা মহাপাপ’।  কিন্তু তারা রোহিঙ্গাদের হত্যা করে প্রমাণ করছে তাদের সেই স্লোগান মিথ্যে। আদতে তারা জঙ্গি ও সন্ত্রাসী।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে রোহিঙ্গা নির্যাতিতদের মানবিক ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার, গণহত্যা বন্ধ  এবং তাদের সম্মানের সঙ্গে স্বদেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করার দাবি জানান।

বক্তারা আরো বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর অং সান সু চির সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের অমানবিক নির্যাতন, খুন, ধর্ষণ, বাড়িঘর পোড়ানো বন্ধ করতে হবে। কথিত শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সু চি পৃথিবীর সবচেয়ে ঘৃণিত হত্যাকারী। তিনি সর্বকালের সকল হত্যাকাণ্ডের চেয়েও বীভৎসভাবে মানুষ খুন করছেন। মানুষরূপী এই রাক্ষসী সু চির বীভৎস হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের জন্য বিশ্ব নেতাদের কাছে আহ্বান জানান তাঁরা। এ ছাড়া রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের জোর দাবি জানান বক্তারা।

আলেমরা এ সময় আহ্বান জানান, মুসলিম গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘ মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ, অবরোধ আরোপ করুক। ওআইসিসহ মুসলিম দেশগুলো যেন অবিলম্বে মিয়ানমারের ওপর বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ ও বার্মিজ পণ্য বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাঁরা রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান হিসেবে স্বাধীন আরাকান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন।