বৃদ্ধাশ্রমেই মারা গেলেন সেই মা

Looks like you've blocked notifications!
আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমে গত ২৪ জুন এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন মেহেরুন্নেসা। আজ সকালে তিনি মারা গেছেন। পুরোনো ছবি : এনটিভি

‘ছেলে তো আমারে ফেলে দেয়নি বাবা, আইস্যা কান্নাকাটি করে। ছেলে সেলাইয়ের কাম করে। তেমন কামাই রোজগার নাই, তার বউয়ের অসুখ, কিডনি নষ্ট। তাই আমারে এই জায়গায় রাইখা দিছে।’

গত ২৪ জুন এনটিভি অনলাইনের এই প্রতিবেদকের কাছে এমনভাবেই নিজের ছেলের পক্ষে কথা বলেছিলেন আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমে থাকা প্রায় ১০০ বছর বয়সী নারী মেহেরুন্নেসা।

আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমে প্রায় তিন বছর থাকার পর আজ রোববার সকালে মারা গেছেন এই মা।

বৃদ্ধাশ্রমটির  প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সেলিনা শেলী এনটিভি অনলাইনকে জানান, প্রায় তিন বছর ধরে আপন নিবাসে ছিলেন মেহেরুন্নেসা। সংসারে অভাবের কারণে তাঁর একমাত্র ছেলে তাঁকে এখানে রেখে গিয়েছিলেন। অনেক বয়স হওয়ায় আজ সকালে তিনি মারা গেছেন। মা মারা যাওয়ার খবর শুনে তাঁর ছেলে লাশ নিতে এসেছিলেন। পরে লাশের গোসল ও জানাজা শেষে অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশটি তাঁর ছেলের বাসায় পাঠানো হয়েছে। আজ বিকেলে মোহাম্মদপুর কবরস্থানে মেহেরুন্নেসাকে দাফন করা হয় বলে আপন নিবাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

এর আগে জুন মাসে মেহেরুন্নেসা জানিয়েছিলেন, সংসারে অভাব থাকায় রাজধানীর উত্তরখানের আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধা মাকে রেখে ছিলেন তাঁর ছেলে। তাই ছেলের প্রতি তেমন ক্ষোভ ছিল না তাঁর।

মেহেরুন্নেসা সম্পর্কে আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমের দায়িত্বে থাকা উম্মে কুলসুম এনটিভি অনলাইনকে জানান, প্রায় ১০০ বছর বয়স হয়েছিল তাঁর। স্বাভাবিক বোধশক্তি অনেক কমে গিয়েছিল। ছেলের বাসায় থাকলে ঘরের ভেতরে প্রস্রাব-পায়খানা করতেন। এদিকে তাঁর একমাত্র ছেলে একটি টেইলার্সে দর্জির কাজ করে সংসার চালান। তাঁর দুটি সন্তান আছে। সেই সঙ্গে স্ত্রীর কিডনি নষ্ট, সব সময় অসুস্থ থাকেন। মাকে দেখার জন্য কেউ নেই। তাই মেহেরুন্নেসাকে তাঁর ছেলে নিজে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে যান।

মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে গেলেও প্রায়ই এসে মায়ের খবর নিতেন বলে জানালেন আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমের পরিচালক সেলিনা শেলী।