ধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ করে হুমকি, স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা!
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় স্কুলছাত্রী রহিমা আক্তার সোনিয়াকে ধর্ষণ, এর ভিডিওচিত্র ধারণ এবং তা প্রকাশের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছিল বলে জানা গেছে। ছাত্রীটির বাবা-মা অভিযোগ করেন, এর জের ধরেই গত মঙ্গলবার আত্মহত্যা করে তাঁদের নবম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে।
গতকাল বুধবার ওই ছাত্রীর পরিবার অভিযোগ করে, তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওয়ার্ডবয় মনসুর আলম রাজন এবং মোবাইল অপারেটর বাংলালিংকের কাস্টমার কেয়ারের কর্মকর্তা (তেঁতুলিয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত) আতিকুর রহমান আতিক তিন মাস আগে সোনিয়াকে ধর্ষণ এবং এর ভিডিও ধারণ করেন। ঘটনার পর থেকে রাজন ও আতিক পলাতক।
স্বজনরা বলেন, সোনিয়ার মা অসুস্থ হয়ে বাড়িতে পড়ে আছেন। তিন মাস আগে তার মায়ের জন্য ওষুধ দেওয়ার কথা বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ডবয় রাজন তাকে বাংলালিংকের কর্মকর্তা আতিকের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে প্রথমে রাজন ও পরে আতিক তাকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করেন। এরপর বিষয়টি কাউকে জানালে ভিডিও অনলাইনে ছেড়ে দেওয়াসহ হত্যার হুমকি দিয়ে তিন মাস ধরে ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে আসছিলেন তাঁরা। গত ৯ অক্টোবর ওই ছাত্রী বিষয়টি তার মা ও মামাকে জানায়। এ ঘটনার পর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই ছাত্রীকে বিষয়টি ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন রাজন ও আতিক। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করে।
পরিবারের অভিযোগ, ওই ছাত্রী আত্মহত্যার পর থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা রেকর্ড করেনি।
পলাতক আতিকুর রহমান আতিক (বাঁয়ে) ও মনসুর আলম রাজন (ডানে)। ছবি : এনটিভি
ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, বুধবার রাতে ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে রাজন ও আতিকের নামে তেঁতুলিয়া থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করেনি। আসামিও ধরেনি।
ছাত্রীর মায়ের দাবি, রাজন ও আতিক তাঁর মেয়েকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য করেছেন। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চান।
রাজন এক সংসদ সদস্যের নাতজামাই হওয়ায় পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রীর মামা।
তেঁতুলিয়া কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক নাজিমউদ্দিন ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য সাইফুল ইসলাম এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেঁতুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র বলেন, ওই ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কারো বিরুদ্ধে যদি কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসে তবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।