স্কুলছাত্রী সোনিয়ার আত্মহত্যার জন্য দায়ীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার স্কুলছাত্রী রহিমা আক্তার সোনিয়ার আত্মহত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে তেঁতুলিয়া চৌরাস্তায় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করা হয়।
তেঁতুলিয়া কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ এ কর্মসূচির আয়োজন করে। কর্মসূচিতে সোনিয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও তেঁতুলিয়া পাইলট স্কুল ও তেঁতুলিয়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, নারী উন্নয়ন ফোরাম ও প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা অংশ নেন।
মানববন্ধনের শুরুতে সোনিয়ার স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ সময় সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শাহিনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে মোবাইল ফোনে সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) নাজমুল হক প্রধান ও সাবেক সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য ফরিদা আখতার হীরা।
এ ছাড়া অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কাজী মাহাবুবুর রহমান, কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ ইমদাদুল হক, নারী উন্নয়ন ফোরামের নেত্রী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সুলতানা রাজিয়া, ব্যবসায়ী মকলেছার রহমান, সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম শহীদ, ক্রীড়া সংগঠক শাহাদত হোসেন রঞ্জু, শিক্ষক আতাউর রহমান, খন্দকার সামসুজ্জোহা নিয়াজী, শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার ও সাদমান সাকিব।
ঘটনার পাঁচদিন পর মামলা নেওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে এনে তেঁতুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) অপসারণ দাবি করেন বক্তারা। এ ছাড়া অবিলম্বে আসামিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তাঁরা। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
স্কুলছাত্রী সোনিয়ার স্বজনদের ভাষ্য, সোনিয়ার মা অসুস্থ হয়ে বাড়িতে পড়ে আছেন। তিন মাস আগে তার মায়ের জন্য ওষুধ দেওয়ার কথা বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ড বয় রাজন সোনিয়াকে বাংলালিংকের কর্মকর্তা আতিকের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে প্রথমে রাজন ও পরে আতিক তাকে ধর্ষণ এবং ভিডিও ধারণ করেন। এরপর বিষয়টি কাউকে জানালে ভিডিও অনলাইনে ছেড়ে দেওয়াসহ হত্যার হুমকি দিয়ে তিন মাস ধরে ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে আসছিলেন তাঁরা। গত ৯ অক্টোবর ওই ছাত্রী বিষয়টি তার মা ও মামাকে জানায়। এ ঘটনার পর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই ছাত্রীকে বিষয়টি ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন রাজন ও আতিক। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করে।