পদ্মার ভাঙন

জাজিরায় ৭ দিনে হাজার পরিবার গৃহহীন

Looks like you've blocked notifications!
ছবি : এনটিভি

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পদ্মার ভাঙনে সাত দিনে ২০টি গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবার গৃহহীন হয়েছে। নদীতে বিলীন হয়েছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, বিদ্যালয়। ভাঙন আতঙ্কে নিরাপদ স্থানে সরে যাচ্ছে মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) শরীয়তপুর কার্যালয়, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত কয়েক দিনে পদ্মা নদীতে স্রোত বেড়েছে। গত শুক্রবার থেকে নদীভাঙন শুরু হয়। এতে জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের আটটি, পালেচর ইউনিয়নের তিনটি, বিলাসপুরের চারটি ও কুণ্ডেরচরের পাঁচটি গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবার গৃহহীন হয়েছে। বড়কান্দি ইউনিয়নে অবস্থিত নজিম উদ্দিন বেপারীকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড়কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বড়কান্দি বি কে মডেল একাডেমির ভবন নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কারণে দুর্গার হাট বাজারের ১০২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ভাঙন হুমকিতে পড়েছে বড়কান্দি ইউনিয়ন পরিষদ ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন। ঘরবাড়ি হারিয়ে রাস্তার পাশে আশ্রয় নিয়েছে অনেকেই। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে নারী ও শিশুরা।

জাজিরার বড়কান্দি ইউনিয়নের রঞ্জন ছৈয়ালকান্দি গ্রামের বিধবা কল্পনা বেগম (৪৫) বলেন, ‘এনজিও থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ভাড়া করা জমিতে ধান আবাদ করেছিলাম। বসতবাড়ির পাশাপাশি বোরো ধানসহ দুই বিঘা জমির ফসলসহ পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। এখন কীভাবে ঋণের টাকা পরিশোধ করব, সেই চিন্তা করছি।’ তাঁর মতো এমন অবস্থা এ এলাকার কয়েকশ কৃষকের।

মিরআলী মাদবরের কান্দি গ্রামের বাকপ্রতিবন্ধী মনির হোসেনের স্ত্রী রানী বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী একজন প্রতিবন্ধী। কৃষিকাজ করেই আমাদের জীবন চলত। ফসলি জমির সঙ্গে আমাদের বসতভিটাও নদীভাঙনে চলে গেছে। এখন আমরা কী করব, দিক খুঁজে পাচ্ছি না।’

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল কাদের বলেন, ভাঙনকবলিত এলাকার বড়কান্দি ইউনিয়নে দেড় শতাধিক পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। বাকিদের জন্য জেলা প্রশাসকের সহায়তা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নারী ও শিশুদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শরীয়তপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল খালেক বলেন, ‘ভাঙনরোধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এ মুহূর্তে আমাদের কোনো অর্থ বরাদ্দ নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। অর্থ বরাদ্দ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’