বিশ্বজিৎ হত্যায় খালাসপ্রাপ্তদের বিষয়ে লিভ টু আপিলের নির্দেশ

Looks like you've blocked notifications!

পুরান ঢাকার দর্জি ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া চার আসামির বিষয়ে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের জন্য আবেদন) করার জন্য রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

আজ সোমবার সকালে এ মামলার চার আসামির খালাসের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। পরে সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের চেম্বার আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হয়।

শুনানি শেষে রাষ্ট্রের প্রধান কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম গণমাধ্যমকে জানান, আদালতে খালাসপ্রাপ্তদের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আদালত সেটি স্থগিত করেননি। আদালত এ বিষয়ে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেছেন।

চার আসামি হলেন—সাইফুল ইসলাম, কাইয়ুম মিঞা, গোলাম মোস্তফা ও এ এইচ এম কিবরিয়া। এর মধ্যে সাইফুল ও কাইয়ুম বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। হাইকোর্ট তাঁদের খালাস দেন। আর মোস্তফা ও কিবরিয়ার বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন দণ্ড হলেও হাইকোর্ট তাঁদের খালাস দেন।

এই চারজনের খালাসের দণ্ড স্থগিত করতে আজ আবেদন করা হয়।

গত ৩১ অক্টোবর দুজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর স্বাক্ষরের পর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৮০ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।

গত ৬ আগস্ট বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আট আসামির মধ্যে দুজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। অন্য ছয়জনের মধ্যে চারজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে যাবজ্জীবন এবং অপর দুজনকে খালাস দেওয়া হয়।

এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ১৩ আসামির মধ্যে যে দুজন আপিল করেছিলেন, তাঁরা খালাস পেয়েছেন। অপর ১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রয়েছে। ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় আটজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ বি এম নিজামুল হক এ রায় ঘোষণা করেন।

এ রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন রফিকুল ইসলাম শাকিল, কাইয়ুম মিঞা টিপু, এমদাদুল হক এমদাদ, জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, সাইফুল ইসলাম, রাজন তালুকদার ও মীর মো. নূরে আলম লিমন।

এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন এ এইচ এম কিবরিয়া, ইউনুস আলী, তারিক বিন জোহর তমাল, গোলাম মোস্তফা, আলাউদ্দিন, ওবায়দুর কাদের তাহসিন, ইমরান হোসেন, আজিজুর রহমান, আল-আমিন, রফিকুল ইসলাম, মনিরুল হক পাভেল, মোশাররফ হোসেন ও কামরুল হাসান। এ ছাড়া তাঁদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়।

পরে রায় কার্যকরে মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। একই সঙ্গে নিম্ন আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা।

বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ মার্চ ছাত্রলীগের ২১ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এই ২১ আসামির মধ্যে আটজন কারাগারে এবং বাকিরা পলাতক রয়েছেন।

২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর ১৮ দলের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রলীগ ক্যাডাররা নির্মমভাবে খুন করেন দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ দাসকে। শাঁখারীবাজারে বিশ্বজিতের টেইলার্স ছিল। তিনি থাকতেন লক্ষ্মীবাজারে। তাঁর গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর।