রক্ত দেওয়াই তাদের কাজ
পার্বত্য জনপদ রাঙামাটির স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘জীবন’। উন্নয়ন আর সমৃদ্ধির গালগপ্পের ভিড়ে এখানে আলোকিত কাজ কিংবা স্বপ্নের চাষাবাদ বরাবরই কম। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীদের সাহায্য, বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ-দুর্ঘটনা সামাল দিতে ভূমিকা রাখার তাগিদ থেকেই ছয় বছর আগে যাত্রা শুরু করে ‘জীবন’।
সাজিদ বিন জাহিদ মিকি, শহীদুল আলম রাসেল, নিশু সাহাসহ তাঁদের শিক্ষক আনোয়ারুল কবির পাটোয়ারীর নেতৃত্বে একঝাঁক তরুণের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি। ধীরে ধীরে শহরের মানুষের প্রয়োজন কিংবা বিপদের প্রধান নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠেছে সংগঠনটি। গভীর রাত কিংবা ঝড়ের দিনে কিংবা ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগেও রক্তের প্রয়োজনে মানুষ ‘জীবনে’র মিকি বা রাসেলের নম্বরে ফোন করেই সমাধান পেয়েছে।
গত ছয় বছরে কয়েক হাজার মানুষের পাশে রক্তের সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়িয়েছে ‘জীবন’। শুধু তাই নয়, ধীরলয়ে শহরের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজেদের শক্ত ও দৃঢ় সাংগঠনিক ভীতও তৈরি করেছে সংগঠনটি।
এখন রাঙামাটির অসংখ্য তরুণ-তরুণী সম্পৃক্ত হয়েছেন ‘জীবন’-এর সঙ্গে। রাঙামাটি সরকারি কলেজ, মহিলা কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই আছে ‘জীবনে’র ইউনিট। শুধু তাই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে রাঙামাটির সীমানা ছাড়িয়ে প্রতিবেশী জেলা ও দেশের বিভিন্ন স্থানেও চলছে এর কার্যক্রম। অনলাইনের ডাকে রক্ত সংগ্রহ করে দেওয়ার প্রয়াসেই যাত্রা শুরু করা ‘জীবন’; এখন অনলাইন, অফলাইন সবক্ষেত্রেই সফল।
হাঁটি হাঁটি পা পা করে ছয় পেরিয়ে ১১ নভেম্বর সাত বছরে পদার্পণ করছে সংগঠনটি। এ উপলক্ষে রাঙামাটি শহরে সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, শিশুদের জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ছয় বছর ধরে রাঙামাটিবাসীর প্রয়োজন আর ভালোবাসার অন্য নাম হয়ে উঠেছে ‘জীবন’।
সংগঠনটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সাজিদ বিন জাহিদ মিকি বলেন, “অনেক স্বপ্ন নিয়ে একদিন আমরা কজন মিলে যে ‘জীবন’ শুরু করেছিলাম, আজ সেটাই ধীরে ধীরে রাঙামাটিবাসীর ভালোবাসার জীবনে পরিণত হয়েছে। এটাই গত ছয় বছরের অর্জন। মানুষের পাশে থাকার প্রত্যয়ে পথচলা শুরু হয়েছিল। মানুষের পাশেই থাকতে চাই আমৃত্যু।”